১৩ ঘণ্টা ঘুরেও চিকিৎসা মেলেনি। রেফার করা সত্ত্বেও একের পর এক হাসপাতাল রোগী নিতে অস্বীকার করেছে। শেষমেশ চোখের সামনে মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনায় জখম রোগীর। আর তাতেই ক্ষুব্ধ মৃতের পরিবার। পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় মৃতের পরিবার ও স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ও জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের আশ্বাসে এদিন সকাল ৮টা নাগাদ অবরোধ ওঠে।
আরও পড়ুন:কলকাতা বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার ১৬ কেজি হেরোইন, গ্রেফতার ৩
জানা গেছে, শনিবার দুর্ঘটনায় জখম হন দুর্গাপুরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের জব্বরপল্লির বাসিন্দা নির্মল মণ্ডল (৬২)। পরিবার সূত্রের খবর, দুপুর ১টা নাগাদ দোকান বন্ধ করে সাইকেলে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন নির্মল মণ্ডল। সেইসময় একটি বাইক সজোড়ে তাঁকে ধাক্কা মারে। দূরে ছিটকে পড়েন নির্মল মণ্ডল। গুরুতর চোট লাগে আহতর। এর পরই তড়িঘড়ি তাঁকে দুর্গাপুর সাব ডিভিশন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবারের দাবি, সাব ডিভিশন হাসপাতাল জানায় চোট গুরুতর। তাই সেখানে চিকিৎসা সম্ভব নয়। চিকিৎসকরা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর তাঁকে সেখান থেকে কলকাতার এসএসকেএম(SSKM) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে আর নিয়ে যায়নি আহত নির্মল মণ্ডলের পরিবার। বদলে তাঁকে বর্ধমানে অনাময় হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে খালি হাতে ফিরতে হয় তাঁদের। রক্তাক্ত নির্মল মণ্ডলকে দুর্গাপুর ফিরিয়ে আনার সময় কাঁকসার দু’টি মেডিক্যাল কলেজে-গৌরীদেবী ও সনকা যান তাঁরা। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখান। অভিযোগ, সেখানে বেড না থাকায় জখমকে ভর্তি নেয়নি। মেলেনি চিকিৎসাও। আর এই টানাপোড়েনের মাঝেই রাত তিনটে নাগাদ রাস্তাতেই মৃত্যু হয় জখম ব্যক্তির।
তার পরই দুর্ঘটনাস্থলে এসে রাস্তা অবরোধ করে মৃতের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে চলে অবরোধ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দুর্গাপুর, দুর্গাপুর-ফরিদপুর থানার পুলিশ। অবরোধের খবর পেতেই মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে ঘটনাস্থলে যান তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, “স্বাস্থ্যসাথী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্প। রাজ্য সরকারের প্রকল্প। এই কার্ড যারা ফিরিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা অন্যায় করেছেন। জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানাব।” জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক মহম্মদ ইউনিস জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে কথাও বলবেন। আশ্বাস পেয়ে সকালে সাড়ে আটটা নাগাদ অবরোধ তুলে নেন স্থানীয়রা।
