মৃত বিজেপি-কর্মীর দেহ ফের ময়নাতদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের

হাই কোর্ট

নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের মরদেহের ফের ময়নাতদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের৷ এই ময়নাতদন্ত করতে হবে সেনাবাহিনীর কম্যাণ্ড হাসপাতালে৷

কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে ভোট পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলার শুনানির পর শুক্রবার এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বা NHRC-এর বিশেষ দলের তরফে রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে পেশ করা অন্তর্বতী রিপোর্টের ভিত্তিতে
এদিন বৃহত্তর বেঞ্চ কয়েক দফা নির্দেশ জারি করেছে৷ নির্দেশে বলা হয়েছে,

◾রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং আক্রান্ত হওয়ার পর যারা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (NHRC) কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন অথবা হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত NHRC-এর দলের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেককে ম্যাজিস্ট্রেট-এর সামনে আইনের ১৬৪ ধারা অনুযায়ী জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার কথা জানাতে হবে৷ প্রতিটি ঘটনার FIR করতে হবে৷

◾ভোট পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত সব অভিযোগ পুলিশকে গ্রহণ করতে হবে

◾ভোট পরবর্তী হিংসার কারণে যারা আহত হয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসার দায়িত্ব রাজ্যকে নিতে হবে৷

◾ভোট পরবর্তী হিংসার কারণে যারা আক্রান্ত এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্যকে৷

◾মৃত অভিজিৎ সরকারের দেহ কম্যাণ্ড হাসপাতালে দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্ত করতে হবে।

◾ভোট পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত সব নথি সংরক্ষণ করতে হবে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে৷

◾যাদবপুরে NHRC-এর দলের উপর হামলার ঘটনায় জেলাশাসক বা পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল কেন জারি করা হবে না, তার কারণ দর্শাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে৷ আগামী ১৩ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি৷

রাজ্যের দুই অফিসারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি’র শো-কজ প্রসঙ্গে এদিন অ্যাডভোকেট জেনারেল (AG) বলেন,সেদিন ডিসি পদমর্যাদার অফিসার রশিদ মুনির খান দায়িত্বে ছিলেন৷ তিনি NHRC-এর এক সদস্যকে ঘটনার FIR করতে বলেছিলেন৷ কিন্তু তিনি রাজি হননি৷
এই সময় বিচারপতি হরিশ ট্যাণ্ডন জানতে চান, “জেলাশাসক স্তরের কোনও আধিকারিক কেন ঘটনাস্থলে ছিলেন না ?” ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এই অনুপস্থিতি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন৷

মৃত অভিজিৎ সরকারের মরদেহের ফের ময়নাতদন্তের নির্দেশ প্রসঙ্গে AG বলেন, এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে চলছে৷ ফলে হাইকোর্ট এই নির্দেশ দিতে পারে না৷ উত্তরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জানান, “আমরা শুধুমাত্র ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছি, মূল মামলা প্রসঙ্গে কিছু বলা হয়নি৷”

প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর গত ২ মে তারিখে অভিজিৎ সরকার নামে এক বিজেপি কর্মীর নিহত হন৷ মৃত অভিজিতের ভাই বিশ্বজিৎ সরকার দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন। তিনি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন, আদালত যেন বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করে ঘটনার তদন্ত করে। ঘটনার তদন্তভার CBI-এর হাতে দেওয়ারও আবেদন জানানো হয় সুপ্রিম কোর্টের কাছে। মামলা এখনও চলছে৷

 

Previous articleস্পিকারের পরামর্শে MLA হোস্টেলে নিরাপত্তারক্ষীদের আগ্নেয়াস্ত্র নিষিদ্ধ করলো কলকাতা পুলিশ
Next articleউচ্চ-প্রাথমিকে নিয়োগ মামলায় SSC-র চেয়ারম্যানকে আজই তলব হাইকোর্টের