সুব্রতর পঞ্চায়েত, অমিতের অর্থ দফতরের দায়িত্বে কারা? মঙ্গলে মন্ত্রিসভা বৈঠকের আগে তুঙ্গে জল্পনা

দক্ষতার সঙ্গে পঞ্চায়েত দফতর পরিচালনা করছিলেন। রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েত ব্যবস্থা এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। তিনি প্রয়াত। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত হাসপাতালের কেবিনে বসে দফতরের কাজ তদারকি থেকে শুরু করে ফাইল সই করেছেন। তাঁর মৃত্যু যে রাজ্য মন্ত্রিসভায় একটি বিরাট শূন্যতা তৈরি করল তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
কালের নিয়মে এবার পঞ্চায়েতমন্ত্রীর চেয়ারে নতুন কাউকে বসতেই হবে। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বর্ষীয়ান মন্ত্রী। সংসদীয় রাজনীতিতে তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতা। ফলে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা মসৃণভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার কাকে দায়িত্ব দেন, সেদিকেই সকলের নজর।

 

সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের শূন্যস্থান কে পূরণ করবেন? কে হতে চলেছেন রাজ্যের পরবর্তী পঞ্চায়েতমন্ত্রী? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। এদিকে প্রশাসনিক মহলে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বিকল্প হিসেবে ঘোরাফেরা করছে দু’টি নাম—শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং মানস ভুঁইঞা। মন্ত্রিসভায় বয়স এবং সংসদীয় রাজনীতির অভিজ্ঞতার নিরিখে প্রথম সারিতে রয়েছেন শোভনদেববাবু। বর্তমানে তিনি কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। দফতর রদবদল করে পঞ্চায়েতমন্ত্রী হিসেবে শোভনদেববাবুকে নিয়ে আসা হতে পারে। তবে চর্চায় রয়েছে মানস ভুঁইঞার নামও। পঞ্চায়েত ও গ্রামীণ ব্যবস্থা সম্পর্কে মানসবাবুর অভিজ্ঞতা রয়েছে। এর আগে সেচ বিভাগের দায়িত্বও সামলেছেন। বর্তমানে তিনি জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী।  তবে এই দুই অভিজ্ঞ মন্ত্রীর বাইরে অন্য কাউকে পঞ্চায়েত মন্ত্রী হিসেবে যদি মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেন, সেক্ষেত্রেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আগামিকাল, মঙ্গলবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক। তার আগেই পুরো ছবিটা স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে শুধু পঞ্চায়েত দফতর নয়, সাধন পান্ডে অসুস্থ হওয়ার পর তাঁর ক্রেতা সুরক্ষা এবং স্বনির্ভর ও স্বনিযুক্তি দফতরের বাড়তি দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এই দফতর এবার কার হাতে যাবে সেটাও দেখার। বদল হতে পারে খাদ্য দফতরের। বর্তমানে এই দফতরের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মন্ত্রী রথীন ঘোষ।
এদিকে, ৯ নভেম্বর মন্ত্রী হিসেবে মেয়াদ শেষ হতে চলেছে অমিত মিত্রের। তাই গুরুত্বপূর্ণ অর্থমন্ত্রকের দায়িত্ব কে পাবেন, তা নিয়েও প্রশাসনিক মহলে জোরচর্চা শুরু হয়েছে। শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হননি অমিতবাবু। কিন্তু তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর অভিজ্ঞ অমিত মিত্র ছাড়া আর কারও কথাই অর্থমন্ত্রী হিসেবে ভাবতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী। গত ১০ মে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন অমিত মিত্র। মন্ত্রী হিসেবে তাঁর ৬ মাসের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৯ নভেম্বর। সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অর্থদফতর নিজের হাতেই রাখতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে থেকে যেতে পারেন অমিত মিত্র। সেক্ষেত্রে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে অর্থ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী করা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।
যদি চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে অর্থ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী হন, তাহলে তাঁর হাতে থাকা পুর ও নগরোয়ন্নয়ন দফতর ফিরে যেতে পারে ফিরহাদ হাকিমের হাতে। এই দফতরে আগেও দক্ষতার সঙ্গে সামলেছেন ফিরহাদ। আবার সদ্য সমাপ্ত দিনহাটা উপনির্বাচনে রেকর্ড ভোটে জিতেছেন উদয়ন গুহ। উত্তরবঙ্গের প্রতিনিধি হইসে তিনি রাজ্য মন্ত্রিসভায় আসতে পারেন বলে জোর জল্পনা।
Previous articleপ্রেমিকার সঙ্গে ব্রেকআপ ; দুই সন্তানের জনক প্রেমিকের আত্মহত্যা
Next articleমা উড়ালপুল থেকে মারণ ঝাঁপ সরকারি গাড়ির চালকের