ভবানীপুরের ভোট থেকেই আগামী দিনে দিল্লিতে পরিবর্তনের ডাক অভিষেকের

ভবানীপুরের ভোট থেকে আগামী দিনে দিল্লিতে পরিবর্তনের সূত্রপাত হবে- রবিবার তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) সুপ্রিমো তথা প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Bandopadhyay) সমর্থনে প্রচার সভা থেকে এই ডাক দিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Bandyopadhyay)। তিনি বলেন, এটা ভারত বনাম বিজেপির (BJP) লড়াই। ভবানীপুর (Bhawanipur) থেকে এক লক্ষ ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেতাতে হবে। এই ভোটই আগামী দিনে কেন্দ্রে বিজেপির অপশাসনের পরিবর্তনের প্রথম ধাপ হবে।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দেশে অনেক সর্বভারতীয় দল আছে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস এমন সর্বভারতীয় দল যারা সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করে।

তৃণমূল সাংসদ জানান, ত্রিপুরা-অসমে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে দল। আগামী দিনে গোয়াতে কাজ শুরু হবে। ২০২৩-এ ত্রিপুরায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার গঠন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন অভিষেক। এদিনই ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বিপ্লব বলছেন তিনি পুলিশ মন্ত্রী তাই রাজ্যের পুলিশ তাঁর কথায় চলবে। আইনের বা আদালতের নির্দেশে নয়। এই কথায় তীব্র বিরোধিতা করে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বলেন, ত্রিপুরায় গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে সেই অপশাসন থেকে তৃণমূলই ত্রিপুরাকে উদ্ধার করবে।

অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে আটকাতে ত্রিপুরায় হঠাৎ করেই 144 ধারা জারি করেছে বিপ্লব দেবের সরকার। এমনকী, সেখানে দুর্গাপুজো-কালীপুজোতেও 144 ধারা জারি থাকবে। এই সিদ্ধান্তকে তীব্র কটাক্ষ করেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “বিশ্বের সব থেকে বড় রাজনৈতিক দল না কি! তাহলে এত ভয় কেন? আমাকে আটকাতে ত্রিপুরায় 144 ধারা জারি করতে হল কেন?” তাঁর ঘোষণা, যেদিন ত্রিপুরায় 144 ধারা তুলবে, 24 ঘণ্টার মধ্যে সেখানে যাবেন।

রোমে বিশ্ব শান্তি বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যেতে বাধা দিয়েছে বিদেশমন্ত্রক। অভিষেক বলেন, কালীঘাটের টালির চালের ঘরে থাকা, হাওয়াই চটি পরা একজন মহিলা আন্তর্জাতিক মঞ্চে ডাক পেয়েছেন বলে হিংসায় জ্বলে যাচ্ছে বিজেপি। তিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে গিয়ে অন্য নেতাদের সঙ্গে বক্তৃতা দেবেন, এটা সহ্য করতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার। সেই কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আটকানো হল। এ প্রসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নরেন্দ্র মোদিকে বিদেশ যেতে আটকে ছিল কংগ্রেস। তাদের যে পরিণতি হয়েছে, আজকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মোদি আটকাচ্ছেন, তাঁরও একই পরিণত হবে।

তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে হয়রানির অভিযোগ তুলে অভিষেক বলেন, চাপ সৃষ্টি করতেই এসব করা হচ্ছে। “আমাকে ইডি পাঁচটা নোটিশ দিয়েছে। ৫০০ টা নোটিশ পাঠালেও মেরুদণ্ড বিক্রি করব না।”

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী সততার বড়াই করেন। অথচ কাগজে মুড়িয়ে যাঁদের নিতে দেখা গেল, তাঁরাই দিল্লিতে গিয়ে তাঁর পাশে বসে ছবি তোলে। বিজেপিকে ঠুকে অভিষেক বলেন, যিনি গরুর দুধে সোনা খুঁজতেন দেন তিনি এখন টাটা বাই বাই। এখন নতুন আরেকজন এসে যাত্রা করছেন। ভারতীয় জনতা পার্টি নয়, বিজেপি এখন ভারতীয় যাত্রা পার্টি।

নোট বন্দি করে মানুষের হয়রানি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। জিএসটির ফলে ছোট ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে বলেন অভিষেক।

বাংলা প্রমাণ করে দিয়েছে তারা নিজের মেয়েকে চায়। এবার ভবানীপুরকে প্রমাণ করতে হবে তারা নিজের মেয়েকে চায়- বার্তা অভিষেকের। ইভিএম-এ একনম্বরে বোতাম টিপে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জয়ী করে দু’নম্বরিদের তাড়ানোর ডাক দেন তিনি।

অভিষেকের বক্তব্যের শেষের দিকেই মঞ্চে উপস্থিত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একজন সাধারণ তৃণমূল নেতার মতোই স্লোগান দিয়ে নেত্রীকে স্বাগত জানান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। অভিষেকের বার্তায় উজ্জীবিত ভবানীপুরের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। বিশেষ করে যুব তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।

আরও পড়ুন- এবার দিল্লি সফরে নব নিযুক্ত বিজেপি রাজ্য সভাপতি, নড্ডার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক advt 19

 

Previous articleটানা ২২ দিন ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ বাংলাদেশে, রফতানি নিয়ে অনিশ্চয়তা
Next article‘’পুজোয় দিদির উপহার”, রাজ্যের অভাবী মহিলাদের শাড়ি দেবেন মুখ্যমন্ত্রী