Saturday, August 23, 2025

উত্তরপ্রদেশে ডবল ইঞ্জিনের উন্নয়ন আসলে ভাঁওতা: অনুন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরল সপা

Date:

Share post:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(NarendraModi) আর যোগী আদিত্যনাথের(Yogi Adityanath) দাবি করা ডবল ইঞ্জিন সরকারের “ভুয়ো” উন্নয়নের প্রতিফলন, উত্তরপ্রদেশের বারাবাঁকি জেলার পারশোলা গ্রাম। তবে শুধু পারশোলা গ্রামই নয়। পুরো উত্তরপ্রদেশ(UttarPradesh) জুড়ে, এইরকম প্রায় ৫০ টি গ্রামের অনুন্নয়ন এর হদিস তুলে ধরলেন উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টির(SP) নেতা বিনয় সিং(Vinay Sing)। বিজেপি নেতৃত্ব, মুখে উন্নয়নের বড় বড় কথা বললেও পুরোটাই যে ফাঁকা আওয়াজ ছাড়া আর কিছুই নয় তারই প্রমাণ উত্তরপ্রদেশের দারিয়াবাদ বিধানসভা এলাকার এই গ্রাম। যেখানকার বর্তমান বিধায়ক বিজেপির সতীশ শর্মা। যেখানে পঞ্চম দফায় নির্বাচন হতে চলেছে আগামী ২৭ শে ফেব্রুয়ারি।

উত্তরপ্রদেশের দরিয়াবাদ বিধানসভা এলাকার পারসোলা গ্রাম। রাজধানী লখনৌ থেকে যার দূরত্ব মাত্র ৮০ কিলোমিটার। কিন্তু প্রদীপের নিচেই অন্ধকার। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের দাবি করা “উন্নয়নের” ছবি এখানে এসে যেন থমকে গেছে। সাধারণ মানুষের জীবন ধারণের জন্য, যে ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধার প্রয়োজন, স্বাধীনতার সাত দশক পরেও সেসব থেকে বঞ্চিত গ্রামবাসীরা। নেই স্কুল, কলেজ, বিদ্যুৎ , নেই কোনো প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র, পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থাও নেই। প্রাথমিক ওষুধপত্রের প্রয়োজনেও যেতে হয় ১০কিলোমিটার দূরের গ্রামে। আর সেখানে পৌঁছানোর জন্যও নেই কোন সড়ক ব্যবস্থা। ছোট ডিঙি নৌকায় ঘাগরা নদী পেরিয়ে পাশের গ্রামে যেতে হয় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য।

আরও পড়ুন:Hoogli: দেওয়াল জুড়ে কার্টুন, বাঁশবেড়িয়ায় অভিনব প্রচার তৃণমূল প্রার্থীর

ভোট আসে-ভোট যায়। ভোটের সময় নেতারা এসে গালভরা প্রতিশ্রুতিও দিয়ে যায়। কিন্তু বারাবাঁকি জেলার বাসিন্দারা যে তিমিরে সেই তিমিরেই রয়েছে বছরের পর বছর। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও গুগল ম্যাপে পাওয়া যায় না এলাকার রাস্তার কোন ঠিকানা।এটাই উত্তরপ্রদেশের ডবল ইঞ্জিন সরকারের উন্নয়নের বাস্তব চিত্র। গ্রামের ৮০ বছরের বৃদ্ধা নন্দরানী। যিনি আজ পর্যন্ত লখনৌ শহর দেখেননি। কারণ যাতায়াতের কোন সুবন্দোবস্তই নেই। কথা বলেছিলাম এলাকার বাসিন্দা ৬০ বছর বয়সি নন্দলাল রাওয়াত এর সঙ্গে, তার কথায়, আজ পর্যন্ত এলাকার বিজেপি বিধায়ক সতীশ চন্দ্র শর্মাকে চোখে দেখেননি তিনি। নিজের পয়সায় ব্যাটারি কিনে মোবাইল চার্জ করেন। এখনো পর্যন্ত গ্রামে নেই বিদ্যুতের কোন পোস্ট, বিদ্যুৎ সংযোগ আসা তো অনেক দূরের কথা।

বারাবাঁকি জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি কিসান লাল যাদব জানালেন, “শুধু এই একটা গ্রামই নয়, এটাই উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন গ্রামের বাস্তব চিত্র, নির্বাচন মিটে গেলে নেতারা কোনদিন ফিরেও তাকান না এই সমস্ত গ্রামের দিকে। এখানকার মানুষ জীবনধারণের জন্য নূন্যতম সুযোগ-সুবিধাগুলো থেকেও বছরের-পর-বছর বঞ্চিত।”

একই কথা শোনা গেল লখনৌ-এর সমাজবাদী পার্টির নেতা বিনয় সিংয়ের কাছ থেকেও। তিনি জানালেন,” মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গোরক্ষপুরের বাইরে কিছু চেনেনই না। বিজেপি সরকার শুধুমাত্র মিথ্যে স্বপ্ন ফেরি করতে পারে। সমাজবাদী পার্টির জমানায়, ইলেকট্রিকের পোস্ট লেগেছিল এই সমস্ত গ্রামগুলোতে। যদিও বিদ্যুৎ সংযোগ তখন দেওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু যোগী আদিত্যনাথ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিদ্যুৎ, সড়ক, পানীয় জল, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সবদিক থেকেই বঞ্চিত করে চলেছে উত্তরপ্রদেশের বেশিরভাগ গ্রামের বাসিন্দাদের। এটাই উত্তরপ্রদেশের ডবল ইঞ্জিন সরকারের দাবি করা উন্নয়নের বাস্তব চিত্র।”

দরিয়াবাদ বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক সতীশচন্দ্র শর্মা, পোড়-খাওয়া রাজনীতিবিদের মতোই উত্তর দিলেন, ” আমরা সবরকম চেষ্টা করছি উন্নয়নের কিন্তু আগের সরকার কোনও কাজই করেনি।”

spot_img

Related articles

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...