কৃষকদের ক্ষতিপূরণ-সহ সাত দফা দাবি নিয়ে ৭২ ঘণ্টা সিঙ্গুরে ধর্নায় বসেছিল বিজেপি। আর বিজেপির কর্মসূচি শেষ হতেই শুরু হল তৃণমূলের শুদ্ধিকরণ অভিযান। নেতৃত্বে মন্ত্রী বেচারাম মান্না। ছেটানো হল গোবর, গঙ্গাজল। ঢোল বাজিয়ে হল হরিনাম সংকীর্তন। মহিলাদের হাতে হাতে ঝাঁটা। গোবর জল ছিটিয়ে দেওয়া হল ঝাঁট। হল ঢোল বাজিয়ে নাম-সংকীর্তনও। সেই সঙ্গে মুখে মুখে ছিল স্লোগান।

নির্বাচনে গো-হারান হেরেও নানা মিথ্যাচারে সুবিধা করতে না পেরে এবার বিজেপি পড়েছে সিঙ্গুর নিয়ে। সেখানে ৭২ ঘণ্টার কর্মসূচি নিয়েছিল, উদ্দেশ্য ছিল কৃষক-খেপানো। কিন্তু কৃষকেরা বিজেপির ফাঁদে পা দেননি। এমনকী তৃণমূল কংগ্রেস থেকে যাওয়া তাদের দলের প্রার্থী একদা সিঙ্গুর আন্দোলনের নেতা মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যও ছিলেন না। বিজেপির ফ্লপ শোয়ের পর ‘শুদ্ধিকরণ অভিযান’-এর ডাক দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে মহিলা কর্মীরা শুদ্ধীকরণ করলেন বিজেপির ধরনা দেওয়ার জায়গায়। যেখানে বিজেপি মঞ্চ বেঁধেছিল, যেখানে বিজেপি কর্মীরা অবস্থানে বসেন, সেইসব জায়গায় গোবরজল ছড়িয়ে ঝাঁট দিলেন মহিলারা। শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্নাও ছিলেন। সাফসুতরো করে এলাকায় লঙ্কা ও লেবুর মালা ঝোলানো হয়। গঙ্গাজলও ছেটানো হয়।

বৃহস্পতিবার শেষ হয় বিজেপির ‘কৃষি বাঁচাও, কৃষক বাঁচাও’ স্লোগান সামনে রেখে অবস্থান কর্মসূচি। রাজ্য সভাপতি, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি, বিরোধী দলনেতা প্রমুখ ছিলেন ধরনামঞ্চে। তবে স্থানীয় কৃষকদের দেখা যায়নি। এলাকার বিজেপি কর্মীরাও ছিলেন না। ফলে ‘সিঙ্গুর চলো’ ফ্লপ শো হয়ে ওঠে। শেষ দিনে তাই নন্দীগ্রাম থেকে প্রায় ২০টা বাসে কর্মী নিয়ে এসে জায়গা ভরানোর চেষ্টা করেন শুভেন্দু অধিকারী।

সিঙ্গুর আন্দোলনের অন্যতম মুখ শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না বিজেপি ‘মেকি কৃষকদরদি’ সেজে নাটক করতে চাইছে, বলে তোপ দেগেছেন। তিনি বলেন, যে বিজেপি কৃষকের সর্বনাশ করতে আইন এনেছিল, আন্দোলনের চাপে বাধ্য হয়ে শেষমেশ প্রত্যাহার করেছে, তাদের নেতাদের কৃষকদের পাশে থাকার কথা, নিছক ভণ্ডামি। মোদি-শাহ জুটি কৃষিজমিকে বড় শিল্পপতিদের হাতে বেচে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। বরাবর কৃষকদের পাশে কেউ যদি থেকে থাকেন, তিনি হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন- Parambrata Chatterjee: পুরভোটে তৃণমূলের হয়ে প্রচারের ব্যাখ্যা দিলেন পরমব্রত
