বিরোধীরা কি তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকায়? হাঁসখালি কাণ্ডে মন্তব্য সুখেন্দু শেখরের

মৃতার মা জবানবন্দি দিয়েছেন, সেই জবানবন্দি বিরোধীরা পেল কি করে? এর ফলে তদন্ত প্রভাবিত হবে, মন্তব্য তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ের

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের(CBI) ভূমিকা নিয়ে ফের সুর চড়াল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। সিবিআই তদন্তে বিজেপি সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় (Sukhendu Sekhar Roy)।

নেতাজি সম্পর্কিত আরও ফাইল থাকতে পারে জাপানে: কুণালের চিঠির জবাবে ইঙ্গিত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের

কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta high court) নির্দেশে নদিয়ার হাঁসখালিতে(Hanskhali) নাবালিকাকে গণধর্ষণ এবং মৃত্যুর ঘটনার মামলার তদন্তভার নিয়েছে সিবিআই। সেই রায় নিয়ে সরসারি কোনও প্রশ্ন না তুললেও সিবিআইয়ের যোগ্যতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে একগুচ্ছ সওয়াল তুলে দিলেন সুখেন্দু শেখর রায় (Sukhendu Sekhar Roy)।

তৃণমূল সাংসদ জানান, কোনও মামলায় বিচারপতি যখন রায় দেন, তখন তার কার্যকারণ লিখে দেন। আদালতের রায় নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই। তবে আমাদের মৌলিক প্রশ্ন রয়েছে। তা হল, সিবিআই কি সর্বরোগহর? এই কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সির উপর কি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিরও আস্থা আছে? নইলে কেন তিনি সম্প্রতি সিবিআইকে নিরপেক্ষ থাকার পাঠ পড়ালেন?

সুখেন্দু শেখর রায়ের কথায়, “হাঁসখালিতে যে ঘটনা ঘটেছে তা নিন্দনীয়। ঘটনা জানার পরই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল‌। ধর্ষণ কাণ্ডে তদন্তভার এখন সিবিআই হাতে দেওয়া হয়েছে। সিবিআই নিশ্চয়ই ব্যবস্থা করবে‌। তবে কিছু মানুষ এবং বিরোধীরা এই ঘটনার চুলচেরা বিশ্লেষণে নেমেছেন। আমাদের রাজ্যে গণতন্ত্র রয়েছে তাই এইসব করতে পারছে। বিরোধীরা নিজেদের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ভাবছে। আপনাদের কাছে কোনও তথ্য থাকলে দিন, প্রকাশ্যে আনুন। বিকৃত তথ্য কেউ পরিবেশন করবেন না। কেউ বলছে শ্মশানে পোড়ানো হয়েছে কেউ আবার বলছে মাঠে পোড়ানো হয়েছে। পরিবারের তরফ থেকে যখনই কথাগুলো বলা হননি, তখন আপনারা কেনো বলছেন? হাথরাসের ঘটনায় তো পুলিশ অভিযোগই নেয়নি। হাঁসখালিতে এই ঘটনা জানা মাত্রই পুলিশ ব্যবস্থা নেয়‌। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। কিন্তু বিরোধীরা পুলিশ প্রশাসনের দিকে এমনভাবে আঙুল তুলছেন তাদের মনোবল ভেঙে দেওয়া হচ্ছে।”

তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন। বলেন, “মৃতার মা জবানবন্দি দিয়েছেন সেই জবানবন্দি বিরোধীরা পেল কি করে? এর ফলে তদন্ত প্রভাবিত হবে। এই সিবিআইকে সুপ্রিম কোর্ট খাঁচাবন্দি তোতাপাখি বলেছিল। কত ঘটনার এখনও নিষ্পত্তি হয়নি‌। গণতন্ত্রে মানুষ প্রথম কথা এবং শেষ কথা। হাঁসখালির ঘটনায় দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার হোক, এটা আমরাও চাই। সিবিআই দ্রুত তদন্ত শেষ করুক। কিন্তু একটা রাজনৈতিক দল তদন্তকারী সংস্থা হয়ে যাচ্ছে নাকি! তারা আবার তদন্তকারী সংস্থাকে নির্দেশও দিচ্ছে। বাংলায় সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। পুলিশকে ব্যর্থ প্রমাণ করে তাদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছে বিরোধীরা। নির্বাচনে জিততে না পেরে ষড়যন্ত্র করে রাজ্যে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। এই নকশা অশুভ। অথচ ভাল করে দেখলে দেখা যাবে, কিছুদিন আগে মালদহে এক ধর্ষণের ঘটনায় এক মাসের মধ্যেই তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ৬ মাসের মধ্যে আদালতে তাদের শাস্তি ঘোষণাও হয়ে গিয়েছিল। এ ভাবে কুৎসা ও চক্রান্ত করে মানুষের থেকে আরও দূরে চলে যাচ্ছে বিজেপি। মানুষ বিচার করবে।”

এ রাজ্যে সিবিআই তদন্তের ব্যর্থতার খতিয়ান তুলে ধরে সুখেন্দু শেখর রায় বলেন, “সিবিআই যে রাজনৈতিক প্রভুদের শাসিত একটি ব্যর্থ তদন্ত প্রতিষ্ঠান তা বারেবারে প্রমাণিত হয়েছে। জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনার দায়িত্ব সিবিআই নিয়েছিল। দুর্নীতি না নাশকতা হয়েছিল, তা এখনও প্রমাণ করতে পারেনি। নেতাই গণহত্যা কাণ্ড ২০১১ সালে ঘটেছিল। ১১ বছর হয়ে গিয়েছে। ১১৬ জন সাক্ষী ছিল। কেবল ২৬ জনের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। বাকি ৯০ জনের জবানবন্দিও এখন নিতে পারেনি। তা হলে এবার ঐকিক নিয়মে হিসাব করুন, ২৬ জনের ৯০ জনের জবানবন্দি নিতে কত বছর লাগবে? তা ছাড়া বিনীত নারায়ণ মামলায় ১৯৯৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, সিবিআইকে স্বশাসিত সংস্থা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এর উপর কোনও প্রশাসনিক এক্তিয়ার থাকবে না। একমাত্র নজরদারির অধিকার থাকবে সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স কমিশনের।”

Pakistan : দায়িত্ব নিয়েই সরকারি কর্মীদের কাজের সময় বাড়িয়ে দিলেন নতুন পাক প্রধানমন্ত্রী

Previous articlePakistan : দায়িত্ব নিয়েই সরকারি কর্মীদের কাজের সময় বাড়িয়ে দিলেন নতুন পাক প্রধানমন্ত্রী
Next articleহাইকোর্টের গোলমাল থেকে নারী নির্যাতন- মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি রাজ্যপালের, আজই দেখা করার আর্জি