দিলীপ-স্বপন প্রকাশ্য লড়াই, খুল্লামখুল্লা বিজেপির অন্দরমহল

বিজেপিতে (bjp) এতদিন অদৃশ্য লড়াই ছিল, এবার তা প্রকাশ্যে এসে পড়ল। কেউ কেউ এই লড়াইকে আদি বনাম নব্যদের লড়াই হিসাবেই দেখছেন। কিন্তু ভোটে হারের পর থেকে বিজেপির তথাকথিত শৃঙখলা কার্যত খুল্লামখুল্লা।

ট্যুইট আর সাংবাদিক সম্মেলনে একে অপরের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত (swapan Dasgupta) আর রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (dilip ghosh)। লড়াই শুরু স্বপনের একটি ট্যুইটকে (Twit) কেন্দ্র করে। ট্যুইটে কারওর নাম উল্লেখ নেই। কিন্তু লক্ষ্য আসলে যে দিলীপ ঘোষ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। স্বপন বলতে চেয়েছেন, সব বিষয়ে দিলীপের মন্তব্যে দলের ক্ষতি হচ্ছে।

দিলীপের এই ‘অযথা’ মুখ খোলা যে যথাযথ নয়, তা সরাসরি বলতে গিয়ে টেনে এনেছেন তাঁর রাজনৈতিক বন্ধু প্রয়াত অরুণ জেটলির (arun jaitly) প্রসঙ্গ। তিনি লিখছেন, জেটলির কাছ যে রাজনৈতিক শিক্ষা পেয়েছি তার ভিত্তিতে বলতে পারি… এক, সাংবাদিকরা মুখের সামনে বুম ধরলেই যে সব সময় প্রতিক্রিয়া দিতে হবে, তার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। দুই, ঠিক কোন সময়ে নিজের মত প্রকাশ করতে নেই, সেটাও জানতে হয়। তিন, প্রতিটি বিষয়ে নিজের মত জানাতে হবে, এমন কেউ বলে দেয়নি।

লক্ষ্য যে আসলে দিলীপ ঘোষ, তা বিজেপি নেতারাও জানেন। কোনওরকম রাখঢাক না করে দিলীপ জবাব দিয়েছেন। তাঁর স্পষ্ট কথা, দলের কর্মীরা যখন মার খাচ্ছেন, ঘর ছাড়া হচ্ছেন, তখন ঠাণ্ডা ঘরে বসে ফেসবুকে রাজনীতি করাটা যথার্থ নয়। কর্মীদের পাশে এসে দাঁড়ানোটাই এখন প্রথম কাজ। পালটা স্বপন দিলীপের এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, আমি কারওর নাম করে বলিনি। বন্ধু জেটলির সঙ্গে থাকার উপলব্ধির কথা বলেছি। তবে যা বলেছি, তা অনেকের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

আসলে দিলীপ শিবিরের সঙ্গে স্বপন শিবিরের লড়াই বহু পুরনো। দিল্লি নির্ভরশীল স্বপনকে বারবার বাংলায় চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, ক্ষোভ বেড়েছে। বিধানসভায় তারকেশ্বর (tarakeswar) থেকে লড়াইয়ে হারের পরেই দিল্লি ফিরে গিয়েছেন স্বপন। ফের মনোনীত সাংসদ (nominated mp) হয়ে রাজ্যসভায়। দিলীপ শিবিরের বক্তব্য, এসব পরিযায়ী নেতারা আসে-যায়। দলের আনুকুল্যে ভোটে জেতে বা হারে। তারপর আর খোঁজ পাওয়া যায় না। বাবুল সুপ্রিয় (babul supriyo) থেকে স্বপন দাশগুপ্ত তার জলজ্যান্ত উদাহরণ। এলাকায় কর্মীদের পাশে আদি বিজেপিরাই (old bjp) রয়েছেন, লড়াই করছেন। এরা আসলে বিজেপির বোঝা। এদেরকে বয়ে চলতে গিয়ে দলের হাঁপানি উঠছে। এইসব তাত্ত্বিক নেতারা আগে মাঠে নেমে কর্মীদের পাশে দাঁড়ান, তারপর সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপ্লব করবেন।

ভোটে হারার পর শতধা বিভক্ত বিজেপি। দিলীপ-স্বপন প্রকাশ্য লড়াই সেই ঘটনাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।

আরও পড়ুন- নন্দীগ্রাম-মামলার এজলাস বদলের দাবিতে এবার আইনি পথে মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী

 

Previous articleরোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আবারও বিশ্বনেতাদের সহযোগিতা চাইলেন হাসিনা
Next articleট্রফি অধরা বিরাট কোহলির, বিশ্ব টেস্ট চ‍্যাম্পিয়নশিপ চ‍্যাম্পিয়ন হল নিউজিল্যান্ড