বিশ্বভারতীর ছাত্রাবাসে পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যু নিয়ে শুক্রবারও উত্তাল বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। পাঠভবনের মৃত ছাত্রের পরিবার গতকাল রাত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাড়ির সামনে অপেক্ষা করেও দেখা পাননি উপাচার্যের। কথা তো দূর, মৃত ছাত্রের মৃত্যুর বিষয়ে একটিও কথা বলেননি উপাচার্য। আর এতেই ফের বিতর্কে জড়িয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। মৃত ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ, ছাত্রের মৃত্যুর প্রসঙ্গে কোনও খবরই জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন:ফের দিল্লির রোহিণী আদালতে গুলি, কোর্ট চত্বরে আতঙ্ক
বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্বভারতীর ছাত্রাবাস থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র অসীম দাসের মৃতদেহ ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। মৃত ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ, খুন করা হয়েছে ওই ছাত্রকে। এনিয়ে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগও দায়ের করেছে পরিবার। তারপরই মৃত্যুর কারণ জানতে চেয়ে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে তাঁর বাড়িতে যান মৃত ছাত্রের পরিবার। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ একটিবারের জন্যেও বেরিয়ে আসেননি উপাচার্য। ঘটনাকে ঘিরে অবস্থান-বিক্ষোভে বসেছেন মৃতের পরিবারের লোকজন। বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের একাংশও মৃত ছাত্রের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
মৃত ছাত্রের বাবার অভিযোগ, তাঁর ছেলে অসীম দাসকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি প্রমাণ লোপাট ও ষড়যন্ত্রেও অভিযোগ করেছেন মৃত ছাত্রের বাবা। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। অসীমের বাবা ঘটনা সম্পর্কে বলছেন, ”কাল থেকে উপাচার্যের বাড়ির সামনে বসে আছি আমার মনের কিছু কথা আছে সেগুলো বলব। পাশাপাশি এই ঘটনা কিভাবে ঘটল সেই নিয়েও কথা বলতাম।” পড়ুয়াদের মধ্যে একাংশের বক্তব্য আমরা কোন বিশ্বভারতীতে পড়ছি, একটা মর্মাহত ঘটনা ঘটেছে অথচ কর্তৃপক্ষ দেখা করছে না। এই কর্তৃপক্ষকে ধিক্কার জানানো ছাড়া আর কোনও ভাষাই খুঁজে পাচ্ছি না।
প্রসঙ্গত, নানুর থানার বনগ্রামের বাসিন্দা অসীম দাস বিশ্বভারতীর পাঠভবনের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। উত্তরশিক্ষা ছাত্রাবাসে থেকে সে পড়াশোনা করত৷ দ্বিতীয় শ্রেনী থেকে সে পাঠভবনে হস্টেলে থেকে পড়াশুনা করে আসছে। গত এক সপ্তাহ আগে এই হস্টেল ছাত্রদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, অসীম তার বেশ কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে হস্টেলের একটি ঘরে থাকছিল। বৃহস্পতিবার সকালে অসীম-সহ তার বন্ধুরা ক্লাসে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। অন্য বন্ধুরা ৬.৪৫ গৌরপ্রাঙ্গনে প্রার্থনা করতে গেলেও অসীম যায়নি। তারপরই তার বন্ধুরা হস্টেলে ফিরে অসীমের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায়। তড়িঘড়ি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
