অনন্ত গুছাইত, নয়াদিল্লি : ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি যখন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তখন দেশের ৯টি রাজ্যে কংগ্রেস সরকার ছিল। যা এখন শুধুমাত্র দুটি রাজ্য রাজস্থান এবং ছত্তিশগড়ে এসে দাঁড়িয়েছে । এতে স্পষ্ট বোঝা যায় যে মানুষ ধীরে ধীরে কংগ্রেসের ওপর থেকে আস্থা হারাচ্ছে। ২০১৪ সাল থেকে দেশে বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচন নিয়ে প্রায় ৪৫ টি ভোট হয়েছে। এর মধ্যে কংগ্রেস মাত্র পাঁচটি নির্বাচনে সাফল্য পেয়েছে। সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন। যেখানে পরাজয়ের কারণ নিয়ে আলোচনা করা হবে। কিন্তু ইতিমধ্যেই কংগ্রেসে বিদ্রোহ শুরু হয়েছে। এবং নির্বাচনে ভরাডুবির পরে তা প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে।
কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেছেন, ‘আমি হতবাক। একের পর এক রাজ্যে পরাজয় দেখে আমার বুকটা বিঁধে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের পুরো তারুণ্য ও জীবন দলকে দিয়েছি। আমি নিশ্চিত যে আমার সহকর্মীরা এবং আমি দীর্ঘদিন ধরে যে সমস্ত দুর্বলতা ও ত্রুটির কথা বলে আসছি, আশাকরি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এবার সেই সমস্ত দুর্বলতা এবং ত্রুটি খতিয়ে দেখবে।
দীর্ঘ এক টুইটে কংগ্রেসের আর এক নেতা ও সাংসদ শশী থারুর বলেছেন, “আমরা সবাই যারা জাতীয় কংগ্রেসে বিশ্বাস রাখি, তারা সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল দেখে খুবই দুঃখ পেয়েছি। কংগ্রেস যে ধরনের চিন্তাধারায় বিশ্বাসী, সময় এসেছে তা পরিবর্তন করার। আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক নেতৃত্বে এমনভাবে পরিবর্তন আনা উচিত, যা ফের একবার সাধারণ মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে। একটা বিষয় স্পষ্ট- যদি আমরা সাফল্য চাই, তবে পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী।” পাঁচ রাজ্যে পরাজয়ের পর কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী টুইট করে বলেছেন, “মানুষের সিদ্ধান্ত বিনয়ের সঙ্গে মেনে নিন। অভিনন্দন, যারা জয়ী হয়েছেন। আমি সমস্ত কংগ্রেস কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের তাদের কঠোর পরিশ্রম এবং উৎসর্গের জন্য ধন্যবাদ জানাই। আমরা এ থেকে শিক্ষা নেব এবং ভারতের জনগণের স্বার্থে কাজ করে যাব।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তরুণ কংগ্রেস নেতা বলেছেন, “আমরা বলতে পারি না যে বিজেপি হিন্দু-মুসলিম কার্ড ব্যবহার করে এবং মেরুকরণ করে নির্বাচনে জিতেছে। আমরা যদি শুধুমাত্র এই চিন্তা করতে থাকি, তাহলে আমরা নিজেদেরকে প্রতারিত করব। পাঞ্জাবের মুসলমানরা কোথায়? উত্তরাখণ্ড,মণিপুর, গোয়া কোথায় অবস্থিত? আমাদের মেনে নিতে হবে যে দলের নেতৃত্বের প্রতি জনগণ আস্থা হারিয়েছে, যার কারণে আমরা এই নির্বাচনে হেরেছি।