যোগী উন্নয়নের ঢাক পেটালেও আজও ‘পরাধীন’ উন্নাওয়ের মেয়েরা

উত্তরপ্রদেশের উন্নাও। একটা সময় নিয়মিত খবরের শিরোনামে ছিল। সেই উন্নাওয়ে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি ভোট চতুর্থ দফায়। ভোটের ময়দানে সেখানে লড়াইয়ে নেমেছে সব দলের প্রার্থীরাই। কেমন আছে এখন উন্নাও? স্বাধীনতার এতগুলো বছর পরও স্বাধীন নয় উন্নাওবাসী। স্বাধীন নয় সেখানকার মেয়েরা। টেলিফোনে জানালেন, ৭০ বছরের বৃদ্ধ রামসিং। তার মতে, উন্নাও আছে উন্নাওতেই।

একের পর এক ঘটনা। দলিত মহিলাদের ওপর নির্যাতন। উন্নাওকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল সারা ভারতবর্ষের সঙ্গে। গ্রামে এখনো মোতায়েন আছে পুলিশি ব্যবস্থা। কিন্তু তাও আতঙ্ক গ্রাস করে রেখেছে উন্নাওবাসীকে বিশেষত মহিলাদের। উন্নাও থেকে টেলিফোনে বলদেও সিং জানালেন, ” স্বাধীনতার এত বছর পরও, প্রযুক্তির এত কিছু উন্নতির পরও এখনো সন্ধ্যার পর এখানকার মেয়েরা বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পায়।” গঙ্গার উপকূলবর্তী এলাকা উন্নাও। চারিদিকে ঝোপঝাড়ে ভর্তি জঙ্গল। প্রবীণ বলদেও সিং জানালেন, ” উন্নাওয়ের মেয়েরা সুরক্ষিত নয়। আস্থা নেই সরকারের উপরে। শুধু উন্নাওই নয়, আশপাশের সিয়াগাও, পিপালখেরা, ব্যাঙরমুখ সব এলাকারই কমবেশি একই অবস্থা। বেশিরভাগ সময়ই গঙ্গার তীরবর্তী ঝোপঝাড়ে এইসব দুষ্কর্ম করে দুষ্কৃতীরা।” মেয়েদের উপর এত অত্যাচার হচ্ছে, অথচ তারা শাস্তি পাচ্ছে না কেন? প্রশ্ন করতেই ক্ষেপে উঠলেন বৃদ্ধ। টেনে আনলেন কুলদীপ সেঙ্গার এর প্রসঙ্গ। এখনো পর্যন্ত এলাকাবাসী ভয় পায় তার নামে। এমনকি গত চার বছর ধরে এলাকাছাড়া ছিলেন উন্নাও পিরীতার পরিবারও ।

এতকিছুর পরেও তারা পুলিশকে জানায় না কেন? এ কথা জিজ্ঞেস করতেই, যে উত্তরটা এলো তা সত্যিই চমকে দেওয়ার মতো। উন্নাওবাসী রজনীর মতে, “ধর্ষণ বা কোনরকম নিগ্রহের শিকার হলে সেই মহিলা বা তার পরিবারের বসবাস করাই দায় হয়ে যায় এলাকায়। ভয়ে সেখানে কেউ মুখ খোলে না। তার ওপর আছে যদি এই ঘটনার সঙ্গে কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির যোগ থাকে। এমনকি মুখ খুললে বাড়ির লোকের প্রাণসংশয় পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। ” তাই সবকিছু জেনে বুঝেও চুপ আছে উন্নাও। একটা হাথরাস বা একটা উন্নাও হয়তো লোকে জানতে পারে। কিন্তু এর পিছনেও আরো কত ঘটনা ঘটে চলে সেখানকার মহিলাদের সঙ্গে সেকথা বাইরে প্রকাশ পায় না ক্ষোভের সঙ্গে জানালেন তিনি।

মহিলাদের সুরক্ষা ছাড়াও পরিকাঠামো সহ একাধিক ইস্যু রয়েছে উন্নাওয়ে। তবে নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে নারী সুরক্ষা। “বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও” প্রকল্প ডবল ইঞ্জিনের যোগী সরকারের রাজত্বে কতটা কার্যকরী তা উন্নাওয়ের নীরবতাই প্রমাণ করে দিল। উন্নাওবাসীর দাবি, বেটিকে যদি বাঁচিয়েই না রাখা যায়, তাহলে পড়বে কীভাবে? নির্বাচনে জয়, পরাজয় সেখানকার মহিলাদের রোজনামচায় আদৌ কোন পরিবর্তন আনতে পারবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নীরব উন্নাও। এ প্রসঙ্গে সমাজবাদী পার্টির মুখপাত্র বন্দনা সিং বলেন, “রাজ্যের সমস্ত জায়গাতেই মহিলাদের সমস্যা। শুধুমাত্র উন্নাও নয়, রাজ্যের সর্বত্রই একই ছবি। যেখানেই এই ধরণের ঘটনা ঘটছে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তরফে টাকা দিয়ে অথবা হুমকি দিয়ে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে।”

আরও পড়ুন- Mamata: রাজ্যপাল অকারণে ফাইলে সই করতে দেরি করছেন: তোপ দাগলেন মমতা

Previous articleSrilanka Cricket: ভারতের বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজের জন্য দল ঘোষণা শ্রীলঙ্কার
Next articleশুরু কন‍্যাশ্রী কাপ, জয় দিয়ে অভিযান শুরু এস বি উইমেন্স এফ সি-র