সেবক রংপো রেললাইনের টানেলে ধস, মৃত ২, আহত ৭, উদ্বিগ্ন পরিবেশপ্রেমীরা

খুচখাচ ধস তো চলছেই। এবার নির্মীয়মান রেল টানেলের মধ্যে মাটি-পাথর ধসে পড়ল শিলিগুড়ির অদূরে সেবক পাহাড়ের ভালুখোলা এলাকায়। মাটি-পাথর চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল ২ জন শ্রমিকের। গুরুতর জখম হয়েছেন আরও ৭ জন শ্রমিক। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। সেই সময়ে শ্রমিকরা নির্মীয়মান টানেলের মধ্যে একটি ক্যাম্পে ছিলেন। কাছেই থাকা অন্য ক্যাম্পের শ্রমিকরা গিয়ে তড়িঘড়ি উদ্ধারের কাজে হাত লাগান। আহতদের ৩ জনকে কালিম্পং জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ২ জনকে শিলিগুড়িতে বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

রেল সূত্রের খবর, লাগাতার বৃষ্টির কারণে টানেলের উপরিভাগে কোনও বড় মাপের ধস নামায় এমন ঘটনা হয়ে থাকতে পারে। অবশ্য নির্মাণের সম.য়ে কোনও ত্রুটি হয়েছে কি না সে দিকটাও খতিয়ে দেখা হবে বলে রেল জানিয়েছে। প্রায় চার দিন ধরে বৃষ্টির জেরে দার্জিলিং পাহাড়ের বেশ কয়েকটি এলাকায় ধসের খবর মিলেছে। কোথাও বাড়ি ধসে গিয়েছে। কোথাও রাস্তার একাংশ ধসে গিয়েছে। শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পঙের রাস্তায় একাধিক জায়গায় রাস্তায় ছোট ও মাঝারি ধস নেমেছে। প্রশাসনিক উদ্যোগে ধস সরানোর কাজ অবশ্য লাগাতার চলছে। ফলে, শিলিগুড়ি-কালিম্পং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি।

২০০৯ সালে সেবক থেকে সিকিমের রংপো পর্যন্ত রেলপথের সূচনা করান তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই রেলপথের প্রাথমিক বাজেট বরাদ্দ ছিল ১০০০ কোটি টাকা। যা কি না এখন ৪০০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। চলতি বছরেই রেলপথ চালু হওয়ার কথা। ওই রেলপথে পাহাড় কেটে ১৪টি টানেল, ১৪টি সেতু তৈরি হয়েছে। আটটি ছোট টানেল হয়েছে। সেবক থেকে রংপোর মধ্যে ৫টি স্টেশন হয়েছে। এর ফলে, দেশের রেল মানচিত্রে সিকিমেও জায়গা করতে চলেছে।

আরও পড়ুন-করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেশি আক্রান্ত গর্ভবতী ও সদ্য মায়েরা, রিপোর্ট আইসিএমআরের

যেহেতু সিকিমের চিনের সীমান্ত রয়েছে। সেখানে সেনাবাহিনীর যাতায়াত নিরন্তর। বর্ষায় ধস নেমে শিলিগুড়ির সেবক ও রংপোর কয়েকটি এলাকায় যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। লাগাতার ৩-৪ দিন যোগাযোগ বন্ধ থাকার ঘটনাও ঘটে ফি বছর। সে কথা মাথায় রেখে সেবক থেকে রংপো রেললাইন তৈরি হয়েছে। এতে রংপোয় নেমে সেখান থেকে গাড়ি ধরে দ্রুত গ্যাংটক যেতে পারবেন যাত্রীরা। সব মিলিয়ে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরত্ব ট্রেনে যেতে পারবেন যাত্রীরা।

কিন্তু, ওই ঘটনায় উদ্বিগ্ন পরিবেশপ্রেমীদের অনেকেই। কারণ, তাঁরা রেলপথ তৈরির গোড়া থেকেই পরিবেশপ্রেমীদের একাংশ বিপদের আশঙ্কা করেছেন। পাহাড় কেটে টানেল, নতুন সেতু তৈরি হলে ধসের আশঙ্কা বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কাও প্রকাশ করেছিলেন অনেকে। তবে পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র মেনেই কাজ হচ্ছে বলে রেল দাবি করেছিল। এই দুর্ঘটনার পরে রেল অবশ্য এখনও কোনও সরকারি বিবৃতি দেয়নি।

Previous articleবিশ্ব টেস্ট চ‍্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে নামতে চলেছে ভারতীয় দল, তার আগে বিরাটদের কী উপদেশ দিলেন মহারাজ?
Next articleবিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চে কেন নন্দীগ্রাম মামলা? হাইকোর্টে বিক্ষোভ আইনজীবীদের