বাংলার একুশের নির্বাচনে মোদি-অমিত শাহদের মুখে ঝামা ঘষে দিয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েছে তৃণমূল। তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার মমতার নেতৃত্বে ও অভিষেকের সেনাপতিত্বে ভারত জয়ের লক্ষ্যে ঝাঁপিয়েছে ঘাসফুল শিবির। ২০২৪-কে পাখির চোখ করে এগোলেও তার আগে বিজেপি শাসিত বেশকিছু রাজ্যের দিকে নজর দিয়েছে তৃণমূল। আর এই রাজ্যগুলিতে শুধু সংগঠন বিস্তার নয়, জয়ের জন্যই ময়দানে নেমেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
উত্তর-পূর্বের ত্রিপুরার (Tripura) পর এবার পশ্চিমের দ্বীপরাজ্য গোয়াতেও ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তৃণমূলের। ত্রিপুরার মতো গোয়াতেও মাটি কামড়ে পরে আছে তৃণমূল নেতৃত্ব। গোয়ায় কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলি থেকে একের পর এক নেতা-কর্মীরা ঘাসফুল শিবিরে যোগ দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, সমাজের বিশিষ্ট শ্রেণীর মানুষ থেকে ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, চলচ্চিত্র জগতের তারকা ও শিল্পপতিরাও গত কয়েক সপ্তাহ বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে গোয়ার মাটিতে তৃণমূলের ভিত শক্ত করেছেন।
এবার নিজেই গোয়ায় যাচ্ছেন তৃণমূল নিরী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২৮ অক্টোবর উত্তরবঙ্গ সফর সেরে সোজা দ্বীপরাজ্যে উড়ে যাবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সাগরপাড়ে সংগঠনকে মজবুত করতে সেখানে ৪দিন একাধিক কর্মসূচি পালন করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর ৩১ তারিখ ফিরবেন কলকাতায়। তার আগে আজ, শনিবার সকালে একটি লম্বা টুইট করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি গত ১০ বছরে গোয়ার মাটিতে বিজেপির ব্যর্থতা ও বিভাজনের রাজনীতির কথা তুলে ধরে অবিজেপি জোটের আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিন টুইটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, “আগামী ২৮ অক্টোবর গোয়া সফরে যাচ্ছি। বিজেপিকে রুখতে প্রত্যেক দল, ব্যক্তি, সংস্থাকে এক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা সবাই একসঙ্গে গোয়ায় নতুন সরকার তৈরি করব। গত ১০ বছর ধরে গোয়ার মানুষ অনেক কষ্ট সহ্য করেছে। নতুন সরকার গোয়ার মানুষের মন বুঝে উন্নয়নের লক্ষ্যেই কাজ করবে। আমরা একসঙ্গে নতুন সরকার গঠনের মাধ্যমে নতুন ভোরের সূচনা করব, যা গোয়ার জনগণের সরকার হবে এবং তাদের সমস্ত দাবি পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।”
Our leader Gandhi Henriques interacted with the fruit vendors of Vasco.
He expressed their concerns about the lack of effort and help that the fruit vendors received from the @BJP4Goa Government.
Goa needs a New Dawn! #GoenchiNaviSakal pic.twitter.com/p1FRj7nZ41
— AITC Goa (@AITC4Goa) October 22, 2021
দ্বীপরাজ্যে নিজেদের সংগঠনকে আরও মজবুত করতে শক্ত কোমর বেঁধে নেমেছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে ছয়লাপ তৃণমূলের হোডিং, ব্যানারে। রাস্তায় রাস্তায় বিশাল বিশাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাটআউটও। বিজয়া দশমীতে রাজধানী পানাজিতে ঘাসফুল শিবিরের কার্যালয়ও খুলে গিয়েছে। প্রাক্তন আপ এবং প্রাক্তন কংগ্রেস মুখপাত্র স্বাতী কেরকার এবং জয়েশ শেঠ গোয়ানকার যোগ দেন তৃণমূলে। জয়েশ শেঠ গোয়ানকারও প্রাক্তন আপ নেতা ছিলেন। বিজেপি ছেড়েও তৃণমূলে যোগের হিড়িক লেগেছে। বিজেপির মহিলা মোর্চার এক্সিকিউটিভ কমিটির প্রাক্তন সদস্য দীক্ষা তালবেনকারও ঘাসফুল শিবিরের পতাকা হাতে নিয়েছেন। তারও আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর কলকাতায় এসে তৃণমূলে যোগ দেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফ্যালেইরো। তাঁকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সঙ্গে থাকার বার্তা দিয়েছেন সমাজকর্মী, অভিনেত্রী নাফিসা আলি। সঙ্গীত শিল্পী লাকি আলিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গোয়ায় নতুন ভোরের সূর্যোদয়ের স্বপ্ন দেখছেন। সবমিলিয়ে হেমন্তের গোয়ায় ববসন্তের আমেজ ঘাসফুল শিবিরে।