‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’ ‘লতাকণ্ঠী’ রাণু মণ্ডলের(Ranu Mondal)অবস্থা এখন এমনই। দু’বেলা ঠিকমতো আহার জোটে না তাঁর। সকাল থেকে বড়জোর এক কাপ লিকার চা সঙ্গে বিস্কুট(Biscuit)। দুপুরে কোনদিন পাঁচ টাকার এক প্যাকেট চাউমিন সেদ্ধ( Boiled Noodles)। বেশিরভাগ রাতই কাটে তাঁর অনাহারে। অথচ তাঁকে নিয়ে সব সময় ভাইরাল ভিডিয়ো। ইউ টিউবে তাঁর লক্ষ অনুরাগী।তাঁর গান শুনতে উন্মুখ জনতা।
তিন বছর আগে লতা মঙ্গেশকরের হিট গান গেয়ে হঠাৎ রানাঘাট স্টেশনের এই প্রৌঢ়া কোটি কোটি মানুষের কাছে ভাইরাল হয়েছিলেন। তাঁর আগে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন নির্বাহ করতেন তিনি। তাঁর প্রতিভা নজরে আসার পরেই রাতারাতি বিখ্যাত হন রাণু।গায়ক পরিচালক হিমেশ রেশমিয়ার পরিচালনায় একটি গানের প্লে ব্যাক করেন তিনি। বদলে যায় রানুর জীবন। দু একটি অ্যাওয়ার্ড ফাংশনেও দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের সোশ্যাল মিডিয়া তাকে সেলিব্রিটি করে তুললেও এখন প্রায় নিঃস্ব তিনি ।
আরও পড়ুন:সরকারি কাজে অনিয়ম: অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নাইডুর বিরুদ্ধে FIR
খ্যাতির বিড়ম্বনাময় এই জীবন নিয়ে বীতশ্রদ্ধ তিনি। জীবনের তীব্র ক্ষোভ তাঁর সঙ্গে মানুষের প্রতিও। রানুর বক্তব্য সবাই ভিডিয়ো করতে আসে। গান শোনানোর জন্য অনুরোধ করে, কিন্তু কেউ খাবার দিতে আসেনা। পেটে খিদে থাকলে গান বেরবে কিভাবে!ফেসবুক, ইউটিউবের দৌলতে বিখ্যাত রানুর দিন কাটছে অনাহারে, এর চেয়ে মর্মান্তিক কী হতে পারে?
বাথরুম নেই বাড়ির মধ্যে। জলের সংস্থান বলতে বাড়ির বাইরে একটা মরচে পড়া টিউবওয়েল। কিন্তু বেরিয়ে জল খেতে পারেন না রাণু। চব্বিশ ঘণ্টা গেটে তালা মেরে রাখেন। কারণ দরজা খুললেই মোবাইল নিয়ে ঢুকে পড়েন ইউ টিউবাররা। সবসময় যে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারেন তাও নয়। ইউটিউবারদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে একেবারে মারমুখী হয়ে ঝাঁটা নিয়ে তেড়ে যান। থুতু দিয়ে দেন গায়ে। প্রতিবেশীরা ভাবেন, ‘মানসিক ভারসাম্য ঠিক নেই।’ আড়ালে-আবডালে তাঁকে পাগল বলেন। সত্যি কি পাগল তিনি?