কৈশোরের প্রেমকে স্বীকৃতি দিতে প্রাণের চেয়েও প্রিয় গান ছেড়ে সেলসের চাকরি করেছিলেন কেকে

তাঁর প্রথম প্রেম ছিল গান। কিন্তু জীবনসঙ্গিনীর দায়িত্ব গ্রহণ করতে গিয়ে সেই গানকেই  দূরে সরিয়ে রাখতে হয়েছিল জীবন থেকে। যে কোনো মূল্যে একটা চাকরি যোগাড় করতেই হবে। তাই আর কিছু না পেয়ে সেলসের চাকরিতেই যোগ দিয়েছিলেন  তিনি। তিনি কেকে। সদ্যপ্রয়াত আসমুদ্র হিমাচল মুগ্ধ করে রাখা সঙ্গীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুনাথ । যাঁর গলায় জীবন্ত হয়ে উঠেছিল একের পর এক ভালোবাসার গান। হিন্দি রোমান্টিক গানের প্লে-লিস্ট অসম্পূর্ণ ছিল কেকে-কে ছাড়া। সেই কেকে-কেই এক সময় নিজের এক ভালোবাসার মানুষকে কাছে পেতে দূরে ঠেলে দিতে হয়েছিল আরেক ভালবাসা গানকে।

কৈশরের প্রেমকে বিয়ে করতে গান ছেড়ে সেলসের চাকরি নিয়েছিলেন তিনি, যদিও খুব অল্প সময়ের জন্যই। যে কেকে তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মঞ্চে পারফর্ম করে গিয়েছেন, আদ্যোপান্ত গান নিয়ে বাঁচতেন, গানে ডুবে থাকতেন যে মানুষটা, সেই কেকে-ই নিজের কৈশোরের ভালোবাসাকে নিজের করে পেতে দূরে ঠেলে দিয়েছিলেন গান নিয়ে কেরিয়ারকে।

১৯৯১ সালে জ্যোতি লক্ষ্মী কৃষ্ণাকে বিয়ে করেন কেকে। বলিউডে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার অনেক আগে, টিনএজ থেকেই জ্যোতির সঙ্গে কেকে-র প্রেম। কিন্তু ছোটবেলার সুইটহার্টকে বিয়ে করার জন্য শর্ত দিয়েছিলেন জ্যোতির বাবা-মা।

কেকে তখন বেকার। কৃষ্ণকুমার কুনাথ তখনও ‘কেকে’ হয়ে ওঠেননি। এদিকে দীর্ঘদিনের প্রেমিকাকে বিয়ে করতে গেলে আগে চাকরি পেতে হবে। এমনই শর্ত দিয়েছিলেন কেকে-র স্ত্রী জ্যোতির বাবা-মা। আর তারপরই টিনএজ সুইটহার্টকে বিয়ে করতে গানটাই ছেড়ে দিলেন কেকে!

যে গান নিয়ে কেরিয়ার গড়ার স্বপ্ন বুনেছিলেন, ভালোবাসার সেই গান ছেড়ে সেলসের চাকরি নেন কেকে। যদিও ৩ মাসের জন্য। তারপর সেই চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। ধীরে ধীরে শুরু হয় গান নিয়ে বলিউডে পথ চলা। এক টিভি শোয়ে সাক্ষাৎকারে এসে নিজেই একথা জানিয়েছিলেন সবার প্রিয় কেকে।

জ্যোতিকে বিয়ের ৮ বছরের মাথায় ১৯৯৯-তে কেকে-র প্রথম অ্যালবাম ‘পল’ রিলিজ হয়। ২ দশক পেরিয়েও যে গানে মজে আট থেকে আশি। তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি কেকে-কে। মঙ্গলবার কলকাতার নজরুল মঞ্চে এই গান-ই ছিল তাঁর শেষ গান।

কেকে-জ্য়োতির ‘ভালোবাসার’ দাম্পত্য ছিল তাঁর গানের মতই সুরেলা, মন ছুঁয়ে যাওয়া এক স্নিগ্ধতা। কেকে নেই। একথা মানতে পারছেন না, বিশ্বাস-ই করতে পারছেন না স্ত্রী জ্যোতি ও তাঁদের দুই সন্তান। মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠান শেষে হঠাৎ শরীর খারাপ। তারপরই হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় সঙ্গীত শিল্পী কেকে (KK)-কে।

 

Previous articleআর্থিক তছরুপ মামলায় এবার সোনিয়া-রাহুলকে তলব ইডির
Next articleআগামী ১৫ আগষ্ট  ইন্ডিয়া গেটে নেতাজির ৩০ ফুট মূর্তি উন্মোচনে প্রধানমন্ত্রী