জ্বালানির দাম থেকে ত্রিপুরা সন্ত্রাস, বিজেপিকে “হাইব্রিড শকুন” বলে কটাক্ষ কুণালের

ফের বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারকে তেড়ে আক্রমণ করলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। পেট্রোল-ডিজেলের দাম নিয়ে কেন্দ্রের আইওয়াশ, ত্রিপুরায় লাগামছাড়া সন্ত্রাস কিংবা দিলীপ-তথাগত তর্জা, একাধিক ইস্যুতে গেরুয়া শিবিরের কটাক্ষ করলেন কুণাল। বললেন, বিজেপি “হাইব্রিড শকুন”!

জ্বালানির দামে কেন্দ্র-রাজ্য কর কাঠামোয় আসুক ভারসাম্য

পেট্রোপণ্যের উপর থেকে শুল্ক কমিয়ে উৎসবের মরশুমে দেশবাসীকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে কেন্দ্র। জ্বালানির উপরে ভ্যাট কমানোর পর সেই পথে হেঁটেছে দেশের ২২ রাজ্য। ব্যতিক্রম বাংলা সহ দেশের ১৪ রাজ্য। এনিয়ে এবার রাজ্যের উপরে চাপ বাড়ানোর কৌশল নিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। যদিও বিষয়টিকে একেবারেই সেভাবে দেখতে নারাজ কুণাল ঘোষ। তাঁর দাবি, মূল দাম কমাতে হবে। কেন্দ্র মোটা অঙ্কের মূল রাজস্ব নিয়ে চলে যাচ্ছে। দেশজুড়ে উপনির্বাচনে প্রবল ধাক্কা পাওয়ার পর দাম ছাড়ছে। আসলে অনেক দাম বাড়িয়ে একটু দাম ছাড়ছে। এটা আইওয়াশ। সস্তার রাজনীতি। কেন্দ্র রাজ্য কর সমান করাতে হবে। কেন্দ্র নিচ্ছে বেশি, ছাড়ছে কম। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির কেন্দ্রের কাছে কোনও বকেয়া নেই। জ্বালানির দাম কমানোর নামে আসলে মানুষের চোখে ধুলো দিয়ে বিভ্রান্ত করছে। মানুষ এককাট্টা হয়ে প্রতিবাদ করবে। সস্তার রাজনীতি। মুখরক্ষার চেষ্টা। কর কাঠামো সামঞ্জস্য, ভারসাম্য আসুক। নিজেরা বেশি নিয়ে রাজ্যকে ছাড়তে বলছে। কেন্দ্র আগে দামের নীতি নির্ধারণ ঠিক করুক। রাজ্য সরকার সময় মতো জানাবে।

আরও পড়ুন:ভাতৃদ্বিতীয়ায় বোনের কাছ থেকে ফোঁটা নেওয়া হল না প্রসেনজিতের, নিজেই জানালেন কারণ

অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, কেন্দ্রের দাবিকে নস্যাৎ কুণালের

বিরোধীরা যখন পেট্রোপণ্যের দাম নিয়ে লাফালাফি করছে, তখন কেন্দ্রের দাবি ভারতের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। কুণাল ঘোষ কেন্দ্রের এমন দাবিকে নস্যাৎ করলেন। বললেন,
অর্থনীতিতে সারা দেশের চেয়ে রাজ্যের মাথা পিছু আয় বেশি। জাতীয় গড় আয়ের তালিকায় বাংলা উপরে। একের পর এক প্রকল্পে বাংলা কেন্দ্রের থেকেই এক নম্বর দু’নম্বর হওয়ার পুরস্কার পেয়েছে। করোনা মহামারি ও লকডাউনে বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিকল্প অর্থনীতির পথে হেঁটে বাংলা এগিয়ে চলেছে। আর কেন্দ্রের শাসক দল ভারত মাতার জয় বলে মায়ের শরীর থেকে গয়না খুলে বেচে দিচ্ছে। এয়ার ইন্ডিয়া বেচে দিচ্ছে। দেশে কর্মসংস্থান নেই, শিল্পের হাল খারাপ। দেশ বাঁচাতে তাই বাংলার মডেল চলুক।

পুরভোটের আগে ত্রিপুরায় লাগামছাড়া সন্ত্রাস

পুরভোটের আগে ফের ত্রিপুরাজুড়ে লাগামছাড়া সন্ত্রাস শুরু করেছে বিজেপি। কুণালের দাবি, ত্রিপুরায় বিজেপি বুঝতে পেরেছে জনগণ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন। তেইশের বিধানসভায় তৃণমূল সরকার গড়বে। তেলিয়ামুড়া থেকে আমবাসা প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। আগরতলায় ৫১ আসনের সবকটিতে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। সেখানেই নৈতিক পরাজয় ঘটেছে শাসক দল বিজেপির। এখন বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা করেছে। অবাধ ভোট হলে বিজেপির পরাজয় নিশ্চিত। পুলিশ দলদাস। ত্রিপুরার রাজ্য নির্বাচন কমিশন ঠুঁটো জগন্নাথ। যারা বলেছিল, কোথায় তৃণমূল, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তারাই আবার পুলিশ পাঠিয়ে অভিষেকের সভার আগে বলছে, ১০ হাজার লোকের জমায়েত হওয়ার খবর আছে। তাই যারা মনে করেন, জ্বালানির দামবৃদ্ধি, সরকারি কর্মচারীদের প্রতি রাজ্য সরকারের বঞ্চনা, স্কুল শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে বিজেপিও, তাঁরা তৃণমূলে ভোট দিন। বাম-কংগ্রেসকে দিয়ে ভোট নষ্ট করবেন না।

বিজেপি হাইব্রিড শকুন

তৃণমূল যখন গোয়ায় সরকার গড়ার স্বপ্ন দেখছে, তখন বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কটাক্ষর সুরে বলেছিলেন, সমুদ্র দেখে লাফালাফি করছে। তৃণমূল কুয়োর ব্যাঙ। তারই পাল্টা দিয়েছেন কুণাল ঘোষ। বিজেপিকে কটাক্ষ করে বললেন, হাইব্রিড শকুন। একটি দল জন্মের পর থেকে দু’দুবার কেন্দ্রের সরকারে অংশ নিয়েছে। রেল মন্ত্রকের দায়িত্ব নিয়ে ভারতীয় রেলকে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। আসলে এ রাজ্যের হাইব্রিড শকুন বিজেপির সবচেয়ে বড় সমস্যা আদি, পরিযায়ী আর তৎকাল নেতাদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি। সার্কাস দেখাচ্ছে। কিছু সুবিধাবাদী, দলবদলু নিজেদের স্বার্থে, গ্রেফতার এড়াতে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। তারাই দলকে ডোবাচ্ছে। জয় ব্যানার্জি দল ছাড়ছে। তথাগত রায় আর দিলীপ ঘোষ একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে। দিলীপ তথাগতকে দল ছাড়তে বলছে। আসলে সুস্থ বুদ্ধির কেউ বিজেপি করে না। দলের নেতারাই অপর নেতৃত্বের উপর নির্ভর করে না। সাধারণ মানুষ কীভাবে নির্ভর করবে। তাই বলি, আগে দলকে সামলা পরে ভাববি বাংলা।

 

Previous articleগাছ ভাইকে ফোঁটা বোনেদের, অন্য স্বাদের সাক্ষী থাকল সবাই
Next articleসুবল ভৌমিকের উদ্যোগে আগরতলায় সুব্রত-স্মরণ তৃণমূলের