ভাবমূর্তি চুলোয়, ক্ষমতার দম্ভে জ্ঞানশূন্য বিজেপির অবস্থা দেশজুড়ে সঙ্কটজনক

একুশের নির্বাচনে বঙ্গে দর্প চূর্ণ হয়েছে বিজেপির(BJP)। বর্তমানে বাংলায় সংগঠনেরও বেহাল দশা গেরুয়া শিবিরের। এরই মাঝে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন(Assembly election) তথা ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) কৃষি আইন প্রত্যাহার করে ভাবমূর্তি ঠিক করার পথে নামলেও বিজেপির স্বরূপ আর বুঝতে বাকি নেই দেশবাসীর। ক্ষমতার দম্ভে জ্ঞানশূন্য গেরুয়া শিবির বর্তমানে তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে এই মুহূর্তে বিজেপির পাখির চোখ উত্তর প্রদেশ। তবে সেখানেও যে ছবি উঠে আসতে শুরু করেছে তা গেরুয়া শিবিরের ঘুম কেড়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট। রিপোর্ট বলছে উত্তরপ্রদেশে রীতিমতো ব্যাকফুটে মোদি-শাহের দল। শুধু উত্তরপ্রদেশ(UttarPradesh) নয় রাজ্যে রাজ্যে দলগতভাবে বেহাল অবস্থা বিজেপির।

৪০৩ আসন বিশিষ্ট উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় গতবার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় এলেও এবার যোগী শাসনে রীতিমতো ক্ষুব্ধ সেখানকার মানুষ। করোনাকালে রাজ্যের বেহাল অবস্থা, কৃষকদের প্রতি মোদি সরকারের নিষ্ঠুরতা, চূড়ান্ত অপশাসন, একের পর এক খুন-ধর্ষণের জেরে যোগী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে উত্তরপ্রদেশবাসী। পরিস্থিতি সামাল দিতে সব কাজ ছেড়ে উত্তরপ্রদেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারে নেমেছেন খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রচারে আসা রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রীকে তাড়িয়ে গ্রামছাড়া করছে গ্রামবাসী। শুধু উপমুখ্যমন্ত্রী নন উত্তরপ্রদেশের জেলায় জেলায় দেখা যাচ্ছে এই ছবি। এরই মাঝে অন্তর্দ্বন্দ্বও প্রবল হয়ে উঠেছে, শয়ে শয়ে বিজেপি নেতা-কর্মী-বিধায়ক দল ছেড়ে সমাজবাদী পার্টি সহ অন্যান্য দলে যোগ দিচ্ছেন। অন্যদিকে বিরোধী শিবিরের প্রচারে মানুষের ভিড় দেখা গিয়েছে চোখে পড়ার মতো। সব মিলিয়ে উত্তরপ্রদেশে ঘটি উল্টানোর আশঙ্কায় গেরুয়া শিবির।

আরও পড়ুন:বাজেট অধিবেশন: থাকছে না কোনও “কোশ্চেন আওয়ার” ও “জিরো আওয়ার”

পাশাপাশি পাঞ্জাব, মণিপুর, গোয়ার মত নির্বাচনমুখী রাজ্যগুলিতে মোটেই সুবিধার নয় বিজেপির অবস্থা। শেষবেলায় ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের সঙ্গে বিজেপি জোট করলেও এই রাজ্যের কৃষকরা বিজেপির উপর রীতিমত খাপ্পা। ফলে কংগ্রেস গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত হলেও পাঞ্জাবে মূল লড়াইয়ের বাইরে গেরুয়া শিবির। বরং পাঞ্জাব রাজ্যে আম আদমি পার্টি যথেষ্ট শক্তিশালী দল হিসেবে উঠে এসেছে। গোয়া ও মণিপুরে বিজেপির শাসক দল হিসেবে থাকলেও এই দুই রাজ্যে বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব মারাত্মক আকার নিয়েছে। গোয়ায় বহু বিজেপি বিধায়ক ইতিমধ্যেই দল ছেড়েছেন। ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে গোয়া, মণিপুরে উঠে আসছে তৃণমূলের নাম।

এর পাশাপাশি বিজেপির গড় হিসেবে পরিচিত গুজরাট নিয়েও এবার যথেষ্ট চিন্তিত টিম মোদি-শাহ। ২০১৭ সালে কোনও ইস্যু ছাড়াই কংগ্রেস আশিটির বেশি আসন পেয়ে বিজেপিকে বিরাট ধাক্কা দিয়েছিল। এবার করোনার সঙ্কট থেকে গুজরাতও রক্ষা পায়নি। সেই ক্ষোভে রীতিমতো ফুঁসছে গুজরাটবাসী। চলতি বছরে এই রাজ্যেও হবে নির্বাচন। সেদিকে নজর রেখে ইতিমধ্যেই এই রাজ্যে জোট শরিকের সন্ধান করতে শুরু করেছে পদ্ম বাহিনী। সব মিলিয়ে দেশজুড়ে বিজেপির যা হাল তাতে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে উত্তরাখণ্ডের টুপি ও মণিপুরী গামছা গলায় দিয়ে মন গলানোর চেষ্টা চললেও প্রশ্ন উঠছে ভাঙা ঘর তাপ্পি দিয়ে আদৌ জোড়া লাগবে?

Previous articleবাজেট অধিবেশন: থাকছে না কোনও “কোশ্চেন আওয়ার” ও “জিরো আওয়ার”
Next articleKMC: দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে কাউন্সিলরদের সকলের জন্য কাজের বার্তা ফিরহাদের