Friday, August 22, 2025

কাজের অবসরে নিজেই দেবীমূর্তি গড়ে মায়ের পুজো করেন গোপাল

Date:

Share post:

পুজো করতে ভালো লাগে। তাই কাজের ফাঁকে দেবী মূর্তি তৈরি করে তিন বছর ধরে পূজো করে আসছেন বছর একুশের গোপাল ভৌমিক। মালদহ শহরের গয়েশপুর বিদ্যাসাগর পল্লীর বাসিন্দা গোপাল। ইটের দেওয়াল তোলা একচালা বাড়িতে পেশায় শ্রমিক বাবা, মা ও ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন। সংসারের হাল ধরতে গোপালবাবু এখন একটি ঔষধের দোকানের কর্মী। দিনভর কাজ। তাই সময় তেমন নেই। রাত জেগে মায়ের চিন্ময়ী রূপ তৈরির ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে। হাতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকি । তাই গভীর রাত জেগে মাটির প্রলেপ দেওয়া চলছে। তারপর রং করা থেকে সাজ পড়ানো, বহু কাজ বাকি রয়েছে। একা হতে প্রায় সমস্ত কিছুই তাকে সামলাতে হচ্ছে। পুজোর পাঁচদিন নিজের হাতে মায়ের পুজো করেন গোপাল। দশমীতে মহানন্দা নদীর ঘাটে দেবী মূর্তি বিসর্জন দিয়ে আগামী বছরের প্রহর গোনা শুরু হয়ে যায়।

 

প্রথম দিকে সমস্ত কিছু নিজেকেই করত হত। তবে এখন পরিবার থেকে প্রতিবেশী সকলেই গোপালের উৎসাহ দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। প্রতিমা তৈরির সময় প্রতিবেশী কাকু, জেঠিমারা ভুলত্রুটি ধরিয়ে দেন। আবার পুজোর খরচ জোগাড় করতেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। গোপালকে তার পুজোয় উৎসাহ দিতে দায়িত্বভার নিজেই নিয়েছেন রীতা স্বর্ণকার। এর আগে কখনো প্রতিমার সাজ তৈরি করেননি তিনি। বাজার থেকে জড়ি -চুমকি কিনে তৈরি করেছেন দেবী দুর্গার সাজ। রীতা স্বর্ণকার বলেন ওর পুজো আমাদের খুব ভালো লাগে। তিন বছর ধরে করে আসছে। খুব নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো করে। আমরা পুজোর পাঁচদিন এই পুজোয় মেতে উঠি। এবার আমি নিজে থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। এতে আমার খুব ভালো লাগছে।

 

পঞ্চমীতে ঘট বসিয়ে নারায়ণ পুজো করে নিজের হাতে গড়া প্রতিমা পূজার সূচনা করেন গোপাল। আলাদা করে কলাবৌ না করে মাটি দিয়ে তৈরি করেন। সেখানেই হয় কলাবৌয়ের পুজো। অষ্টমীতে পুষ্পাঞ্জলি দিতে আসেন প্রতিবেশীরা। নবমীতে পরিবার ও প্রতিবেশীদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। দশমীতে সিঁদুর খেলে মূর্তি বিসর্জন হয় মহানন্দা ঘাটে। গোপালের কথায় আমার পুজো করতে ভালো লাগে তাই করি। আমি সমস্ত নিয়ম জানিনা। তাই মন্ত্রের বই কিনেছি। বই দেখে পুজো করি। হয়তো ঢাকের কাঠি পড়েন না বা পুরোহিত ধুনুচি বা আরতি করেননা। গোপাল নিজের উদ্যোগে যেটুকু করে তা খুবই নিষ্ঠার সাথে। তাইতো পাড়া-প্রতিবেশীরা এখন সকলেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এই পুজোয়। সকলেই চাইছেন গোপাল পূজার আরো শ্রী বৃদ্ধি হোক। প্রতিবেশী বিপুল চৌধুরী বলেন গোপাল খুব আন্তরিক ভাবে পুজো করে। এটাই ভালো লাগে। আমরা যেটুকু পারি সাহায্য করি। খুব নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো দেয়, তাই আমাদের খুব ভালো লাগে।

advt 19

 

spot_img

Related articles

সোনা জয়ী অভিনবকে শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর

এশিয়ান শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপ জুনিয়র (Asian Shooting Championship) এয়ার রাইফেল বিভাগে বাংলার অভিনব সাউয়ের (Abhinaba Shaw)। তাঁর এই সাফল্যই...

পুজোর আগে রাজ্য পুলিশের শীর্ষস্তরে রদবদল! পরিবর্তন হল ৬ জেলার এসপি-ডিসি

পুজোর মুখে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ পদে বড়সড় রদবদল করল নবান্ন। বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, একাধিক জেলায় পুলিশ...

‘নোরা ফাতেহি’ হতে হবে! স্ত্রীকে জোর করে শরীরচর্চা করিয়ে গর্ভপাত শিক্ষকের

যোগীরাজ্যে স্কুলশিক্ষকের ফ্যান্টাসির চূড়ান্ত নমুনা! স্ত্রীকে হতে হবে রোগা ছিপছিপে চেহারার। আর সেই চেহারা বানাতে গিয়েই স্বামীর নির্মম...

গান-কবিতায় সংসদে সরব তৃণমূল! বয়কট রাজ্যসভার চা-চক্র

বৃহস্পতিবার অধিবেশনের শেষ দিনে সংসদ উত্তাল হল বাংলা গান, কবিতা, বিক্ষোভ, প্রতিবাদে। সংসদের অন্দরে যেমন কালাকানুন, এসআইআর, ভাষাসন্ত্রাসের...