ভবানীপুর উপনির্বাচনে প্রচারে শনিবার ফের ঝড় তুললেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডের কলিন স্ট্রিটে একযোগে বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেস ও সিপিএমকেও আক্রমণ করলেন।

বক্তব্যের একেবারে শেষ পর্যায়ে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “ভবানীপুর ভারতকে পথ দেখাবে, দিশা দেখাবে। আগামীদিনে দেশ থেকে বিজেপিকে তাড়াতে পারে একমাত্র তৃণমূল। কংগ্রেস এতদিন বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া করতে করতে আজ দেশ এই জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। বিজেপি বিরোধিতায় কংগ্রেস কিছু করতে পারবে না। যা করার আমাদের করতে হবে। তাই ১ নম্বরে বোতাম টিপে ভবানীপুরে তৃণমূলকে ১ নম্বর করে দিন। আর এরপর দেশে একনম্বর করুন। ভবানীপুর থেকে খেলা শুরু হবে। তারপর গোটা দেশে খেলা হবে।”
প্রসঙ্গত, রাহুল গান্ধীর নন, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি বিরোধী মুখ, তৃণমূলের মুখপত্র ”জাগো বাংলা”র (Jago Bangla) খবর বেরোনোর কয়েকদিনের মধ্যেই আজ ওই সংবাদপত্রের সম্পাদকীয়তে কংগ্রেসকে ”পচা ডোবা” বলে কটাক্ষ করা হয়। শনিবার, ”জাগো বাংলা”র সম্পাদকীয়তে লেখা হয় ”তৃণমূলই বাংলায় আসল কংগ্রেস”। সুতরাং, সর্বভারতীয় রাজনীতিতে আগামিদিনে তৃণমূলের রাজনৈতিক অবস্থান ঠিক কী হতে চলেছে, তা “জাগো বাংলা”র পর এদিন নেত্রী নিজেই নির্বাচনী প্রচার এসে তা স্পষ্ট করে দিলেন।

গতকালও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে কংগ্রেস-বিজেপি আঁতাতের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, সিপিএম ৩৪ বছর ক্ষমতায় ছিল রাজ্যে, কংগ্রেস দেশে ক্ষমতায় ছিল, কিন্তু সিবিআই বা ইডি কাউকে স্পর্শ করেনি। কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে দিয়ে বিজেপির টার্গেটই হল শুধু তৃণমূলের মত সৎ, নির্ভীক, সাহসী একটা দলকে হেনস্থা করা। কিন্তু তৃণমূল কোনওদিন আত্মসমর্পণ করবে না।

আরও পড়ুন-শহরবাসীকে জল যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই দিতে লালবাজারে চালু হল বিশেষ কেন্দ্র

এদিন বক্তব্যের শুরুতেও তৃণমূল নেত্রী সিপিএমকেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “সিপিএম ৩৪ বছর রাজত্ব করেছে। কাজ করেনি। শুধু গুন্ডামি করেছে। কাজ আমরা করছি। কাজ আমরাই করব।”

উল্লেখ্য, জাগো বাংলাতে এদিন ‘আসল কংগ্রেস’ শীর্ষক সম্পাদকীয়তে কংগ্রেসের (Congress) ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকে সম্মান জানিয়েই লেখা হয়, পচা ডোবা এখন অপ্রাসঙ্গিক। এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন সুযোগ পেয়েও বাংলায় বাম বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে কংগ্রেস। এখন এই ভরকেন্দ্র পুরোপুরি তৃণমূলের দিকে। ৩৪ বছরের বাম (Left) অপশাসন থেকে বাংলাকে মুক্তি দিয়ে তৃণমূল মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। উন্নয়নমূলক কাজে বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আর কংগ্রেস এখন বিধানসভায় শূন্য। শুধু বাংলায় নয়, উত্তর প্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে দাঁড়াতে ব্যর্থ কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপিকে (Bjp) হারাতে কংগ্রেস নয়, তৃণমূলই একমাত্র বিকল্প। দেশে বিজেপি বিরোধী মুখ হিসেবে এখন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Bandopadhyay) দিকেই পাল্লা ভারী। সেটা মানছে সব রাজনৈতিক মহলই। কংগ্রেসের প্রতি সম্মান দেখিয়েও জোড়া ফুল নিজেদের রণকৌশল ঠিক করবে বলেই সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে।

এদিন সবশেষে ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটারদের ফের বৃষ্টি নিয়ে সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সকলকে সতর্ক করে বলেন, “একটাও ভোট যেন বাদ না যায়। ১০০% ভোট দিতে হবে। বিজেপিকে বিশ্বাস করবেন না। ইভিএম সমস্যা হলে দাঁড়িয়ে থাকুন। ভোট দিয়েই তারপর বাড়ি ফিরুন।”
