হামলা হতে পারার আশঙ্কা করে বৃহস্পতিবারই সতর্কবার্তা জারি করে আমেরিকা-ব্রিটেন-অস্ট্রেলিয়া। সেই আশঙ্কাকে সত্যি করে একের পর এক আত্মঘাতী বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল কাবুল। গতকাল স্থানীয় সময় সন্ধে সাড়ে ছ’টা নাগাদ বিমানবন্দরের কাছে পর পর দু’টি আত্মঘাতী বিস্ফোরণে শিশু-সহ অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ১২ জন আমেরিকান সেনা। জখম হয়েছেন দেড়শোরও বেশি।

আরও পড়ুন:রক্তাক্ত কাবুল: বিস্ফোরণে মৃত বেড়ে ৪০, নিন্দায় বিশ্ব

প্রথম বিস্ফোরণের পরই সন্দেহের তির তালিবানের দিকে গেলেও তারা সাফ জানিয়ে দেয়, এই হামলার পিছনে তাদের হাত নেই। তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদের দাবি, আইএস-কে এই হামলা চালিয়েছে। গভীর রাতে বিস্ফোরণের দায় নিয়েছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তাদের পক্ষ থেকে এও জানানো হয়, একজন আত্মঘাতী বোমারুকে পাঠানো হয়েছিল মার্কিন বাহিনীর উপর হামলা চালানোর জন্য।

প্রথম বিস্ফোরণটি হয় হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ‘অ্যাবি গেটের’ সামনে। এই দরজা দিয়েই এখন বিমানবন্দরের ভিতরে ঢুকছেন দেশ ছাড়ার অনুমতি পাওয়া মানুষেরা। দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি হয় বিমানবন্দরের খুব কাছেই ব্যারন হোটেলের সামনে। এই হোটেলে এখন ব্রিটিশ নাগরিকেরা রয়েছেন। এরপর তৃতীয়বারের বিস্ফোরণটি হয় বিমানন্দর থেকে একটু দূরে। বিমানবন্দরের সামনে বিস্ফোরণের পরে একাধিক দুষ্কৃতী সেখানে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। তাতেও অনেকে জখম হন। এক আফগান স্বাস্থ্য আধিকারিককে উদ্ধৃত করে এক ব্রিটিশ চ্যানেল জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা অন্তত ৬০। হাসপাতালগুলিতে উপচে পড়া ভিড়। আক্রান্তদের মধ্যে বিমানবন্দরের দায়িত্বে থাকা আমেরিকান মেরিন কোরের ১১ জন-সহ মোট ১২ জন এবং বিমানবন্দরের বাইরে থাকা কয়েক জন তালিবান রক্ষীও রয়েছেন।
তালিবানরা কাবুল দখলের পর থেকেই বিমানবন্দরে ঢোকার জন্য ভিড় জমাচ্ছেন হাজার হাজার আফগান। প্রতিদিন প্রায় কুড়ি হাজার মানুষ এই বিমানবন্দর থেকেই দেশ ছাড়ছেন। আজও সকাল অন্যান্য দিনের মতো বিমানবন্দরের সামনে ছিল থিকথিকে ভিড়। সেই ভিড়ের মধ্যেই প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটায় এক আত্মঘাতী জঙ্গি। তার কিছুক্ষণ পরেই ব্যারন হোটেলের সামনে আর একটি ফিদাইন হামলা হয়। সেখানে ভিড় অপেক্ষাকৃত কম থাকলেও কয়েক জন গুরুতর জখম হয়েছেন।


