Abhishek Banerjee: বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’-এর ডাক অভিষেকের

দমন-পীড়নের ঘটনায় রোজ রেকর্ড ভাঙছে বিজেপি। ত্রিপুরায় জিততে এসেছি, জয় করেই ফিরব: অভিষেক

সোমনাথ বিশ্বাস, আগরতলা

আগরতলার সাংবাদিক বৈঠক থেকে ত্রিপুরায় ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’-এর ডাক দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্ট ঘোষণা করলেন, “ত্রিপুরায় জিততে এসেছি, জিতেই ফিরব”। তাঁকে আটকানোর সবরকম চেষ্টা করেছে ত্রিপুরার বিজেপি (Bjp) সরকার। কিন্তু নির্ধারিত দিনে ত্রিপুরায় গিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের মানুষের কাছে নিজের বার্তা পৌঁছে দিলেন তৃণমূলের (Tmc) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Bandyopadhyay)। প্রথম থেকেই বিপ্লব দেবের সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন অভিষেক। বলেন, দমন-পীড়নের ঘটনায় রোজ রেকর্ড ভাঙছে বিজেপি। ত্রিপুরায় নৈরাজ্যের পরিবেশ। বিরোধীদের সভা করার অনুমতি দেওয়া হয় না, অভিযোগ অভিষেকের। তিনি বলেন, ত্রিপুরায় পুলিশ, সংবাদমাধ্যম- সবাই আক্রান্ত। থানার ভিতর আক্রমণ করছে BJP। মহিলা পুলিশদের মারধর করা হচ্ছে। হাসপাতালে গুন্ডাবাহিনী ঢুকে যাচ্ছে। আর পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।

ত্রিপুরায় নৈরাজ্যের পরিবেশ। বিরোধীদের সভা করার অনুমতি দেওয়া হয় না। দমন-পীড়নের ঘটনায় রোজ রেকর্ড ভাঙছে বিজেপি। বিপ্লব দেব সরকার যে ভাবমূর্তি তৈরি করছে, তা ত্রিপুরাকে ৫০ বছর পিছিয়ে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সে রাজ্যে তৃণমূল প্রার্থী এবং নেতা-কর্মীদের উপর আক্রমণের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট অবমাননার মামলা করেছে তৃণমূল। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি বলে জানিয়েছেন অভিষেক।

এরপরই রাজ্যের মানুষকে যে কোনও উপায় নিজের ভোট নিজে দেওয়ার আহ্বান জানান অভিষেক। ত্রিপুরায় (Tripura) ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’-এর ডাক দেন তিনি। বলেন, “আমরা মাথা পেতে সব আঘাত সহ্য করব। কিন্তু ত্রিপুরার মানুষকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। বিজেপির ‘জয় ধ্বনি’ দিতে দিতে গিয়েও তৃণমূলকে ভোট দিতে হবে। বলেন, ত্রিপুরায় জিততে এসেছি, জয় নিয়েই ফিরব”। তাঁর কথায়, “আগরতলার মানুষকে ঠিক করতে হবে তা আপনারা কী মডেল চান? দুয়ারে সরকার চান? না দুয়ারে গুন্ডা চান?” অভিষেকের মতে, মানুষ যদি নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন, তাহলে পুরভোটে বিজেপি আগরতলায় খাতা খুলতে পারবে না। বিজেপির শেষের শুরু হবে আগরতলায়। ত্রিপুরার আজকের বাইক বাহিনী, হেলমেট বাহিনীকে দিয়ে দুয়ারে সরকারের কাজ করাব- চ্যালেঞ্জ অভিষেকের।

তৃণমূল সাংসদ অভিযোগ করেন, ত্রিপুরার মানুষের প্রকৃত স্বাধীনতা নেই। যেনতেন প্রকারে গায়ের জোরে ত্রিপুরাকে দখল করে রাখতে চাইছে বিজেপি। “বিপ্লব দেবকে চ্যালেঞ্জ আপনি যদি গণতন্ত্রের পালন না করেন, তাহলে আপনাকে সুপ্রিম কোর্টে টেনে নিয়ে যাব”। অভিষেক জানান, অমিত শাহর মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ত্রিপুরায়।

সায়নী ঘোষের গ্রেফতারের প্রসঙ্গে তোপ দাগেন অভিষেক। প্রশ্ন তোলেন, প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখে খেলা হবে স্লোগান শোনা গিয়েছিল, তাহলে তাঁদের গ্রেফতার নয় কেন? তিনি বলেন, বিজেপি তৃণমূলকে ভয় পেয়েছে, সেই কারণেই সায়নীর বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দায়ের হয়েছে। গণতন্ত্রের নামে ত্রিপুরায় প্রহসন চলছে, তৃণমূল সেটা চলতে দেবে না বলে মন্তব্য অভিষেকের। তিনি জানান, “তৃণমূলের উপর যা হামলা হয়েছে তার সব ভিডিও রেখে দিয়েছি, সুপ্রিম কোর্টে সব জমা দেব”।

ত্রিপুরায় সায়নী ঘোষের গ্রেফতারের ঘটনায় নিন্দা করে বিবৃতি দিয়েছে সিপিআইএম (Cpim)। এই ঘটনায় সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে অভিষেক বলেন, সায়নীর গ্রেফতারের প্রতিবাদে সিপিআইএম বিবৃতি দিয়েছে তার জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু লড়াইটা রাস্তায় নেমে করতে হবে। না হলে একতরফা হবে। এরপরেই কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, “বিজেপিকে হারানোর ক্ষমতা রাখে না সিপিআইএম-কংগ্রেস। রাখলে বাড়িতে বসে থাকত না। লড়াইটা ময়দানে হচ্ছে, ভার্চুয়ালি নয়। আর মাঠে নেমে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করছে তৃণমূল”

ত্রিপুরার ডবল ইঞ্জিন সরকারকে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, “উপরে দুটো চোর বসে চুরি করছে। আর এখানে একটা চোর চুরি করছে। কেউ কাউকে ধরবে না, ডবল ইঞ্জিন সরকার”।

বিজেপি ভেঙে দাও-গুড়িয়ে দাও রাজনীতি করে, আর আমরা সাজিয়ে দাও-গুছিয়ে দেয় রাজনীতি করি- মন্তব্য অভিষেকের।

কেন্দ্রের কৃষি আইন প্রত্যাহারের প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, এই কৃতিত্ব সম্পন্ন কৃষকদের। ঠেলায় পড়ে তেলের দাম কমিয়েছে, কৃষি আইন প্রত্যাহার করেছে কেন্দ্র।

যেভাবে ত্রিপুরার মানুষ তৃণমূলের পাশে রয়েছেন, প্রতিরোধ গড়ে তুলছেন, তার জন্য তাঁদের স্যালুট জানান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। কুর্নিশ জানান সংবাদমাধ্যমকেও। ত্রিপুরায় প্রত্যেক বুথে তৃণমূলের কমিটি হবে। ভোট শেষ হলে তা ঘোষণা হবে বলে জানান অভিষেক।

 

Previous articleChildren’s Day:শিশুদিবস উপলক্ষে অভিনব অনুষ্ঠান আয়োজন করল অ্যাক্রোপলিস
Next articleMamata Banerjee: ‘কোথায় গেল মানবাধিকার কমিশন?’ ত্রিপুরায় হামলা প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুললেন মমতা