স্বামী প্রথম থেকেই চাননি যে স্ত্রী চাকরি করুক। সে কথা একাধিকবার বলেওছেন স্ত্রীকে। কিন্তু তার পরিণতি যে এমন হতে পারে তা বোধহয় কেউই ভাবেননি। আর এই সময়ে যদি কেউ সরকারি চাকরি (Government Job) পান তবে তো তা ছাড়ার প্রশ্নই ওঠে না। রীতিমতো পরীক্ষা দিয়ে সরকারি হাসপাতালে (Government Hospital) নার্সের চাকরি পেয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের রেণু খাতুন (Renu Khatun)৷
সেই চাকরিই শেষপর্যন্ত কাল হল।চাকরিরত স্ত্রী স্বামীকে ছেড়ে চলে যাবে সেই আশঙ্কায় স্ত্রীর হাত কেটে দিল স্বামী৷ পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে এই নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে৷ সরকারি নার্সের চাকরি পাওয়ায় কব্জি থেকে স্ত্রীর ডান হাত কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে ৷ অভিযোগ, বিচ্ছেদের আশঙ্কাতেই স্বামী এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন৷ শনিবার রাতে কেতুগ্রামের চিনিসপুরে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে৷ ঘটনার পর থেকেই পলাতক ওই মহিলার স্বামী শের মহম্মদ শেখ ৷
ইতিমধ্যেই কেতুগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ওই মহিলার দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসা চলছে৷ মহিলার পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম থেকেই মেধাবী ছাত্রী ছিলেন রেণু খাতুন৷ তাঁর স্বপ্ন ছিল সেবিকা হওয়ার৷ এ জন্য নার্সিং ট্রেনিংও নেন তিনি৷ দিন কয়েক আগেই তিনি জানতে পারেন নার্সের পরীক্ষায় তিনি সফল হয়েছেন৷ এর পরেই তাঁর স্বামীর মনে একটি বদ্ধমূল ধারণা তৈরি হয় যে, স্ত্রী যদি সরকারি চাকরিতে যোগ দেন, তাহলে তাঁকে ছেড়ে চলে যাবেন৷ এমনকী তাঁর বন্ধুরাও তাঁকে সেই কথাই বোঝায়৷ পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বন্ধুদের সঙ্গেই গোটা ঘটনার পরিকল্পনা করেছিল শের।
তদন্তে উঠে এসেছে যে শনিবার গভীর রাতে রেণু যখন ঘুমোচ্ছিলেন, তখন তাঁর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাঁর ডান হাতের কব্জি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে দেন স্বামী৷ এর পর তাঁকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ কিন্তু রেণুর হাতের কব্জিটা বাড়িতেই লুকিয়ে রাখেন তাঁর স্বামী৷তার ধারণা ছিল যে কাটা কব্জি লুকিয়ে রাখলে চিকিৎসকরা কোনও ভাবেই সেই হাত জোড়া লাগাতে পারবেন না৷এমনকি, শের মহম্মদের আরও ধারণা হয়েছিল যে স্ত্রীর হাত কেটে দেওয়া হলে তিনি আর সরকারি চাকরি পাবেন না৷ যে হাত দিয়ে মানুষের সেবা করবেন বলে রেণু নার্সের পরীক্ষা দিয়েছিলেন, সেই হাতই স্বামী কেটে নেয় ৷এই মুহূর্তে রেণুর স্বামী ও তাঁর গোটা পরিবার পলাতক৷ বাড়িতে তালা ঝোলানো রয়েছে ৷