জেলা নির্বাচনী অফিসারদের চিঠি পাঠালো কমিশন! রাজ্যে শুরু উপনির্বাচনের প্রস্তুতি

বিধানসভা ভোটে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে শাসক দল তৃণমূল। তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু নন্দীগ্রামে বিতর্কিত ফলাফলের পর এখনও কমিশনের খাতায় “পরাজিত” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রামে গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। এই মামলা এখন হাইকোর্টে বিচারাধীন। মামলার নিষ্পত্তি হতে কত সময় লাগবে বা মামলার রায় শেষপর্যন্ত কার পক্ষে বা বিপক্ষে যাবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন “নন এমএলএ” মুখ্যমন্ত্রী। সংসদীয় আইন অনুযায়ী, তৃণমূল নেত্রীকে নির্ধারিত ৬ মাসের মধ্যে কোনও একটি আসন থেকে উপনির্বাচনে জিতে আসতে হবে। এটা কাঁটা হয়ে রয়েছে তৃণমূলের কাছে। তাই খুব দ্রুততার সঙ্গে উপনির্বাচন চায় শাসক দল। আবার একইভাবে রাজ্যের ৭টি আসনে কোনও বিধায়ক না থাকায় এলাকার মানুষ কার্যত অভিভাবকহীন। ফলে কোনও সরকারি কাজে বিধায়ককে প্রয়োজন হলে এই সাত বিধানসভার মানুষ সমস্যায় পড়ছেন।

এদিকে রাজ্যে দৈনিক করোনা সংক্রমণ অনেকটাই নিম্নমুখী। ফলে এখনই উপনির্বাচনের উপযুক্ত সময়। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে গিয়ে দরবার করে এসেছে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। প্রয়োজনে ৭দিন প্রচারের জন্য দিয়ে কমিশনকে নির্বাচন করার আর্জি জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ তথা প্রতিনিধিরা। আর সেই আবেদনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে উপনির্বাচনের প্রস্তুতি কার্যত শুরু করে দিল নির্বাচন কমিশন (Election Commission)।

কোচবিহার, কলকাতা দক্ষিণ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও নদিয়ার জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে চিঠি পাঠালেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব। চিঠিতে বলা হয়েছে, উপনির্বাচনের জন্য ইভিএম, ভিভিপ্যাট তৈরি রাখা হোক। ফলে নির্ধারিত ৬ মাসের মধ্যেই রাজ্যের ৭টি আসনে উপনির্বাচন হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ভোটের আগে প্রার্থীদের করোনার মৃত্যু হওয়ায় মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর ও সামসেরগঞ্জে নির্বাচন হয়নি। খড়দহে ভোট হলেও তৃণমূলের বিজয়ী প্রার্থী কাজল সিনহা গণনার আগেই কোভিডে প্রাণ হারান। দিনহাটা ও শান্তিপুর কেন্দ্রে বিজেপির দুই জয়ী প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। আর ভবানীপুর কেন্দ্রে মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ইস্তফা দিলে উপনির্বাচন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। তৃণমূল সূত্রের খবর, দলনেত্রীর জন্যেই ভবানীপুর আসন থেকে পদত্যাগ করেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি প্রার্থী হতে পারেন খড়দহে।

অন্যদিকে, রাজ্যসভার শূন্য আসনগুলিতে নির্বাচন নিয়ে রাজ্যের মতামত জানতে চেয়েছিল নির্বাচন কমিশন। রাজ্য সরকার জানিয়েছিল, রাজ্যসভা তো বটেই উপনির্বাচনের জন্যেও প্রস্তুত নবান্ন। গতকালও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ”আলাদা আলাদা এলাকায় উপনির্বাচন। বাংলায় সংক্রমণের হার ১.৫ শতাংশ। এমন এলাকাও আছে যেখানে একটা কেসও নেই। কলকাতা পুরসভার রিপোর্ট-এ ভবানীপুরের অনেক ওয়ার্ড কোভিডশূন্য।”

আরও পড়ুন- মমতার সফরের মাঝেই রাষ্ট্রপতির কাছে অভিযোগ জানাতে দিল্লি যাচ্ছে বিজেপি বাহিনী

Previous articleকলকাতায় পা রাখলেন মহামেডান কোচ আন্দ্রে চেরনেশোভ
Next articleতালিবানকে উচ্ছেদের চেষ্টা করলে আফগান সেনার উপর হামলার হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের