মঙ্গলবার কেঁপে উঠেছিল করাচি (Karachi),করাচি বিশ্ববিদ্যালয় (University of Karachi) চত্বরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় একটি গাড়িতে থাকা তিন চিনা নাগরিক-সহ চার জন নিহত হন। এরপরই ঘটনার সঙ্গে কোনও জঙ্গি সংগঠন জড়িত আছে কিনা তা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়ে যায়। পরবর্তীতে হামলার দায় স্বীকার করে বালুচিস্তান(balochistan) লিবারেশন আর্মি (BLA)। এক বিবৃতিতে দিয়ে তাঁদের পক্ষ থেকে বলা হয় আত্মঘাতী হামলা চালানোর জন্য মানববোমা হিসেবে কাজে লাগানো হয়েছিল শারি বালোচ (Shaari Baloch)ওরফে ব্রামশকে।

করাচি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিস্ফোরণ প্রসঙ্গে গতকাল থেকেই আলোচনায় উঠে এসেছেন বোরখা পরিহিতা এক মহিলা। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বোরখা পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের মুখে দাঁড়িয়ে তিনি। আর সেই সময় চিনা নাগরিকদের নিয়ে সাদা রঙের একটি ভ্যান বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রবেশ করে আর ঠিক তখনই হঠাৎ বিস্ফোরণ। কিন্তু কে এই মহিলা? আর কীভাবেই বা এই হামলার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হতে হল তাঁকে?

আত্মঘাতী মহিলার নামঃ- শারি বালোচ(Shaari Baloch)
বয়সঃ-৩০ বছর
বাড়িঃ- বালুচিস্তানের তুরবাতের নিয়াজার আবাদে
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ- বালুচিস্তান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণীবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ, এমফিল, আলামা ইকবাল মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, এমএড

শারি বালোচ ওরফে ব্রামশ এক দন্ত চিকিৎসককে বিয়ে করেছিলেন বলে জানা যায়, তাঁর দুই সন্তানও আছে। এক ছেলে ও এক মেয়ে। শারির বাবা একটি সরকারি সংস্থার অধিকর্তা ছিলেন। তিন বছর জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। শারির দেওর কলেজের অধ্যাপক। তাঁর কাকা লেখক, অধ্যাপক এবং মানবাধিকার কর্মী। জানা যায় শারির বাপের বাড়ি এবং শ্বশুরবাড়ি দুপক্ষের সবাই বেশ উচ্চশিক্ষিত। ছাত্রাবস্থায় বালোচ স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শারি। বছর দুয়েক আগে সংগঠনের আত্মঘাতী স্কোয়াড মজিদ ব্রিগেডে যোগ দিয়েছিলেন। যেহেতু শারির ছোট দুই সন্তান আছে তাই সেই কথা ভেবে তাঁকে অন্য কোনও স্কোয়াড বেছে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বিএলএ-র তরফে। কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। বরং আত্মঘাতী স্কোয়াডেই যে তিনি যোগ দিতে চান, সে কথা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে জানিয়েছিলেন।

বিএলএ-র আত্মঘাতী স্কোয়াড মজিদ ব্রিগেডের নিয়ম অনুযায়ী শারি গত দু’বছর ধরে মজিদ ব্রিগেডের বিভিন্ন শাখার সঙ্গে কাজ করেন । এই সময়ের মধ্যে আত্মঘাতী হামলা চালানোর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছিলেন।মাস ছয়েক আগে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে শারি জানান, আত্মঘাতী হামলার জন্য তিনি পুরোপুরি প্রস্তুত। তার পরই তাঁকে সরাসরি আত্মঘাতী স্কোয়াডের অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা পর বিএলএ এক বিবৃতি জারি করে জানায়, “মজিদ ব্রিগেডের ফিদায়েঁ শারি বালোচ ওরফে ব্রামশ তাঁর দায়িত্ব সফল ভাবে পালন করেছেন।” মূলত চিনকে সতর্ক করল বিএলএ। মুখপাত্র জিয়ান্দ বালোচ বলেন, হুঁশিয়ারি দেন, পাকিস্তানের সেনাকে বালুচিস্তানে গণহত্যা চালানোয় মদত জোগাচ্ছে চিন। শুধু তাই নয়, চিন বালুচিস্তানে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে। তাদের এই ধরনের কর্মকাণ্ডকে কোনও ভাবেই বরদাস্ত করবে না বিএলএ(BLA)।
