সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ রাজনৈতিক মহল

বাংলার রাজনীতি জগতে মহীরুহ পতন হল। প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়। শোকে ভাষাহারা রাজনীতিকরা। দল-মত নির্বিশেষে সকলেই ব্যক্ত করলেন শোকের স্মৃতি -কথা :

 

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

সুব্রতাদার মৃত্যু আমার কাছে বড় ধাক্কা। দেওয়ালির দিনে এমন অন্ধকার নেমে আসবে, ভাবতে পারিনি। একজন প্রাণবন্ত মানুষ। হাসি-ঠাট্টা, গল্প-গুজবে মাতিয়ে রাখতেন। পার্টি অন্ত প্রাণ। ওনার মৃতদেহ দেখার শক্তি আমার নেই।

 

দিলীপ ঘোষ

প্রবীণ জননেতা। সফল রাজনীতিবিদ। প্রাক্তন মেয়র। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মাননীয় পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আকস্মিক প্রয়াণে আমি গভীরভাবে শোকাহত। বাংলার একজন সফল রাজনীতিবিদ। নিশ্চিতভাবে তাঁর অভাব সকলেই বুঝবেন।

 

সুকান্ত মজুমদার

একজন বর্ণময় রাজনৈতিক চরিত্র। মাত্র ২৬ বছর বয়সে প্রথমবার মন্ত্রী। ভাবাই যায় না! একটা ঈর্ষণীয় রাজনৈতিক কেরিয়ার। এক মহীরুহের পতন হল।

 

বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য

ব্যক্তিগত বন্ধুত্বকে মূল্য দিতেন রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে রেখে। মেয়র হিসাবে ওনার কাজ দেখেছি। যেটা ঠিক মনে করতেন, সেটা করে ছাড়তেন। যে দায়িত্ব দেওয়া হতো তা সুচারুভাবে পালন করতেন। আমি বন্ধু বিয়োগের ব্যথা অনুভব করছি।

 

প্রদীপ ভট্টাচার্য

আজকের দিনে রাজনীতি সরিয়ে রেখে সামাজিক বন্ধুত্ব খুবই কম দেখা যায়। সুব্রত মুখোপাধ্যায় এখানেই আলাদা। আমার মেয়ের বিয়েতে এসেছিলেন। টানা দু’ঘন্টা ছিলেন। রাজনৈতিক মতপার্থক্য দূরে সরিয়ে তিনি চিরজীবন বন্ধুত্বের মূল্য দিয়ে এসেছিলেন। এখানেই তিনি অন্যরকম ছিলেন।

 

ফিরহাদ হাকিম

সুব্রতদার মৃত্যু আমাদের কাছে বড় ক্ষতি। হাতে ধরে আমায় কাজ শিখিয়েছেন । ওনার কাছ থেকেই তো অনেক কিছু শিখেছি। এসএসকেএমে ভর্তি হওয়ার পর প্রায় রোজই রাতে দেখা করে যেতাম। আমি আজ কার্যত ভাষাহারা।

 

সৌগত রায়

একজন সফল এবং সক্রিয় রাজনীতিবিদ। কত কম বয়সে মন্ত্রী হয়েছেন! তারপর মেয়র, তারপর টানা মন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার একজন সফল ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ চলে গেলেন। আমাদের প্রজন্মের প্রায় সকলেই চলে গেলেন। এক বিরাট শূন্যতা তৈরি হচ্ছে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে।

 

শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় 

দু’বছরের ছোট। কিন্তু আমায় তুই তোকারি করার কেউ রইল না। আমরা কত খারাপ-ভাল দিন কাটিয়েছি। দারুন উইটি ছিল। বন্ধু হারানোর ব্যথা বুঝিয়ে বলা যায় না।

 

রবীন দেব

প্রিয়-সুব্রত জুটি বিখ্যাত। বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখানোর জন্য তিনি গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে বিরাট কর্মযজ্ঞ দেখার পর বদলে গেলেন। বললেন সাহায্য করতে। জ্যোতিবাবুর স্মরণসভাতেও এসেছিলেন। আবার দেখেছি, এজেসি বোস ফ্লাইওভার উদ্বোধনের সময় তিনি মেয়র। বুদ্ধবাবু তাঁর জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। এখানেই সুব্রত মুখোপাধ্যায় ব্যতিক্রমী।

 

শতাব্দী রায়

সত্যি বলছি এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। আমার গাড়ির চালকের মুখে প্রথম যখন শুনলাম, মনে হল নিশ্চয় ভুল খবর। ক’দিন আগেও অভিষেকের বাড়িতে একসঙ্গে বসে কত গল্প হল। বললেন দাঁতের ট্রিটমেন্ট চলছে। খেতে অসুবিধা হচ্ছে। ভাবতে পারছি না মানুষটা নেই।

 

বিমান বসু

আদর্শের দিক থেকে আমরা ভিন্ন মেরুর। কিন্তু সুব্রত মুখোপাধ্যায় একেবারেই ভিন্ন ঘরানার নেতা ছিলেন। সুব্রত মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। ওঁর যোগাযোগ রাখার ধরন ছিল্ একেবারেই অন্যরকমের।

 

 

শিশির অধিকারী

কী বলব। বলার কোনো ভাষা নেই। নক্ষত্র পতন হল। রাজনৈতিক জগতের মানুষ হিসেবে উনি যে কতটা বড় মাপের ছিলেন তা এক কথায় বলা যাবে না । ভাষায় বলা যাবে না । চিরকাল মনে রাখার মতো ব্যক্তিত্ব। নতুন প্রজন্মের কাছে তার আচরণ সবসময় শিক্ষণীয়।

 

Previous articleওনার প্রথম ধারাবাহিকে অভিনয়ে নায়িকা ছিলাম আমি: সুব্রতর প্রয়াণে স্মৃতিচারণ মুনমুনের
Next articleরবীন্দ্রসদনে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির বিরোধীরা