ডায়মন্ডহারবার মডেলকে আক্রমণ! আসলে কি অন্য খেলা ?

Corona- যুদ্ধে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)র ডায়মন্ডহারবার (Diamond Harbour) কেন্দ্রে যেভাবে কাজ হচ্ছে, তা নিয়ে একটি সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব বিষয়টিকে ” ক্লোজড চ্যাপ্টার” বলে দিলেও বিষয়টি পুরো থামেনি। বরং প্রকাশ্য বিবৃতি আর না হলেও চারপাশে আলোচনা বাড়ছে। সূত্রের খবর, ‘ডায়মন্ডহারবার মডেলকে’ সামনে রাখলেও পিছনে অন্য খেলা রয়েছে।

অভিষেকের উদ্যোগে তাঁর কেন্দ্রে করোনার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই চলছে। অভিষেক নিজে দেখভাল করছেন। এবং সুফল মিলছে। এতে কোনো ম্যাজিক নেই। নির্দিষ্ট পদ্ধতিতেই করোনার মোকাবিলা করা যাচ্ছে। অভিষেক নিজেও এই সময় ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সভা বন্ধ রাখার পক্ষে সওয়াল করেছেন। মানুষ এটি সমর্থন করছেন। শেষমেষ পুরভোটও পিছিয়েছে।

আরও পড়ুনCorona Update:স্বস্তি দিয়ে খানিকটা কমল দেশের দৈনিক সংক্রমণ, মৃত্যুও নিম্নমুখী
সূত্রের খবর, এতে দলের লাভ হলেও পরিকল্পিতভাবে উল্টো খেলা শুরু হয়েছে। যেখানে বিরোধীদের চাপে পড়ে যাওয়ার কথা এবং ডায়মন্ডহারবার মডেল বাকি জায়গাতেও প্রয়োগ হওয়ার দরকার, সেখানে বিষয়টিকে রাজ্য সরকার বনাম অভিষেক দাঁড় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এতে যেমন বিরোধীরা আছে, মিডিয়ার একাংশ আছে, তেমনই তৃণমূলেরও পাঁচ-ছজন আছেন বলে খবর। অভিষেকের কিছু সিদ্ধান্তের কারণে ঘুঘুর বাসায় হাত পড়ছে। এরা নিজেদের অন্য রাগ এখন ডায়মন্ডহারবার ঘিরে মিটিয়ে নিচ্ছেন।
উদাহরণ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রে খবর হল আইনি বিষয়ে কল্যাণের উপর নির্ভর করার পরেও ফলাফলে সন্তুষ্ট নয় দল। কোর্টমহল থেকে যা ফিড ব্যাক, তাতে কল্যাণের প্রভাব কমাতে বাধ্য হয়েছে দল। দল চূড়ান্ত চটে কল্যাণ। আর সেই রাগটা এখন ডায়মন্ডহারবার মডেলের বিরোধিতা করে মেটাতে চাইছেন। দলের অন্য সাংসদরাও আরও কিছু অভিযোগ করেছেন দলনেত্রীর কাছে, কল্যাণের আচরণ নিয়ে। কল্যাণ ” আমার নেত্রী দিদি” বলে মমতার কাঁধে বন্দুক রেখে অভিষেককে আক্রমণ করেছেন। বিষয়টি মমতাশিবির বনাম অভিষেক মডেল বলে ঘুরিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু আসলে রাগের কারণ কোর্টে তাঁর দলের তরফে প্রভাব খর্ব।

জানা গিয়েছে কল্যাণ একা নন। নিজের নিজের অঙ্কে তাঁকে সামনে রেখে জলঘোলা করাচ্ছেন আরও দুতিনজন। তাঁদেরও নির্দিষ্ট অঙ্ক রয়েছে। অভিষেক ‘ এক ব্যক্তি এক পদ’ কার্যকর করতে চান। কিন্তু বিশেষ কয়েকজন নেতা একাধিক পদে রয়েছেন। তাঁরা কিছুই ছাড়তে চান না। এঁরা সুযোগ পেলেই অভিষেককে বিব্রত করতে নামছেন। বস্তুত দলনেত্রী এবং অভিষেকের কোনো বিরোধ নেই। নিজেদের স্বার্থে কয়েকজন নেতা জলঘোলা করে দিচ্ছেন। যেহেতু নেত্রীকে সকলকে নিয়ে চলতে হয়, তাই তিনি বিব্রত হচ্ছেন। অন্যদিকে অভিষেক চান এক ব্যক্তি এক পদের মাধ্যমে আরও বেশি নেতাকে কাজের বৃত্তে আনতে। পুরসভার বড় কাজের সঙ্গেই মন্ত্রিসভায় বা সংসদে; কিংবা গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের পাশাপাশি দলের বড় পদে, অভিষেক এই প্রবণতা কাটাতে চান। সূত্রের খবর, এতেই অশনি সংকেত দেখছেন সাত আটজন। তাই আরোপিত সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি করা হচ্ছে। স্বয়ং নেত্রী বিষয়টি বুঝছেন এবং সবটা নজর রাখছেন, খতিয়ে দেখছেন। তাঁকে সব দিক নিয়ে চলতে হচ্ছে। অপ্রিয় কড়া সিদ্ধান্ত রাতারাতি নিতে পারছেন না; সময় দিতেই হচ্ছে। সূত্রের খবর, অভিষেক আগাম সতর্কতা নিয়ে চলতে চান। 2024 লোকসভার ভোট। নরেন্দ্র মোদির ভোট। দিল্লিতে কংগ্রেসের ব্যর্থতার কারণে বিজেপি লোকসভায় বাড়তি কয়েক শতাংশ ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। সংগঠনকে ঢেলে সাজিয়ে এখন থেকে তার মোকাবিলা চান অভিষেক। আর এই প্রশ্নেই কয়েকজন সিনিয়র নেতা জলটা ঘোলা করে শীর্ষনেতৃত্বে শিবিরবিন্যাসের চেষ্টা করছেন। তার ফলেই ” ক্লোজড চ্যাপ্টারের” মোড়কেও স্নায়ুযুদ্ধ চলছে।

দলের এক নেতা বলেন,” দিদি এবং অভিষেকের মধ্যে কথা হলেই সব মিটে যাবে। অভিষেক দলকে সময়োপযোগী করতে চাইছে। আর কয়েকজন সেটা মানতে না পেরে দিদিকে সামনে রেখে নিজেদের রাজনীতি করার চেষ্টা করছেন। এটা বেশিদিন চলবে না।” সূত্রের খবর, কল্যাণের হয়ে কারা নেমেছেন তাও আজ স্পষ্ট। যেমন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বা এরকম তিনচারজন। তবে দলের সব সূত্রই বলছে, এই সাময়িক অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে দলের ক্ষতি হবে না। মাথার উপর মমতাদি। এবং আজকের প্রজন্মের দক্ষ নেতা অভিষেক। কর্মীরা এবং মানুষ এর বাইরে চেনেন না।
মমতাদির প্রতি বাংলার পূর্ণ সমর্থন। আর অভিষেক যেভাবে পরিণত হয়ে উঠে লড়াই দিচ্ছে বা এই করোনাতেও ডায়মন্ডহারবারের কাজ করছেন, মানুষ খুশি। বাকি সাংসদ বিধায়করাও যদি এই মডেলে নিজের এলাকায় উদ্যোগ নিতেন, মুখ্যমন্ত্রীর লাভ হত। তার বদলে রেষারেষিতে জড়িয়ে ফেলা হল দলকে। এটা অনভিপ্রেত।

Previous articleLewandowski: মেসি, সালাহদের হারিয়ে ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার হলেন রবার্ট লেওয়ানডস্কি
Next articleVirat Kohli: প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে একদিনের ক্রিকেটে একাধিক রেকর্ডের সামনে কোহলি