পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান মুকুল রায়, ওয়াকআউট বিজেপির

জল্পনাকে সত্যি করে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান (PAC Chairman) হলেন মুকুল রায় (Mukul Roy)। আজ, শুক্রবার বিধানসভায় (Assembly) PAC চেয়ারম্যান হিসেবে মুকুল রায়ের নাম ঘোষণা করলেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Speaker Biman Banarjee)। তবে তাঁর নাম ঘোষণা করতেই বিরোধিতায় হই হট্টগোল শুরু করেন বিরোধী বিজেপি (BJP) বিধায়করা। এবং শেষপর্যন্ত তাঁরা ওয়াকআউট (WalkOut) করেন।

কৃষ্ণনগর উত্তরে বিজেপির টিকিটে জিতে বিধায়ক হয়েছেন মুকুল রায়। কিন্তু ভোটের ফল ঘোষণার কিছুদিনের মধ্যেই তৃণমূলে (TMC) ফিরে আসেন তিনি। “ঘর ওয়াপাসি” হলেও বিধায়ক পদ ছাড়েননি মুকুলবাবু। বরং, বিধানসভার PAC চেয়ারম্যান পদের জন্য মনোনয়ন দাখিল করেন তিনি। আর যা নিয়ে শুরু থেকেই বিরোধিতা করছে বিজেপি।

PAC-এর জন্য এবার মোট ২০ জন সদস্যের তালিকা আগেই প্রকাশ করা হয়েছিল বিধানসভার তরফে। সেখানে তৃণমূলের পক্ষে ১৩ জন, বিজেপির ৬ জন এবং ব্যক্তিগতভাবে মুকুল রায় মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। ২০ জনের কমিটিতে ২০টি বৈধ মনোনয়ন জমা পড়ায় নির্বাচন করার দরকার হয়নি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই কমিটিতে নির্বাচিত হন ২০ জন বিধায়ক।

অপেক্ষা ছিল চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণার। বিধানসভা অধিবেশনের এই পর্বের শেষদিনে তা ঘোষণা করলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে আইন মোতাবেক, স্পিকার নিজের ক্ষমতা বলে মুকুল রায়কে এই পদে নির্বাচিত করলেন।

স্পিকারের এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় বিজেপি বিধায়করা প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। কিছুক্ষণের জন্য উত্তাল হয়ে ওঠে বিধানসভা কক্ষ। এরপর বিরোধী দলনেতা (Leader of Opposition) শুভেন্দু অধিকারীর (Subhendu Adhikary) নেতৃত্বে স্লোগান ও শাউটিং করতে করতে অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করেন বিজেপি বিধায়করা। ওয়াক আউটের পর শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “অধ্যক্ষ নীতি-আদর্শ বিসর্জন দিয়ে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে মুকুল রায়কে PAC চেয়রাম্যান নিযুক্ত করলেন। বিজেপির কেউ মুকুল রায়ের প্রস্তাবক ছিলেন না। তাহলে কীসের ভিত্তিতে মুকুলকে চেয়ারম্যান করা হল? মুকুল রায়কে চেয়ারম্যান করার প্রতিবাদে আমরা ওয়াক আউট করেছি। এই পদে থাকতে পারবেন না মুকুলবাবু। কারণ, ওনার বিধায়ক পদ খারিজ হয়ে যাবে। মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন নিয়ে আমরা আইনি পথে লড়াই করবো। মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে ৬৪ পাতার অভিযোগ অধ্যক্ষকে দিয়েছি।”

উল্লেখ্য, PAC চেয়ারম্যান পদে মূলত বিরোধী কোনও বিধায়ককে বসানো হলেও শাসকদলের সদস্যকেও বসানোর ইতিহাস আছে রাজ্য বিধানসভায়। এর আগে ২০১৬ থেকে ২০২১ পর্যন্ত PAC কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন মানস ভুঁইয়া (Manas Bhuiya) তিনি খাতায় কলমে কংগ্রেস বিধায়ক হলেও পরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তখন এই শুভেন্দু অধিকারী শাসক দলের বিধায়ক ছিলেন। রাজ্যের মন্ত্রীও ছিলেন। সেক্ষেত্রে নৈতিকতার প্রসঙ্গ তোলেননি আজকের বিরোধী দলনেতা। ফলে সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, দল বদলের ফলে শুভেন্দুর দ্বিচারিতা সামনে চলে এলো।

Previous articleনতুন তথ্য-প্রযুক্তি আইনের সব মামলার স্থানান্তর নিয়ে ১৬ জুলাই সুপ্রিম কোর্টে শুনানি
Next articleফিরহাদের কড়া বার্তায় সুর নরম মালিকদের, আগামিকাল থেকে পথে অতিরিক্ত বাস