Monday, December 22, 2025

মাত্র কিছুক্ষণের অপেক্ষা, রাজপাঠ নিয়ে হাজির হতে চলেছে দেব প্রযোজিত ‘হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী’

Date:

Share post:

এ ছবি তৈরির সময় থেকেই ঘটনার ঘনঘটা। অবিশ্যি রাজা-রানিদের জীবনে এমনটা হয়েই থাকে। প্যান্ডেমিকের থাবার কথা ছেড়েই দিলাম কিন্তু গানের একটা শব্দ নিয়ে প্রযোজক-পরিচালক এমন দ্বন্দ্ব যে ছবি মুক্তি ঘোষণার দিনও পরিচালক অনুপস্থিত। প্রযোজকও তাঁর কথা একবার মুখে আনলেন না! এর ওপর পরিস্থিতির বিচারে বড়পর্দার জন্য তৈরি ছবি যে ছোটপর্দায় মুক্তি পাচ্ছে এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ কমবেশি সব কলাকুশলীর মধ্যেই। কিন্তু মুখে কুলুপ বেশির ভাগেরই। অনেকে আবার বোঝার চেষ্টা করছেন প্রযোজকের সীমাবদ্ধতার কথাও। তবু ছবি নিয়ে দীর্ঘ নীরবতা ও অনিশ্চয়তার পর যে  শেষমেশ একটা সিদ্ধান্তে আসা গেল এবং উৎসবের মরশুমে তা আমজনতার সামনে হাজির হল তাতেই অনেকে খুশি। তাঁদের সোজাসাপটা বক্তব্য, হবুচন্দ্র হলেন গিয়ে রাজা কিন্তু রাজার রাজা হলেন ছবির প্রোডিউসার! সুতরাং তাঁর সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বাধ্য সকলে!

আরও পড়ুন:চতুর্থীর সকালেই বঙ্গবাসীকে দুর্গাপুজোর শুভেচ্ছাবার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

সিদ্ধান্ত তো নয়, এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। অভিনেতা দেবের নিজস্ব প্রোডাকশন হাউস ‘দেব এন্টারটেনমেন্ট ভেঞ্চারস প্রাইভেট লিমিটেড’-এর ব্যানারে  ২০১৯-এ কাজ শুরু হয়েছিল ‘হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী’র। পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায়। এই প্রথম নয়, এর আগেও অনিকেত ‘কবীর’ ও ‘হইচই আনলিমিটেড’ পরিচালনা করেছেন দেবের প্রোডাকশন হাউসে। ‘হবুচন্দ্র’ তিন নম্বর ছবি যখন ধরেই নেওয়া যায় শুরুর সময়ে প্রযোজকের বেশ আস্থাভাজনই ছিলেন পরিচালক। সে যাই হোক, শুরু দেখে শেষ বোঝা যাবেই এ মাথার দিব্যি সবসময় দেওয়া থাকে না। তবে পুজোয় হল-এ দেবের দুই অবতারের লড়াই দেখতে মুখিয়ে ছিল দর্শক, এ কথা দিব্যি গেলে বলা যায়। প্রযোজক দেবের ‘হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী’ বনাম অভিনেতা দেবের ‘গোলন্দাজ’। লড়াইটা লাগলই না। তাই অনেকে হতাশ। আসলে প্রযোজক দেব প্রথম থেকেই প্রথাগত পথে হাঁটেন না। যে মেনস্ট্রিম ছবির হাত ধরে তাঁর দেব হয়ে ওঠা সেই সহজ ফর্মুলায় অঙ্ক না কষে তিনি যে ব্যতিক্রমী ও ঝুঁকির পথে চলেন, এ দেবের অতি বড় শত্রুও বলবে। হবু চন্দ্র’তেও সেই ঝুঁকি ও এক্সপেরিমেন্টের ঝোঁকই ছিল। বিষয়, প্রেক্ষাপট, বাজেট, অভিনেতা-অভিনেত্রী কোনওদিকেই কসুর করেননি দেব। এ ছিল তাঁর স্বপ্নের ও অতি যত্নের প্রোজেক্ট। তাই প্রথা ভেঙে ছবির রিলিজ জলসা মুভিজ চ্যানেলে করার সিদ্ধান্ততেও একটা সুগভীর ভাবনা কাজ করেছে নিশ্চিত। যদিও মুখে বলেছেন কতগুলি সাদামাঠা কথা। ছবিটি বড়পর্দায় আনতে না পারার আক্ষেপ সহ জানিয়েছেন রূপকথা নির্ভর এই ছবির একটা বড় অংশের দর্শক ছোটরা। কোভিড কালে তাদের সুরক্ষার কথা ভেবেও এই সিদ্ধান্ত! যাতে তারা ঘরে বসেই ছবিটি উপভোগ করতে পারে। ছবি মুক্তির দিনটি একই থাকছে, ১০ অক্টোবর। সময় দুপুর ২ টো। এরপর সাতদিন ধরে বিভিন্ন সময়ে ওই চ্যানেলে ছবিটি সম্প্রচারিত হবে। একইসঙ্গে ডিজনি প্লাস হটস্টারেও থাকবে ছবিটি।

কাজেই আগামিকাল দর্শক নিজের নিজের কমফোর্ট জোন-এ টাটকা ও হেভিওয়েট সমৃদ্ধ ছবিটি দেখার সুযোগ পাছেন। তার আগে তাই ছবিটির আরও কিছু তথ্য আরেকবার ঝালিয়ে নেওয়া যাক। দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের ‘সরকার মশাইয়ের থলে’ ও ‘হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী’ এই দুই গল্পের  সম্মিলিত আধারে তৈরি হয়েছে হবু চন্দ্র’ ছবি। অন্যতম আকর্ষণীয় তথ্য, ছবির শুট হয়েছে রামোজি ফিল্ম সিটির ‘বাহুবলী’র সেটে।  হবু রাজার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, গবু মন্ত্রীর চরিত্রে খরাজ মুখোপাধ্যায়। আর রানি কুসুমকলির চরিত্রে আছেন অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও বৃদ্ধমন্ত্রীর চরিত্রে শুভাশিস মুখার্জি এবং গুরুদেবের চরিত্রে আছেন বরুণ চন্দ। ছবির কাস্ট প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে দেবের গলায় উপচে পড়ছিল প্রশংসা। কেন শাশ্বতদা আর অর্পিতাদি আর কেন আমি বা রুক্মিণী নই, এ ছবি দেখতে বসেই বুঝবেন দর্শক। খরাজদা ও শুভাশিসদাও অনবদ্য। প্রত্যেকে অসাধারণ কাজ করেছেন এ ছবিতে। ছবির জন্য গান তৈরি করেছেন কবীর সুমন। আবহ সংগীতের দায়িত্বে স্যাভি। এ ছবির সংগীতের অংশ হতে পেরে কবীর সুমন স্বয়ং খুবই আনন্দিত ছিলেন। কারণ তাঁর মতে ছবিটি সব অর্থেই সংরক্ষণ করার মতো একটি। গান কম্পোজ করতে করতে তিনি নিজেই নস্টালজিক হয়ে পড়ছিলেন সেও জানিয়েছেন একাধিকবার। একই সুর দেবের গলাতেও, বলছিলেন, এ ছবি সকলকে তার ছেলেবেলার কথা মনে পড়াবে। বোম্বাগড়ের রাজা ও রাজ্যবাসী বড়ই সুখে ছিলেন বরাবর। প্রজারা তাদের রাজা ও মন্ত্রীর বড়ই ভক্ত ছিলেন। কোনও অভিযোগ ছিল না কোনও তরফেই। কিন্তু চন্দ্রগড়ের রাজকুমারী কুসুমকলিকে বিয়ের পর থেকেই সব পালটাতে থাকে। ধুমধাম আনন্দের মধ্যেই এক আগন্তুকের আবির্ভাব হয় বোম্বাগড়ে আর দ্রুত সব বদলে যায় সে আগন্তুকের আধিপত্যে। বলাই বাহুল্য সেই আগন্তুক আর কেউ নয়, গবুচন্দ্র নিজে, যিনি নিজের প্রভাবে এই বোম্বাগড়ের মন্ত্রী পদাধিকারী হন। এই আগন্তুকের আগমন গুজ্জর প্রদেশ থেকে! আর ইনি আসার পরেই রাজ্যে শুরু হয় গোলমাল, প্রজা অসন্তোষ, যাবতীয় অমঙ্গল! রূপকথার গল্পে অবধারিতভাবে এরপর এসেছে এমন কিছু ইঙ্গিত যা সমসাময়িক রাজনীতিকে মনে করাবে। মনে পড়াবে সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’র কথা। তবে ছোটদের কথা ভেবে রূপকথার আঙ্গিককেই অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে যে যার মতো করে মানে বের করে নিতেই পারে!

আপাতত আর কয়েকঘণ্টার অপেক্ষা। ছুটির দিনে সপরিবারে ‘হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী’ উপভোগ করতে হলে প্রস্তুত হয়ে যান। আপনাকে আনন্দ দিতে হাজির হবে রাজা-রানি-মন্ত্রী-পারিষদ-প্রজা সহ পুরো বোম্বাগড়।

advt 19

spot_img

Related articles

বেলডাঙায় ফ্লপ শো! ধর্মের চাদর সরে যেতেই জমায়েতে ফাটল হুমায়ুনের সভায়

বাবরি মসজিদ প্রতিষ্ঠার নামে বেলডাঙায় জমায়েত করে ৬ ডিসেম্বর তাক লাগানোর চেষ্টা করেছিলেন হুমায়ুন কবীর। ২২ ডিসেম্বর দলের...

১৬ বছরের দাম্পত্য জীবন ভাঙল নৃত্যশিল্পী শ্রীনন্দা শঙ্করের

বছর শেষে বিনোদন জগতে আবার বিচ্ছেদের খবর। নৃত্যশিল্পী তনুশ্রী শঙ্করের মেয়ে শ্রীনন্দা শঙ্করের (Srinanda Shangkar) দাম্পত্য জীবন ভাঙনের...

দিল্লিকাণ্ডের পর এবার বড়দিনে শহরজুড়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা লালবাজারের

বড়দিনের উৎসবকে কেন্দ্র করে এবারও বাড়তি নজরদারি পার্কস্ট্রিট (Park Street) এলাকায়। অন্যবারের তুলনায় যদিও এবার নিরাপত্তা আরও অনেকটাই...

৪৬টি প্রাণহানি, ‘খোকাবাবুদের আবদারে’ বৈধ নাম বাদের ষড়যন্ত্রের কমিশনের! BLA-এর চূড়ান্ত সতর্ক-সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ তৃণমূল সুপ্রিমোর

এসআইআর নিয়ে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার নেতাজি ইন্ডোরের...