গড়িয়াহাটের জোড়া খুনে পরিচিতরাই: প্রাথমিক তদন্তে মত পুলিশের

গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়া রোডের জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত পরিচিতরাই। লুঠের উদ্দেশ্যেই দুজনকে খুন করা হয়েছে বলে অনুমান তদন্তকারীদের। ঘটনায় পুলিশ ৩০২ (খুন), ৩৯৪ (লুঠের জন্য খুন) ও ৩৪ (ষড়যন্ত্র) নম্বর ধারায় মামলা রুজু করেছে। এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি৷

আরও পড়ুন-যৌন সম্পর্কে সম্মতি মানেই নারীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অধিকারে হস্তক্ষেপ নয়

গড়িয়াহাটের (Gariahat) অভিজাত এলাকা কাঁকুলিয়া রোডে নিজের বাড়িতে খুন হন সুবীর চাকী (Subir Chaki) ও তাঁর গাড়িচালক রবীন মণ্ডল (Rabin Mondol)। রবিবার রাতেই তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে সুবীর চাকী উচ্চশিক্ষিত এবং অত্যন্ত বিত্তশালী। খড়্গপুর আইআইটি (IIT) ও জোকা আইআইএম থেকে পাশ করে তিনি এক বেসরকারি সংস্থায় ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসাবে কাজ করতেন। চাকরি সূত্রে দীর্ঘ দিন মুম্বইয়ে ছিলেন।তাঁর মেয়ে বিবাহিত, থাকেন বেঙ্গালুরুতে (Bengaluru)। ছেলে লন্ডনে কর্মরত।

বিশাল সম্পত্তির মালিক ছিলেন সুবীর চাকী।কলকাতার একাধিক বিলাসবহুল আবাসনে তাঁর ফ্ল্যাট ছিল। কাঁকুলিয়া রোডের যে বাড়িতে সুবীর চাকী খুন হন সেই বাড়িটি বিক্রি করতে চেয়েছিলেন তিনি। ওই বাড়িতে সুবীর চাকী থাকতেন না। স্ত্রী, মা ও শাশুড়িকে নিয়ে তিনি থাকতেন নিউটাউনে (Newtown)।

ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন,

• রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ মার্সিডিজ নিয়ে চালক-সহ কাঁকুলিয়া রোডের বাড়িতে যান সুবীর চাকী।

• রবিবার বাড়ি বিক্রির বিষয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে গড়িয়াহাটের বাড়িতে গিয়েছিলেন সুবীর চাকী৷

• সুবীর চাকী এবং রবীন মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে খাবার খেয়েছিলেন।

• খাওয়ার দু’তিন ঘণ্টার মধ্যেই তাঁদের খুন করা হয়।

• রবিবার সন্ধে নাগাদ খুন হন সুবীর ও রবীন।

• মৃত দু’জনকেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করা হয়।

• সুবীরের পা ও গলায় গভীর ক্ষতচিহ্ন। রবীনের গলা, পা ও শরীরের পিছন দিকে ছিল একাধিক ক্ষতচিহ্ন।

• অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই মৃত্যু হয়।

গড়িয়াহাটের ওই বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ দেখে লালবাজারের গোয়েন্দাদের প্রাথমিক অনুমান, লুঠের উদ্দেশ্যেই খুন করা হয়েছে দু’জনকে। প্রশ্ন উঠছে, লুঠ করার জন্যই যদি খুন করা হয়, তা হলে গাড়িচালককে কেন খুন করা হল? গোয়েন্দাদের ধারণা, সুবীর চাকীর পরিচিত কেউই খুনের ঘটনায় জড়িত। আর চালক চিনতে পেরেছিলেন বলেই সম্ভবত তাঁকে খুন হতে হয়েছে। কর্পোরেট কর্তা সুবীরের খুনের পিছনে একাধিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা৷

আরও পড়ুন-উপত্যকায় অশান্তির ঘটনায় বেসুরো মন্তব্য মেঘালয়ের রাজ্যপালের, চাপে নর্থ ব্লক

গোয়েন্দা সূত্রে খবর, গত এক বছর ধরে ওই বাড়ি বিক্রির চেষ্টা করছিলেন সুবীর চাকী। অনেকে বাড়ি দেখেছে, কিন্তু চূড়ান্ত হয়নি বিক্রি ৷ কোনও বারই সুবীর নিজে বাড়ি দেখাতে যাননি। গাড়ির চালক রবীনই ক্রেতাদের নিয়ে গিয়ে বাড়ি দেখাতেন। এ বার কেন সুবীর নিজে সঙ্গে গেলেন, তাও ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের।

রবিবার নিউটাউন থেকে গড়িয়াহাটের বাড়িতে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে বাড়ি থেকে সুবীর চাকীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
কিন্তু তখন সুবীরের মোবাইল বন্ধ ছিল বলে পরিবার জানিয়েছে৷ অনেকক্ষণ সুবীর চাকীকে ফোনে না পেয়ে থানায় অভিযোগ জানানো হয় পরিবারের তরফে।

advt 19

 

Previous articleযৌন সম্পর্কে সম্মতি মানেই নারীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অধিকারে হস্তক্ষেপ নয়
Next articleটি-২০ বিশ্বকাপে নজির গড়লেন ক‍্যাম্ফার, নিলেন চার বলে চার উইকেট