ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত গোটা অসম(Assam)। কার্যত জলের তলায় চলে গিয়েছে গোটা রাজ্য। খাদ্য-পানীয়ের অভাব চরম আকার ধারণ করেছে। নেই মাথা গোজার ঠাঁই। মানুষের হাহাকার এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে পেট্রোলের দামকেও ছাপিয়ে গিয়েছে পানীয় জলের দাম। অসমের শিলচরের মতো জায়গায় এক লিটার পানীয় জল(Drinking Water) বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। এদিকে রাজ্যের ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও হুঁশ নেই অসমের মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি ব্যস্ত সরকার ফেলার পরিকল্পনা নিয়ে মহারাষ্ট্র(Maharastra) থেকে আসা শিবসেনার(Shivsena) বিধায়কদের আতিথেয়তায়। যদিও চরম বিতর্কের মুখে পড়ে রবিবার শিলচরে ঢু মেরে আসেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা(Himant biswasharma)। ব্যাস ওইটুকুই। মানুষের সমস্যা সমাধানে এখন পর্যন্ত কোনও উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি তাঁকে।
গত ২০ জুন থেকে শিলচরে বন্যা শুরু হয়েছে। টানা ছ’দিন জলের নীচে কাছাড়ের জেলার এই সদর। শুধু কাছাড় নয়, রাজ্যের ২৭টি জেলা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। দুর্গতের সংখ্যা ২৫ লক্ষ ১০ হাজার। রাজ্যের বেশিরভাগ নদীর জলস্তর নামতে শুরু করলেও ব্রহ্মপুত্র ও কোপিলি নদীর জল ধুবরি ও নগাঁওয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। এখন পর্যন্ত এই বন্যার জেরে মৃত্যু হয়েছে ১২২ জনের। দেহসৎকারের জন্য শ্মশান গুলিও জলের নিচে। ফলে শেষকৃত্যের জন্য ছোট ডিঙিতে মৃতদেহ চাপিয়ে ঘুরতে হচ্ছে সধারন মানুষকে। উদ্ধারকার্যে নামেছে সেনাবাহিনী। তাদের দৌলতে যেটুকু যা ত্রাণ সামগ্রী মানুষের কাছে পৌছচ্ছে তা একেবারেই যথেষ্ট নয়। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, বাড়িঘর জলে ডুবে গিয়েছে। এককোমর জল ভেঙে বাইরে বেরিয়ে খাবার জল কিনতে হচ্ছে। ২০ টাকা দামের এক বোতল জল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। কোথাও আবার এক লিটার জল কিনতে হচ্ছে ১৫০ টাকা দিয়ে। যা পেট্রোলের থেকেও বেশি দামি হয়ে উঠেছে।
তবে রাজ্যের এহেন ভয়ঙ্কর অবস্থার মাঝেও নির্বিকার অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। দায়সারা ভাবে রবিবার বন্যাবিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করে এলেও জানা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী এখন অত্যন্ত ব্যস্ত মহারাষ্ট্র নিয়ে। গুয়াহাটির হোটেলে শিবসেনা বিধায়কদের আতিথেয়তার যাতে কোনও ত্রুটি না হয় সে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন তিনি। কড়া নিরাপত্তা বসানো হয়েছে হোটেল চত্বরে। কোনও সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে দেখলে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।