আফগানিস্তানের কুর্সিতে বসতে পারেন হিবাতুল্লা আখুনজাদা, ঘোষণা শীঘ্রই

১৫ অগাস্ট আফগানিস্তানের দখল নিয়েছে তালিবান। নতুন তালিবান সরকার গঠন নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে শুরু হয়েছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। কে প্রধান শাসক হবেন, মন্ত্রিসভায় কোন গোষ্ঠীর প্রাধান্য থাকবে তা নিয়ে তালিবানের দুই মূল গোষ্ঠীর মধ্যে জোরদার ঠান্ডা লড়াই চলছে। এই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে সিঁদুরে মেঘ বলে মনে করছেন তালিবান নেতারা। কারণ প্রথম দফায় ১৯৯৬ সালে তালিবান যখন আফগানিস্থানের ক্ষমতা দখল করেছিল তখন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে তাদের ক্ষমতা কার্যত হাতছাড়া হয়েছিল। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় তার জন্য তালিবানের শীর্ষ নেতারা জোরদার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

সে কারণেই সামনে আসতে হচ্ছে সংগঠনের প্রধান হিবাতুল্লাহ আখুনজাদাকে। এই দলীয় লড়াই সামাল দিতে খুব সম্ভবত আফগানিস্তানের নতুন শাসক হতে চলেছেন তালিবান প্রধান হিবাতুল্লা আখুনজাদা। সূত্রের খবর, দুই-একদিনের মধ্যেই তালিবান প্রধানের নাম দেশের প্রধান শাসক হিসেবে ঘোষণা করা হতে পারে। তাঁর অধীনেই থাকবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট। বৃহস্পতিবার তালিবানের রাজনৈতিক সংগঠনের প্রধান শের মহম্মদ আব্বাস জানিয়েছেন, দু-একদিনের মধ্যেই তাঁরা সরকারের সকল সদস্যের নাম ঘোষণা করবেন।

কয়েক দিন আগে শোনা যাচ্ছিল তালিবান নেতা মোল্লা আবদুল বরাদর গনি দেশের শাসক হতে পারেন। কিন্তু বরাদরের নাম কিছুটা পিছনে চলে গিয়েছে। এই মুহূর্তে তালিবান সরকারের মন্ত্রিসভা গঠনের বিষয়ে মোল্লা ইয়াকুব গোষ্ঠী এবং আনাস হাক্কানি গোষ্ঠীর মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলছে। দুই গোষ্ঠীই চাইছে মন্ত্রিসভায় তাদের প্রভাব বেশি থাকুক। পাশাপাশি অন্য গোষ্ঠীগুলি মন্ত্রিসভায় নিজেদের সদস্য সংখ্যা নিয়ে সরব হতে শুরু করেছে। তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ জানিয়েছেন, তাদের সরকার গঠনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। সকলকে নিয়েই তাঁরা নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করবেন। সরকার গঠন নিয়ে ইতিমধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে বলে জাবিউল্লাহ দাবি করেন।

আখুনজাদার অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী বিলাল করিমির দাবি, নতুন মন্ত্রিসভায় ইসলামিক নেতাদেরই প্রাধান্য থাকবে। মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম চূড়ান্ত হলেও এখন তা জানানো হবে না।

সাধারণত তালিবানের প্রধান নেতারা খুব একটা প্রকাশ্যে আসেন না। আখুনজাদাকেও সেভাবে প্রকাশ্যে আসতে দেখা যায় না। তবে সরকার গঠনের পর হিবাতুল্লাহ প্রকাশ্যে আসতে পারেন বলে অনেকেই মনে করছেন।

অন্যদিকে আফগানিস্তানের বেশিরভাগ প্রদেশের দখল তালিবানের হাতে গেলেও পঞ্জশির এখনও তাদের অধরা। বরং শাহ মাসুদের নেতৃত্বে নর্দান অ্যালায়েন্স সেখানে কড়া প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নর্দান অ্যালায়েন্সের সদস্যদের সঙ্গে তালিবান জঙ্গিদের দফায় দফায় সংঘর্ষ শুরু হয়। কইরিনি জেলায় এই সংঘর্ষে ১৫জন তালিবান জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে একটি তালিবানি ট্যাংক। দেশের স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট তথা নর্দান অ্যালায়েন্সের নেতা আমিরুল্লা সালেহ বলেছেন, “পঞ্জশির থেকেই আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছি। তবে তার মানে এটা নয় যে, এই প্রতিরোধ শুধুমাত্র পঞ্জশিরকে বাঁচানোর জন্য। বরং আমরা গোটা আফগানিস্তানকে রক্ষার জন্য লড়াই করছি। পঞ্জশির উপত্যকা গোটা আফগানিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করছে। এই মুহূর্তে গোটা আফগানিস্তানের কাছে একমাত্র আশার আলো পঞ্জশির। যে সমস্ত মানুষ এখনো তালিবানের অত্যাচার, ফতোয়া ঘৃণা, ভয়ের বেড়াজালে আবদ্ধ সেইসব মানুষের জন্যই লড়ছি আমরা।” অন্যদিকে পঞ্জশির দখল করতে মরিয়া তালিবানরা সব ধরনের অবরোধ চালাচ্ছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট-সহ সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা।

আরও পড়ুন- বিজেপির চক্রান্ত উড়িয়েই এগোবে তৃণমূল, অভিষেক কেন টার্গেট?

advt 19

 

Previous articleবিজেপির চক্রান্ত উড়িয়েই এগোবে তৃণমূল, অভিষেক কেন টার্গেট?
Next articleদেশের সব শিশুকে টিকা দিতে লাগবে নয় মাস, তত দিন স্কুল বন্ধ রাখা ঠিক নয়, বললেন গুলেরিয়া