৯৩ নট আউট! ভোটে হারার রেকর্ড গড়লেন এই ব্যক্তি, এবার লক্ষ্য সেঞ্চুরি! 

৯৩বার ভোটে হেরেছেন, কিন্তু সেঞ্চুরি করার লক্ষ্যে আজও এগিয়ে চলেছেন। উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তিনি।

লড়াই মানে জয় পরাজয়, এ কথা সবার জানা। কিন্তু হেরে যাওয়ার রেকর্ড তৈরী করা কি কারোর লক্ষ্য হতে পারে? ৭৫ বছর বয়সী হাসনুরাম অম্বেদকারীর (Hasnuram Ambedkari)এটাই লক্ষ্য। ভোটে হেরে যাওয়ার রেকর্ড করে ইতিহাস গড়ে ফেলেছেন এই ব্যক্তি। পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে বিধানসভা এমনকি লোকসভা, একের পর এক নির্বাচনে শুধুই পরাজয়। হেরে গেলেও হাল ছাড়েন নি।  তাঁর (Hasnuram Ambedkari) কথা অনুযায়ী, তিনি ভোটের লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন শুধু মাত্র হারার জন্যেই।

আরো পড়ুন: বিয়ের মণ্ডপে পাত্রীকে চড় পাত্রর, পাল্টা সপাটে দিলেন কনেও! তারপর?

গল্প নয় সত্যি! ভোটে হারার নেশায় মশগুল হাসনুরাম অম্বেদকারী এমন ভাবনাতেই বিশ্বাসী। তথ্য বলছে, প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন  ১৯৮৫ সালে। সেবার অবশ্য জেতার আশাতেই নির্বাচনী ময়দানে। কিন্তু ফল প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা যায় একটি ভোটও তিনি পাননি। সব থেকে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো তাঁর নিজের স্ত্রী-ও তাঁকে তাঁর ভোটটি দেননি। সেই থেকেই জেদ চেপে গেল হাসনুরামের। ঠিক করলেন যাই হয়ে যাক, এবার থেকে আর জেতার চিন্তা করবেন। সব ধরণের ভোটে লড়াই করবেন তবে জেতার জন্য নয়, হেরে যাওয়ার রেকর্ড করবেন তিনি। করবেন না। সবাই তো জেতার জন্যই ভোটে দাঁড়ায়। তিনি নয় হারার দলেই থাকবেন। ইতিমধ্যে ৯৩ বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। প্রতিবারই ভাগ্যে জুটেছে পরাজয়। তবু লড়াই করেছেন। একবার তো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি পদের জন্যও লড়বেন। কিন্তু সেবার তাঁর নমিনেশন বাতিল হয়। কিন্তু তাতেও তিনি দমে যাওয়ার পাত্র নন। কিন্তু তিনি তো থেমে থাকার পাত্র নন। তারপরেও একের পর এক ভোটে তারপরেও দাঁড়িয়েছেন আর হেরে গেছেন। হারের সেঞ্চুরি করতে চান হাসনুরাম।

আসন্ন ২০২২-এ উত্তরপ্রদেশের বিধানসভার ভোটের জন্যও লেগে পড়েছেন হাসনুরাম। বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচারও শুরু করেছেন। হেরে যাওয়ার লক্ষ্যে তার চূড়ান্ত প্রস্তুতি। বহুজন সমাজবাদী পার্টির সদস্য হয়েও হাসনুরাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন নির্দল প্রার্থী হিসাবে। এবারের ভোটে হারলে তাঁর স্কোর হবে ৯৪।

ভোটে জেতার জন্য দেশের রাজনৈতিক মানুষজন কত কিছুই করেন ,অথচ কী নিপাট সাধারণ একজন মানুষ হাসনুরাম। তার জীবনের গল্প টা অবাক করে দেওয়ার মতো। আমাদের চারপাশে হয়তো এরকম অনেক মানুষ আছেন যাঁরা প্রতিমুহূর্তে হেরে যান, তবু লড়াই চলতে থাকে। হাসনুরাম যেন তাঁদেরই কথা বলেন তাঁর ভাবনার মাধ্যমে। হয়তো এই হেরে যাওয়ার গল্পটাই আগামী দিনে বড় কোনও জয়ের ইঙ্গিত বয়ে আনবে। ততদিন লড়াই চলবে হাসনুরামের।