আলিপুরদুয়ারে বিজেপির জেলা সভাপতি সদলবলে তৃণমূলে, আরও ভাঙনের আশঙ্কায় গেরুয়া শিবির

বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই দলের মধ্যে কোণঠাসা ছিলেন। যোগাযোগ রাখছিলেন তৃণমূল (TMC) নেতাদের সঙ্গে। কিন্তু ভোটের মুখে দলের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে গেরুয়া শিবির ছেড়ে যাননি তিনি। বরং, প্রবল মমতা হাওয়ায় যখন ওলট-পালট বিজেপি (BJP), ঠিক সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে জেলার ৫টি আসনই দলকে উপহার দিয়েছেন। তৃণমূল পেয়েছে শূণ্য। আলিপুরদুয়ারের (Alipurduyar) সেই বিজেপি সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা (Ganga prasad Sharma) এবার সদলবলে পদ্ম ছেড়ে যোগ দিলেন ঘাসফুল শিবিরে।

নির্বাচনের পর থেকে কার্যত তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে রাজ্য বিজেপি। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতাদের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে দল বেঁধে ঝাঁকে ঝাঁকে নেতা ও কর্মীরা যোগ দিচ্ছেন শাসকদল তৃণমূলে। তারই অঙ্গ হিসেবে আজ, সোমবার আলিপুরদুয়ারের জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে যোগ দেন জেলা বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক বীরেন্দ্র বারা, সম্পাদক বিনোদ মিঞ্জ ও অসীমকুমার লামা, সহ-সভাপতি বিপ্লব সরকার, কুমাগ্রাম ব্লকের সভাপতি নিশান লামা, কালচিনি বিধানসভার আহ্বায়ক কৃপাশঙ্কর জয়সওয়াল ও সহ-আহ্বায়ক ঈশ্বরকুমার বিশ্বকর্মা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে এলেন।

এদিন তৃণমূল ভবনে সুখেন্দুশেখর রায়, মুকুল রায়, ব্রাত্য বসু ও আলিপুরদুয়ার তৃণমূলের সভাপতি মৃদুল গোস্বামীর উপস্থিতিতে তাঁদের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দিয়ে দলে স্বাগত জানানো হয়। যোগদানের পর তৃণমূলের রাজ্যসভার চিফ হুইপ সুখেন্দু শেখর রায় বলেন, ‘‘বিজেপির উত্তরবঙ্গের ৮ জন নেতা আমাদের দলে যোগদানের জন্য আবেদন করেছিলেন। দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাঁদের দলে সামিল করা হবে। তাই তাঁদের দলে নেওয়া হল।’’

দলত্যাগী বিজেপি নেতা গঙ্গাপ্রসাদ বলেন, ‘‘আমার দল ছাড়ার পৃষ্ঠভূমি ভোটের আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। যখন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জেলা নেতৃত্বের মতামতকে উপেক্ষা করে কলকাতায় এনে যোগদানপর্ব করিয়েছে্ন। দিল্লিতে নিয়ে গিয়েও যোগদান করিয়েছেন। কিন্তু জেলার নেতাদের জানানোর প্রয়োজনটুকুও বোধ করে্ননি। তখন থেকেই দলের সঙ্গে আমাদের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি তার প্রতিবাদ করেছিলাম। সেই সময় দল ছাড়লে আমাকে ‘গদ্দার’ বলা হত। আমি ভাল ফল করেছি, ৫-এ-৫ পার্টিকে দিয়েছি। আর সেই সময়ই মৃদুলদার সঙ্গে যোগাযোগে ছিলাম। তখন থেকেই আমাদের মন ভেঙে গিয়েছিল। আজ তাই আমরা এই জায়গায়।’’

আরও পড়ুন:ইস্যু ভোট পরবর্তী হিংসা: উত্তরবঙ্গে পা দিয়েই রাজ্যের সমালোচনায় সরব রাজ্যপাল

জেলা সভাপতির দলত্যাগের পর আলিপুরদুয়ারে বিজেপিতে আরও ভাঙনের আশঙ্কায় রয়েছে গেরুয়া শিবিরের নেতারা। জেলা কমিটির ৮ পদাধিকারী-সহ দলের জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা তৃণমূলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দলে আরও ভাঙন ঠেকাতে সোমবার জরুরি বৈঠকে বসল বিজেপির জেলা নেতৃত্ব! আলিপুদুয়ারের দলীয় অবজার্ভার, কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে এই বৈঠকের ডাক দিয়েছেন। সাংসদ জন বারলা, ফালাকাটার বিধায়ক দীপক বর্মন ও কুমারগ্রামের বিধায়ক মনোজ ওঁরাও উপস্থিত আছেন । তবে এই বৈঠকে আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল ও কালচিনির বিধায়ক বিশাল লামা অনুপস্থিত ছিলেন! মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিগ্গা অবশ্য কলকাতায়। দলের জেলা পার্টি অফিসে এই বৈঠক চলছে!

 

Previous articleসিবিএসই : যারা পরীক্ষায় বসতে ইচ্ছুক, তাদের পরীক্ষা কবে? জানাল কেন্দ্র
Next articleকথা রাখলেন মমতা: পুজোর আগেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ