মৃত্যুর পরেও জীবন: অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নিয়ে নজির চিকিৎসকের পরিবারের

মৃত্যুর পরেও রাজ্যের চিকিৎসা জগতে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করলেন, বলছেন চিকিৎসক মহল। তাঁদের কথায়, সংযুক্তার স্বামী অত্যন্ত উদার মনের মানুষ, পাশাপাশি সংযুক্তা নিজেও অত্যন্ত জনদরদী ছিলেন। তাই তাঁর পরিবারের এহেন সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানিয়েছে চিকিৎসক মহল।

ডাক্তার মানে তিনি মানুষ নন, তিনি ভগবান। ঠিক এই বিশ্বাস নিয়েই মানুষ রোগ হলে আগেই ছুটে যান ডাক্তারের কাছে। এবার সেই ডাক্তার সত্যিই প্রমাণ করলেন তিনি ভগবান। মৃত্যুর পরেও তাই জীবন দান করে গেলেন। এক বা দুই নয় তিনজনকে। মৃত্যুর পরেও তিনজনকে নতুন জীবন দিয়ে যাচ্ছেন অ্যানাস্থেশিয়া বিশেষজ্ঞ (anesthesia specialist)সংযুক্তা শ্যাম রায় (Sanjukta Shyam Roy)। মৃত চিকিৎসকের পরিবারকে কুর্নিশ জানিয়েছে চিকিৎসক মহল।

চিকিৎসাবিজ্ঞানে আরও এক অনন্য নজির গড়ল শহর কলকাতা (Kolkata)। মঙ্গলবার মহানগরীর এক বেসরকারি হাসপাতালে ব্রেন ডেথের (Brain Death)পর অ্যানাস্থেশিয়া বিশেষজ্ঞ সংযুক্তা শ্যাম রায়(Sanjukta Shyam Roy) মরণোত্তর লিভার ও দু’টি কিডনি দিয়ে নতুন জীবন দিলেন কলকাতা ও লাগোয়া শহরতলির তিন বাসিন্দাকে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত শনিবার তাঁর মারাত্মক কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট (cardiac arrest)হয়। বেশ কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে যায় হৃদযন্ত্র। পরে তা সচল হলেও রক্ত সরবরাহের স্বাভাবিক হয়নি।এমনকি মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত পরিমানে রক্ত পৌঁছনো বন্ধ হয়ে যায় । সোমবার সকালেই চিকিৎসকরা বুঝে যান যে এই রোগীর ব্রেন ডেথ হওয়া সময়ের অপেক্ষা মাত্র। এরপরই তাঁর ইচ্ছে অনুযায়ী স্বামী অঙ্গদানের(Organ donation)ব্যাপারে সম্মতি দিয়ে দেন।

ধর্ষণের অভিযোগ জানাতে থানায় যেতেই নাবালিকাকে ধর্ষণ করল পুলিশ

হাসপাতাল সূত্রে খবর যেহেতু সংযুক্তা শ্যাম রায় এর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় তাই তাঁর হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন সম্ভব নয়।এরপরই লিভার ও দু’টি কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য গ্রহীতার খোঁজ শুরু হয়। সংযুক্তা যে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন সেখানেই এক রোগীর শরীরে লিভার প্রতিস্থাপিত হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দুটি কিডনির মধ্যে একটি এসএসকেএমের এক রোগী এবং অপর একটি কিডনি দমদমের এক বেসরকারি হাসপাতালের রোগী পাবেন বলে পরিবার সূত্রে খবর। কিডনি প্রতিস্থাপনের কাজের সঙ্গে ডা. প্রতিম সেনগুপ্ত যুক্ত থাকবেন বলে সূত্রের খবর। এখানেই শেষ নয়, চিকিৎসকের কর্নিয়া থেকে দৃষ্টি পাবেন এক জন্মান্ধ। তাই বেসরকারি চক্ষু হাসপাতাল এই কর্নিয়া সংগ্রহ করেছে।

রিজিওনাল অর্গ্যান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশন (ROTO) সূত্রে জানা গিয়েছে, গভীর রাতে তাঁর মরণোত্তর অঙ্গ আহরণ (রিট্রিভ্যাল) ও সংরক্ষণের (হার্ভেস্টিং) প্রক্রিয়া শুরু হয়। আজ, বুধবার গ্রহীতাদের শরীরে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অপারেশন করা হবে। চিকিৎসক হিসাবে নিজের কর্মজীবনে অসংখ্য মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন। মৃত্যুর পরেও রাজ্যের চিকিৎসা জগতে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করলেন, বলছেন চিকিৎসক মহল। তাঁদের কথায়, সংযুক্তার স্বামী অত্যন্ত উদার মনের মানুষ, পাশাপাশি সংযুক্তা নিজেও অত্যন্ত জনদরদী ছিলেন। তাই তাঁর পরিবারের এহেন সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানিয়েছে চিকিৎসক মহল।




Previous articleমোলোকাই চ্যানেল জয়ী কালনার “জলপরী” সায়নীকে শুভেচ্ছা রাজ্যের মন্ত্রীর
Next articleমাঝ আকাশে বিকল বিমানের ইঞ্জিন! ফের অন্ডালগামী বিমানে দুর্ঘটনা