তৃণমূলের ৫-এর পাল্টা বিজেপির ৫০, পুনর্গণনার দাবিতে আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি বিজেপির

 

নন্দীগ্রাম সহ পাঁচটি আসনে পুনর্গণনা অথবা ভোট খারিজের দাবিতে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার যে সব আসনে কম ভোটের ব্যবধানে তারা পরাজিত হয়েছে সেই সব ক্ষেত্রে পুনর্গণনার জন্য বিজেপি আদালতের দ্বারস্থ হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শনিবার বহরমপুরে তিনি বলেন, “কোথায় কীভাবে পিটিশন জমা দেওয়া হবে তা নিয়ে আইনজীবীরা আলোচনা করছেন।” ৫০ থেকে ৫৫টি আসনে পুনর্গণনার দাবি জানাতে পারে বিজেপি। গতকাল হেস্টিংসে হওয়া সাংগঠনিক বৈঠকেও এনিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এদিন দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, আদালতে ইলেকশন পিটিশন করবে বিজেপিও। বিজেপির একটি বিশেষ দল এই বিষয়টি দেখছে। প্রস্তুতি প্রায় সম্পূর্ণ বলেই জানিয়েছেন দিলীপ ঘোষ।
শুক্রবার রাজ্য বিজেপির সহসভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ৫০ টি আসনে বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এইসব আসনে বিজেপি প্রার্থীরা খুব কম ব্যবধানে হেরেছেন। ব্যবধান ১,২ ৩ হাজারের মধ্যে। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, বেলা ১২ টার পরে অনেক জায়গাতেই তৃণমূলের ভয়ে বিজেপির এজেন্টরা গণনা কেন্দ্র ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। যার প্রভাব গণনায় পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, দলের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা হয়েছে, তাঁরাই এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

নন্দীগ্রাম আসনের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের ফল প্রকাশের দিন দেখা যায়, তুল্যমূল্য লড়াই হচ্ছে মমতা ও শুভেন্দুর মধ্যে। কখনও মমতা এগিয়ে যান তো কখনও শুভেন্দু। একের পর এক কেন্দ্রের ফলাফল সামনে আসতে শুরু করলেও রাত পর্যন্ত নন্দীগ্রাম নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছিল না। সেখানে মমতা হেরেছেন না জিতেছেন তা বোঝা যাচ্ছিল না। এক সময় জানা যায় শুভেন্দুকে হারিয়ে নন্দীগ্রামে জিতেছেন মমতা। ভোটের ব্যবধান ১২০০। আরও কিছুটা সময় কাটার পর জানা যায় সেই আসনে মমতা হেরে গিয়েছেন। ১৯০০-র বেশি ভোট পেয়ে জিতেছেন শুভেন্দু। যদিও সেই ফলাফল মেনে নিতে পারেননি মমতা। এরপর হাইকোর্টের দারস্থ হন তিনি।
তারপর বলরামপুর, ময়না, গোঘাট ও বনগাঁ দক্ষিণের পরাজিত তৃণমূল প্রার্থীরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। নির্বাচনে পুরুলিয়ার বলরামপুরে তৃণমূলের টিকিটে প্রার্থী হয়েছিলেন শান্তিরাম মাহাত। যদিও সেখানে বিজেপি প্রার্থী বাণেশ্বর মাহাতর কাছে ৪২৩ ভোটে হেরে যান তিনি। এত কম ব্যবধানে হারার নেপথ্যে কারচুপির অভিযোগ তুলে আদালতের দারস্থ হন তিনি। শান্তিরাম মাহাত বলেন, মামলা গ্রহণ করে নথি নষ্ট না করার জন্য রিটার্নিং অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ১৫ জুলাই ফের এই মামলার শুনানি হতে পারে। এছাড়া, বনগাঁ দক্ষিণে বিজেপি প্রার্থী স্বপন মজুমদারের কাছে ২ হাজার ৪ ভোটে পরাজিত হন তৃণমূল প্রার্থী আলোরানি সরকার। গোঘাটে বিজেপি-র বিশ্বনাথ কারকের কাছে ৪ হাজার ১৪৭ ভোটে পরাজিত হন তৃণমূল প্রার্থী মানস মজুমদার। ময়নায় বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন ক্রিকেটার অশোক ডিন্ডা তৃণমূলের সংগ্রামকুমার দলুইকে ১ হাজার ২৬০ ভোটে পরাজিত করেন।

এদিন দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, মুর্শিদাবাদে কংগ্রেসের জায়গায় সাধারণ মানুষ বিজেপিকে গ্রহণ করেছেন। প্রসঙ্গত মুর্শিদাবাদের ২২ টি আসনের মধ্যে ২০ আসনে নির্বাচন হয়। তার মধ্যে তৃণমূল ১৮ টি এবং বিজেপি ২ টি আসন পায়। এদিন দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, আগামী দিনে মুর্শিদাবাদে পুর নির্বাচনে বিজেপি ভাল ফল করবে।

Previous articleব্রেকফাস্ট নিউজ
Next articleপদ্মা নয়, পুষ্টিতে সেরা মেঘনার ইলিশ