Tuesday, August 26, 2025

পালকে পাখির ছবি: সিনিয়র আইপিএস কল্যাণের প্রতিভায় মুগ্ধ কলকাতা থেকে হায়দরাবাদ 

Date:

জয়িতা মৌলিক

 

পুলিশের গলায় গান, পুলিশের কলমে সাহিত্য, পুলিশের তুলিতে রং। কড়া মেজাজের সঙ্গে এসবের সমাপতন খুব একটা বিরল নয়। তবে যে আঙুল মসৃণ ট্রিগারে, তাই স্বচ্ছন্দে চলে পাখির পালকের উপর; আলতো তুলির টানে। একেবারে অন্য ধরনের এই আর্ট ফর্ম যিনি অসাধারণ ভাবে আয়ত্ত করেছেন তিনি ডিআইজি-সিআইডি কল্যাণ মুখোপাধ্যায়  (DIG-CID Kalyan Mukhopadhyay) । সাহিত্য অনুরাগী বলে পুলিশ মহলে বেশ নাম আছে তাঁর। কবিতা-গল্প লেখার পাশাপাশি ক্যানভাসে স্বচ্ছন্দে চলে তাঁর পেন্সিল-ইজেল। তবে পাখির পালকে ছবি আঁকা একটা অন্যরকম শখ এই সিনিয়র আইপিএসের (Ips)।

হঠাৎ এরকম ইচ্ছে হল কেন? ‘এখন বিশ্ববাংলা সংবাদ’কে কল্যাণ মুখোপাধ্যায় জানান, করোনাকালের বেশ কিছুদিন আগে এই ভাবনা মাথায় আসে। কংক্রিটের জঙ্গলে কমছে পাখির সংখ্যা। সেইসময় রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে পালক কুড়িয়ে পান তিনি। মনে হয়, আগামী দিনেই পালকটাই থেকে যাবে, পাখির আর দেখা মিলবে না। সে ভাবনা থেকেই পাখির পালকে পাখির ছবি আঁকার আইডিয়া আসে।

কল্যাণ মুখোপাধ্যায় জানান, দেখতে নরম-সরম হলেও পাখির পালকের ছবি আঁকা কিন্তু খুব কঠিন। কারণ, প্রাকৃতিক নিয়মেই পালকের উপর থাকে একটা মোমের আস্তরণ। রং পিছলে যায় তাতে। আঁকার আগে জলে ভিজিয়ে রাখতে হয় পালক। তারপরে অত্যন্ত সরু তুলি দিয়ে অতি নরম ছোঁয়ায় ফুটিয়ে তুলতে হয় ছবি। একটু এদিক থেকে ওদিক হলেই সবটা ভেস্তে যাবে। কারণ, নরম পাখির মতোই অভিমানী তার পালক। ব্রাশের সামান্য অভিঘাতও সহ্য হয় না তার।

টার্কি থেকে কোয়েল, পায়রা- সবার পালকেই ছবি এঁকেছেন এই দুঁদে আইপিএস অফিসার। বর্তমানে তিনি হায়দরাবাদের সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল ন্যাশনাল পুলিশ অ্যাকাডেমিতে একটি প্রশিক্ষণে রয়েছেন। সেখানকার ডিরেক্টর অতুল করোয়ালকে সেই পালকের ছবি এঁকে উপহার দিয়েছেন তিনি। যা দেখে তাক লেগে গিয়েছে সবার। পালক দুটি ওই ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতেই সকালে হাঁটতে বেরিয়ে কুড়িয়ে পাওয়া।

ছোটবেলা থেকে আঁকা শেখেননি কল্যাণ মুখোপাধ্যায়। সাধারণ পরিবারে মফস্বলে বড় হওয়া ছেলেটির বাবা-মা লেখাপড়াতেই শিখিয়ে ছিলেন। আঁকাটা প্যাশান। ডিআইজি-সিআইডির কথায়, চাপ কমানোর দাওয়াই। যেটা উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের অত্যন্ত প্রয়োজন বলে মনে করেন মনোবিদরাও। ক্যানভাস, কাচ বা পাখির পালকে ছবি ফুটিয়ে তুলতে যে পরিমাণ মনঃসংযোগ প্রয়োজন হয়, তাতে অন্য চিন্তাগুলো নিমেষে উধাও হয়ে যায়। সঙ্গে থাকে সৃষ্টির আনন্দ। তাই স্বল্প বিরতির মধ্যে রং-তুলির খেলার পরে আবার কাজের জগতে নতুন উদ্দীপনায় ফিরে যাওয়া যায়। কল্যাণ মুখোপাধ্যায়ের এই শিল্প সৃষ্টির ফ্যান কলকাতার অনেক শীর্ষস্থানীয় পুলিশ কর্তাও।

 

 

Related articles

প্রাথমিক টেট-এর তথ্য ফাঁস হয়নি, বিভ্রান্তি কাটিয়ে জানালো পর্ষদ

নতুন জালিয়াতির বিরুদ্ধে কড়া রাজ্যের শিক্ষা দফতর। প্রাথমিক টেট-এর (Primary TET) তথ্য ফাঁস হওয়া নিয়ে নতুন করে বিভ্রান্তি...

ট্রাম্পের ছোঁয়া পলকাটা হিরেতে! মোদির গুজরাটেই বেকার অন্তত ১ লক্ষ শ্রমিক

বন্ধুত্বের বাহানায় বিপুল ক্ষতির মুখে গোটা দেশকে ঠেলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্পের বসানো শুল্কের...

ভয় পেয়েই কুকথা শান্তনুর! ফাঁস মতুয়াদের নিয়ে নোংরা রাজনীতি

মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করতে মাঠে নেমেছিলেন খোদ নরেন্দ্র মোদি। ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে আধিপত্য কায়েমে বিজেপির নোংরা রাজনীতি দীর্ঘদিনের। ঠাকুরবাড়ির...

নীরবে প্রস্তুতি শামির, দলীপ দিয়েই কামব্যাকের লড়াই

কয়েকদিন আগে এশিয়া কাপের(Asia Cup) দল ঘোষণা হয়েছে। সেখানে সুযোগ পাননি মহম্মদ সামি(Mohammed Shami)। ভারতীয় দলে তিনি ফিরবেন...
Exit mobile version