অমৃতাভর পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা: হবে অসিফিকেশন টেস্ট, ডিএনএ পরীক্ষাতেও অনুমতি

জ্ঞানেশ্বরী ট্রেন দুর্ঘটনায় জালিয়াতির রহস্যের তদন্তে নেমে প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। এবার সিবিআই (CBI) জানতে চায় অভিযুক্ত অমৃতাভ চৌধুরীর (Amritabha Chowdhury) বয়স কত? এর জন্য তাঁর অসিফিকেশন টেস্ট করা হবে। জ্ঞানেশ্বরী (Gyaneswari) ট্রেন দুর্ঘটনায় ছেলেকে মৃত বলে ঘোষণা করে চার লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য পেয়েছিল জোড়াবাগানের অমৃতাভ চৌধুরীর পরিবার। মিহির চৌধুরী জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনার পর থেকে অনেকদিন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। বেশ কয়েক বছর তিনি ছিলেন তামিলনাড়ুতে (Tamilnadu)। কয়েক বছর হল তিনি বাড়িতে ফিরেছেন। আবার মাওবাদীদের দ্বারা অমৃতাভর 6 বছর বন্দি থাকার অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা।

কিন্তু যে অমিতাভ চৌধুরীকে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করছে, তাঁর বয়স কত? কারণ তিনি যদি জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনার অমৃতাভ চৌধুরী হন, তাহলে তাঁর বয়স হওয়ার কথা ৪০। কিন্তু যাঁকে অভিযুক্ত বলে সিবিআই শনাক্ত করেছে, তাঁর বয়স দেখে মনে হচ্ছে ৩০। সেই কারণেই সঠিক বয়স জানতে চায় সিবিআই। এজন্য অসিফিকেশন টেস্ট হবে। এতে হাড়ের গঠন দেখে সঠিক বয়স নির্ধারণ করা যায়। এর পাশাপাশি, তাঁর ডিএনএ টেস্ট করা হবে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।

সিবিআই সূত্রে খবর, ইদানিং প্রোমোটারি ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছিলেন অমৃতাভ। মন্তেশ্বরে চারতলা বিশাল বাড়ি তৈরি করেন। গ্রামের বাড়ি মন্তেশ্বরের বামুনপাড়ায় আরও একটি দোতলা বাড়ি তৈরিও চলছে। কিন্তু যে অমৃতাভ জ্ঞানেশ্বরীর যাত্রী ছিলেন তিনি বি-টেক ইঞ্জিনিয়র। এই অমৃতাভকে সে বিষয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করলে, তিনি বলছেন তাঁর কিছু মনে নেই। এখানেই অমৃতা বর পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

এগারো বছর আগে জ্ঞানেশ্বরী ট্রেন দুর্ঘটনায় অমৃতাভর মৃত্যু হয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু অন্য অনেকের মতোই তাঁর দেহও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে অমৃতাভকে মৃত বলে জানানো হয়। চার লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য পায় তাঁর পরিবার। তাঁর বোন মহুয়া পাঠক রেলে চাকরি পান।

আরও পড়ুন-শর্ত সাপেক্ষে দেশে ফিরতে তৈরি বিনয় মিশ্র, আদালতকে জানালেন আইনজীবী

প্রথমে নিজেকে অমৃতাভ বলে মানতে না চাইলেও পরে জেরার মুখে অভিযুক্ত জানান তিনি অমৃতাভ চৌধুরী। যে টাকা পাওয়া গিয়েছে সুদ সমেত তা ফেরত দেবেন এবং চাকরি ছেড়ে দেবেন আত্মীয়া। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, রেলের আধিকারিকরা এর সঙ্গে যুক্ত। এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে সিবিআই। কারণ, ডিএনএ স্যাম্পল ম্যাচ করা, ভুয়ো রিপোর্ট জমা- এই সব বাইরে থেকে করা সম্ভব নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। এই সবের মধ্যেই অমৃতাভর পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দেওয়ায়, সব রকম পরীক্ষা করে নিতে চাইছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।