Thursday, December 4, 2025

মহালয়ার সঙ্গে দুর্গাপুজোর কোনও সম্পর্ক নেই

Date:

Share post:

রাত পোহালেই মহালয়া। হাজারো প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক টানাপোড়েন, পেট্রোল-ডিজেলের দামবৃদ্ধির মতো হাজারো সমস্যার মধ্যেও মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় ”যা দেবী সর্বভূতেষু বিষ্ণুমায়েতি শব্দিতা ।নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ’ শোনার অপেক্ষা। মহালয়ার ভোরের এই চণ্ডীপাঠ যেন বাঙালির পুজোর ঘণ্টা। তারপরেই শুরু পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে দেবীপক্ষের সূচনা। মহালয়া হল এমন একটি দিন যেদিন পূর্বপুরুষদের বিদায় জানানোর পালা। পিতৃপক্ষের শেষে অমাবস্যা তিথিতে মহালয়া পালন করা হয়। তবে জানেন কী মহালয়ের সঙ্গে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর কোনও সম্পর্ক নেই। ভাবতে একটু অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। আসুন জেনে নিই মহালয়ার আসল কারণ-

আরও পড়ুন:তরুণ প্রজন্মের ভাবনায় ‘মহিষাসুরমর্দ্দিনী’

হিন্দু শাস্ত্র মতে মহালয়ার সঙ্গে দুর্গাপুজোর কোনও সম্পর্কই নেই। মহালয়া কথাটি এসেছে ‘মহত্‍ আলয়’ থেকে। হিন্দু ধর্মে মনে করা হয় যে পিতৃপুরুষেরা এই সময়ে পরলোক থেকে ইহলোকে আসেন জল ও পিণ্ডলাভের আশায়। প্রয়াত পিতৃপুরুষদের জল-পিণ্ড প্রদান করে তাঁদের ‘তৃপ্ত’ করা হয়। তাই মহালয়াকে দূর্গাপুজোর অঙ্গ হিসেবে ধরা ঠিক নয়।তবে হ্যাঁ মহালয়ার সঙ্গে মহাভারতের নিবিড় যোগ রয়েছে। কীভাবে জানেন? মৃত্যুর পর কর্ণের আত্মা পরলোকে গমন করলে তাঁকে খাদ্য হিসেবে স্বর্ণ ও রত্ন দেওয়া হয়েছিলো। কর্ণ এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে তাঁকে বলা হয়, তিনি সারা জীবন স্বর্ণ ও রত্ন দান করেছেন, কিন্তু প্রয়াত পিতৃগণের উদ্দেশ্যে কখনও খাদ্য বা পানীয় দান করেননি। তাই স্বর্গে খাদ্য হিসেবে তাঁকে সোনাই দেওয়া হয়েছে। বিমর্ষ হয়ে কর্ণ বলেন, তাঁর পিতৃপুরুষ কারা সেটা তো তিনি মৃত্যুর মাত্র একদিন আগেই জানতে পেরেছেন। তার দোষ কোথায়! যমরাজ তখন বোঝেন, সত্যিই তো, এতে কর্ণের কোনো দোষ নেই। এই কারণে কর্ণকে পক্ষকালের জন্য ফের মর্ত্যে ফিরে পিতৃলোকের উদ্দেশ্যে অন্ন ও জল প্রদান করার অনুমতি দেওয়া হয়! এই পক্ষই পিতৃপক্ষ নামে পরিচিত হয়। আর সেই থেকেই হিন্দুদের মধ্যে তর্পণের প্রথা চালু হয়।

কিন্তু বাঙালীদের মধ্যে অনেকেই জানেন না মহালয়ার সঙ্গে মহাভারতের সম্পর্ক। উল্টে তারা এটাই বোঝেন মহালয়া মানেই দূর্গাপুজোর আগমন বার্তা। তাই ‘বাজলো তোমার আলোর বেণু। মাতলো যে ভুবন’-গানটি মহালয়ার দিন বিশেষভাবেই গাওয়া হয়। এমনকী আজকাল আবার ‘শুভ মহালয়া’ও বলে থাকেন। তবে হিন্দু শাস্ত্র মতে, শুভ মহালয়া বলাটা কখনোই যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ মহালয়ায় পিতৃপুরুষদের বিদায় জানিয়ে পিতৃতর্পণ করা হয়। যার মধ্যে বিষাদ বা বেদনা থাকে। তা কখনওই শুভ হতে পারে না। তাই ‘শুভ মহালয়া’ বলাটা একপ্রকার ভুল বলা চলে।

শাস্ত্র মতে মহালয়ার দিনে কোনও শুভ অনুষ্ঠানই করা উচিত নয়। তা সে বিয়ের দিনক্ষণ বা কেনাকাটা হোক বা নতুন ব্যবসা শুরু করা। কোনটাই মহালয়ার দিন শুরু করা শুভ নয়। উল্টে মহালয়ার দিন কোনও আমিষ খাবার না খাওয়াই ভাল। এমনকী পূর্বপুরুষের ছবির সামনেও আমিষ খাবার দেওয়া উচিত নয়। তবে এই দিনে দান বা দক্ষিণা দেওয়া ভালো।

advt 19

https://youtu.be/qsq-8b_Y7JA`

spot_img

Related articles

আজ ডিসেম্বরের শীতলতম দিন! কলকাতার তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির ঘরে

শীতের কামড় কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গে। সাত বৃহস্পতির সকালে মহানগরীর তাপমাত্রা (Kolkata Temperature) নামল ১৫ ডিগ্রিতে। এখনও পর্যন্ত আজকের দিনটিকেই...

জ্বলছে এটিএম, সাতসকালে অগ্নিকাণ্ড হাওড়ায়!

বৃহস্পতির সকালে ঘুম ভাঙতেই চোখের সামনে জ্বলন্ত এটিএম (fire breaks out in ATM) দেখে আতঙ্কিত হাওড়া জেলার (Howrah...

বচ্চন পরিবারকে বয়কটের দাবি মায়ানগরীর ফটোগ্রাফারদের!

ছবি শিকারীদের অপমান, যোগ্য জবাব পেলেন বলিউডের বর্ষীয়ান 'অ্যাংরি উইম্যান' জয়া বচ্চন (Jaya Bachchan)। এবার তিনিসহ গোটা বছর...

আজ বহরমপুরে মুখ্যমন্ত্রীর সভা, তৃণমূল সুপ্রিমোর বার্তা শুনতে রেকর্ড জমায়েতের সম্ভাবনা

জেলা সফরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রাজ্যে এসআইআর (SIR) পরিস্থিতি ও বিজেপির ক্রমাগত উস্কানির রাজনীতির মধ্যে...