ত্রিপুরায় রক্তাক্ত দেবাংশু-জয়া-সুদীপ! নীরব দর্শক পুলিশ, তীব্র নিন্দায় অভিষেক

শুরুটা হয়েছিল ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবস থেকে। রাজধানী আগরতলা থেকে শুরু করে ত্রিপুরার সমস্ত জেলায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভার্চুয়াল ভাষণের জন্য জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানো হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠান ব্যস্ততায় বিপ্লব দেবের প্রশাসন। গ্রেফতার করা হয় শতাধিক তৃণমূল কর্মীকে। এরপর ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাকের সদস্যদের হোটেলে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। এখানেই শেষ নয়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এরপর ত্রিপুরায় গিয়ে বিজেপির গুন্ডা বাহিনীর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। ছিঁড়ে খুলে ফেলা হয়েছিল তৃণমূলের ফ্ল্যাগ, ফেস্টুন, ব্যানার। তৃণমূলের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষকেও হেনস্থা করেছিল ত্রিপুরা পুলিশ। একদিকে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের লাগাতার হামলা, অন্যদিকে বিপ্লব দেব সরকারের “নিষ্ক্রিয়” পুলিশ। সবমিলে ত্রিপুরায় ধারাবাহিক আক্রান্ত তৃণমূল।
আজ, শনিবার ত্রিপুরায় ফের আক্রান্ত তৃণমূল নেতৃত্ব। ত্রিপুরায় এবার আক্রান্ত হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য, ছাত্রনেতা সুদীপ রাহারা ও ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন সভানেত্রী জয়া দত্ত। এবার শুধু আক্রান্ত নয়, ত্রিপুরার রাস্তায় রক্তাক্ত তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা।
জানা গিয়েছে আজ, শনিবার দুপুরে আমবাসা যাওয়ার পথে বিজেপি আশ্রিত একদল দুষ্কৃতী তাঁদের উপর চড়াও হয়। তাঁদের গাড়ি লক্ষ্য করে মুড়ি-মুড়কির মতো ইট পাথরও ছোঁড়া হয়। গাড়ি ভাঙচুর চালানো হয়। আরও অভিযোগ, বাঁশ, রড দিয়ে তাঁদের আক্রমণ করা হয়। ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন তৃণমূল নতুন প্রজন্মের নেতা, সুবক্তা, প্রতিবাদী সুদীপ রাহা। আক্রান্ত হয়েছেন দেবাংশু ভট্টাচার্য ও জয়া দত্তও। ঘটনায় পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়ে ধর্নায় বসেছেন জয়া, সুদীপ, দেবাংশুরা। ত্রিপুরার বর্ষীয়ান নেতা আশিসলাল সিংয়ের নেতৃত্বে স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীরা এই ঘটনার প্রতিবাদে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
অন্যদিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকলেও তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ করেছেন দেবাংশু, সুদীপরা। পুলিশের সামনে বিজেপি গুন্ডাবাহিনী তাঁদেরকে আক্রমণ করেছে। আর তা দেখে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বিপ্লব দেবের পুলিশ।
চুপ করে বসে নেই তৃণমূল শীর্ষনেতারা। ঘটনার খবর আসতেই ত্রিপুরা নেতৃত্বকে পরবর্তী পদক্ষেপের নির্দেশ দোয়া হয়েছে। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন।সুদীপ-দেবাংশুদের আক্রান্ত হওয়ার খবর জানার পরেই মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে ও বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন অভিষেক। বিজেপিকে নিশানা করে টুইটে অভিষেক লিখেছেন, “এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ত্রিপুরায় বিজেপির গুন্ডারা নিজেদের প্রকৃত রূপ দেখিয়ে দিল। বিপ্লব দেবের রাজত্ব-এ ত্রিপুরার গণতন্ত্র পদদলিত। তৃণমূল কর্মীদের ওপর বর্বরোচিত আক্রমণ প্রমাণ করেছে বিপ্লব দেবের নেতৃত্বে ত্রিপুরায় এখন গুন্ডারাজ চলছে।”
এখানেই থেমে থাকেননি অভিষেক। ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি লিখেছেন, “বিজেপি আর বিপ্লব দেব প্রশাসনের হুমকি, আক্রমণ প্রমাণ করছে তারা কতটা অমানবিক। তবে ত্রিপুরায় গণতন্ত্র ফেরাতে তৃণমূল ধারাবাহিক লড়াই চালিয়ে যাবে। লড়াইয়ের ময়দানে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়া হবে না।”


Previous articleপিএসজিতে মেসি! জল্পনা তুঙ্গে
Next articleঅর্ধেক আমেরিকা টিকার ২টি ডোজ পেলেও, মোদির শাইনিং ইন্ডিয়ায় এখনও হাহাকার