দিল্লি বিজেপির নেতাই NHRC প্রতিনিধি হয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে কুৎসা রিপোর্ট দিলেন!

চমৎকার নিরপেক্ষতার নমুনা! মোদি সরকারের (modi govt.) জমানায় স্বশাসিত সংস্থাগুলোর এমনই হাল হয়েছে যে “নিরপেক্ষ রিপোর্ট” তৈরি করছেন বিজেপি (bjp) নেতারা। নির্লজ্জ গেরুয়া রাজনীতির সাম্প্রতিকতম নমুনা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (NHRC) তথাকথিত নিরপেক্ষ রিপোর্ট। রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী হিংসার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়েছে। আর সেখানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নাম করে যে রিপোর্ট পেশ হয়েছে তা শুধু নির্জলা মিথ্যা ও কাল্পনিক অভিযোগেই পূর্ণ নয়, তার ছত্রে ছত্রে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপির রাজনৈতিক অভিযোগের স্পষ্ট প্রতিফলন। বিজেপি নেতাদের ব্রিফিং, ডিটকেশন নিয়ে যে মনগড়া রিপোর্ট ?আদালতে জমা পড়েছে, সেখানে প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসাবে যাঁর নাম রয়েছে তিনিও বিজেপির সক্রিয় সদস্য। আর মানবাধিকার ?কমিশনের বকলমে বিজেপির তৈরি করা রিপোর্টে রাজ্যের মন্ত্রী, তৃণমূলের সাংগঠনিক স্তরের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের দাগী ক্রিমিনাল হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে! “নিরপেক্ষ” সংস্থার “নিরপেক্ষ” রিপোর্টের কী অপূর্ব নমুনা!

রাজ্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কুৎসা করতে গিয়ে যে ব্যক্তি রিপোর্ট তৈরি করেছেন তাঁর পরিচয় সামনে এলেই গোটা বিষয়টি স্পষ্ট হবে। সেই ব্যক্তির নাম আতিফ রশীদ (atif rasheed)। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে হাসিমুখে ছবি তোলা এই ব্যক্তি আদতে দিল্লি বিজেপির এক নেতা। একসময় তিনি ছিলেন দিল্লি বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের প্রেসিডেন্ট। তিনিই এখন জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশনের মত তথাকথিত নিরপেক্ষ সংস্থায় ভাইস চেয়ারম্যানের পদটি অলংকৃত করছেন। সেইসঙ্গে, বাংলার হিংসা খুঁজতে আসা সফরকারী জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। এই সেই ব্যক্তি, যাঁর নেতৃত্বে রাজ্যে হিংসা খুঁজতে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেরানোর অভিযোগই শুধু নয়, যাদবপুর এলাকায় সফর চলাকালীন মিথ্যা অভিযোগে বাজার গরম করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় দুষ্কৃতীরা নাকি তাঁর উপর চড়াও হয়েছিল, এমন গুরুতর অভিযোগ এনেও কোনও এক রহস্যময় কারণে তা নিয়ে তিনি এফআইআর দায়ের করার উৎসাহ দেখাননি। কোনও কোনও মহলের মতে, তা কি এজন্যই যে এফআইআর হলে এধরনের মিথ্যা অভিযোগ ধরা পড়ে যাবে? কথাগুলো উঠেছে এই ব্যক্তির সক্রিয় রাজনৈতিক পরিচয় এবং রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট রিপোর্ট তৈরির পরিপ্রেক্ষিতে। যা পশ্চিমবঙ্গ ও রাজ্যের নবনির্বাচিত সরকারকে কালিমালিপ্ত করতে বিজেপির রাজনৈতিক বক্তব্য সম্বলিত একপেশে এক রিপোর্ট। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের বিজেপি যোগের পরিচয় সগর্বে ঘোষণা করা আতিফ রশীদ নামের এই বিজেপি নেতা তথা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধির বক্তব্য যদি হয় নিরপেক্ষ স্বশাসিত সংস্থার নমুনা, তবে মোদি জমানায় ভারতে গণতন্ত্র কোন পথে হাঁটছে বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

Previous articleব্রেকফাস্ট স্পোর্টস
Next articleমুখ্যমন্ত্রী যাওয়ার আগেই দিল্লি যাচ্ছেন অভিষেক, রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা