৭৭ থেকেই ২১ হাজার! ভবানীপুরে মমতার রেকর্ড মার্জিনে চমক ৬৩, ৭০, ৭৪ থেকেও

ভবানীপুরের উপনির্বাচনে প্রত্যাশা মতোই রেকর্ড মার্জিনে জিতেছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়ের। তবে মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রীর জয় নিয়ে তৃণমূল শিবির নিশ্চিত থাকলেও
জয়ের ব্যবধান বাড়ানোই ছিল চ্যালেঞ্জ। সেইসঙ্গে চ্যালেঞ্জ ছিল ট্র্যাডিশনালি পিছিয়ে থাকা ওয়ার্ডগুলিতে লিড পাওয়া নিয়ে। এবার সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে শাসক দলের। উচ্ছসিত দলনেত্রীও।

কলকাতা পুরসভার মোট আটটি ওয়ার্ড নিয়ে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রেটি গঠিত। এই কেন্দ্র রয়েছে ৬৩, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৪, ৭৭ এবং ৮২ নম্বর ওয়ার্ডগুলি। যার মধ্যে৭০ ও ৭৪ নম্বর ওয়ার্ড দুটি থেকে সাম্প্রতিক অতীতে লিড পায়নি তৃণমূল। একুশের বিধানসভা ভোটেও বড় ব্যবধানে তৃণমূল প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ২৮ হাজারের বেশি ভোটে জিতলেও, ৭০ ও ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের আশীর্বাদ পাননি তিনি। কিন্তু উপনির্বাচনে ৫৮, ৮৩৫ ভোটে জেতা মুখ্যমন্ত্রীকে লিড দিয়েছে এই দুই ওয়ার্ডও।

আরও পড়ুন- লখিমপুর যাওয়ার পথে আটক অখিলেশ, সোমবার সকালে ছাড়া পেলেন প্রিয়াঙ্কা

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ হাজার ৮০০ এবং ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় ৫ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। একুশের বিধানসভা ভোটে অবশ্য পিছিয়ে হাজার মার্জিন কমে। তৃণমূল ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে ২ হাজার ৯২ এবং ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৫৩৭ ভোটে পিছিয়ে ছিল। কিন্তু মাত্র সাড়ে চার মাসের মধ্যে সেই পিছিয়ে থাকা মার্জিন কভার করে এবার লিড পেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অবাঙালি অধ্যুষিত ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে ২০১৫ সালের শেষ পুরভোটে বিজেপির টিকিটে জিতেছিলেন অসীম বসু। পরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। অসীম অবশ্য আদ্যোপান্ত কংগ্রেস পরিবার ও কংগ্রেসি ঘরানার নেতা। ২০১৫ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় পুরভোটে বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু তিনি তৃণমূলে এলেও ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটারদের সঙ্গে আনতে পারেননি। গত ৬ বছর এই ওয়ার্ড থেকে লিড ছিল না শাসক দলের। কিন্তু এবার এই ওয়ার্ড নিরাশ করেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান ১,৫৫৬ ভোট। ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্ব সামলেছেন দক্ষিণ কলকাতার জেলা সভাপতি তথা রাসবিহারীর বিধায়ক দেবাশিস কুমার।

অন্যদিকে, ৭৪ নম্বর ওয়ার্ড নিয়েও চিন্তায় রেখেছিল শাসক শিবিরকে। এই ওয়ার্ডের পুরমাতা তৃণমূলের দেবলীনা বিশ্বাস। কিন্তু উনিশের লোকসভা ও একুশের বিধানসভার ওয়ার্ড থেকে পিছিয়ে পড়ে তৃণমূল। তবে উপনির্বাচনে সেই ৭৪ নম্বর ওয়ার্ড দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করলো ঘরের মেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মুখ্যমন্ত্রী লিড পেলেন ৪,৯৭৯ ভোটে। এই ওয়ার্ডের দায়িত্বে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা নেত্রীর বিশ্বস্ত সৈনিক ফিরহাদ হাকিম।

রেকর্ড মার্জিনের লক্ষ্যে ঝাঁপানো তৃণমূলকে স্বস্তি দিয়েছে
৬৩ নম্বর ওয়ার্ডও। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র ৪১৩ ভোটের ব্যবধানে এখান জয় পেয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু এবার তৃণমূল নেত্রী জিতেছেন ২,৩৬৬ ভোটের ব্যবধানে। এবার এই ওয়ার্ডের দায়িত্বে ছিলেন বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।

তবে বিরোধী দলগুলির সঙ্গে সবচেয়ে বেশি ব্যবধান বাড়িয়ে দিয়েছে ৭৭ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে প্রত্যাশামতোই “সব ভোট তৃণমূলে”! ৭৭ নং ওয়ার্ড থেকে মুখ্যমন্ত্রী ২১ হাজার ৬৭৯ ভোটে লিড পেয়েছেন। একুশ সালের ভোটেও একই চিত্র দেখা গিয়েছিল। এখানেও দায়িত্বে ছিলেন ফিরহাদ হাকিম। আর ফিরহাদ হাকিমের নিজের এলাকা ৮২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ১২ হাজারের বেশি ভোটে লিড পেয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।

advt 19

 

 

Previous articleED সারদা মামলায় স্থায়ী জামিন কুণালের
Next articleনুসরতের ‘জয় কালী কলকাত্তেওয়ালি’ লুক এল প্রকাশ্যে