রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনা ইতিবাচক, জানাল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল

ব্রাত্য বসুর নেতৃত্বে এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন, শশী পাঁজা, তাপস রায়, কুণাল ঘোষ, ফিরোজা বিবি, সায়নী ঘোষ, অর্জুন সিং ও বিশ্বজিৎ দেব। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে প্রায় দু'ঘন্টা বৈঠক করে তাঁর কাছে ডেপুটেশন দেয় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল

“শুভেন্দু অধিকারী ব্ল্যাকমেল করে আমার কাছ থেকে টাকা নিত। একবার নয় অনেকবার। কাঁথিতে ডেকে পাঠাতো।” গত শুক্রবার সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনের সংবাদমাধ্যমের সামনে এমন বিস্ফোরক স্বীকারোক্তির পর তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এই মর্মে তিনি আদালতকেও চিঠি দিয়েছেন সুবিচার চেয়ে। আজ, মঙ্গলবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনের থেকে প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেল করে টাকা নেওয়ার ইস্যুতে অভিযোগ জানাতে এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের হস্তক্ষেপ দাবি করে রাজভবনে যায় তৃণমূলের ৮ সদস্যের প্রতিনিধিদল।

ব্রাত্য বসুর নেতৃত্বে এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন, শশী পাঁজা, তাপস রায়, কুণাল ঘোষ, ফিরোজা বিবি, সায়নী ঘোষ, অর্জুন সিং ও বিশ্বজিৎ দেব। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে প্রায় দু’ঘন্টা বৈঠক করে তাঁর কাছে ডেপুটেশন দেয় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল।

রাজভবন থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ব্রাত্য বসু বলেন, “দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে মাননীয় রাজ্যপালের সঙ্গে। আমরা ওনাকে আমাদের দাবি নিয়ে আলোচনার পর
স্মারক লিপি পেশ করেছি। তিনি সকলের রাজ্যপাল। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন সমস্ত কিছু পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। এদিন অনেক আলোচনা হয়েছে। উনিও কিছু বিষয় বলেছেন। আমরাও বলেছি। আলোচনা ফলপ্রসূ।”

রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘ আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে। উৎসাহের সঙ্গে আলোচনা করেছেন উনি। সব বাইরে বলা সম্ভব নয়। যুক্তি, বিশ্লেষণ, পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে এই বৈঠক হয়েছে।”

এদিনের বৈঠক নিয়ে তিনি আরও বলেন, “সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেন আদালতকে দুটি চিঠি দিয়েছেন। সেখানে তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের নাম উল্লেখ করে দিয়েছিল। বিচার চেয়েছেন। কিন্তু তাদের মধ্যে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। একজন আবার বিজেপিতে যোগ দিয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। বিজেপি ওয়াশিং মেশিন। বিজেপি অফিসে স্ক্রিন টাঙিয়ে দেখানো হয়েছে নারদার ভিডিও। সেখানে এমন একজনকে দেখা গিয়েছিল, যে বিজেপিতে গিয়েছে তদন্ত এড়াতে। অর্থাৎ, কোনও ব্যক্তির বিষয় নয়। যারা বিজেপিতে যাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সি ব্যবস্থা নিচ্ছে না। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির অপপ্রয়োগ হচ্ছে রাজনৈতিক ভাবে। সেটা আমরা রাজ্যপালকে জানিয়েছি।শুভেন্দু একজন ব্ল্যাকমেলার, চোর, ক্রিমিনাল। সে ঘনঘন রাজ্যপালের কাছে আসে। রাজ্যপালের বোঝা উচিত, উনি কার সঙ্গে কথা বলেন। কাকে সময় দেন। সেই বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে তাঁর কাছে।”

তৃণমূল নেতা অর্জুন সিং রাজভবন থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে তোপ দেগে বলেন, “বিজেপি গোটা দেশে রাষ্ট্রবিরোধী আচরণ করছেন। মহারাষ্ট্রর ঘটনা তার জ্বলন্ত উদাহরণ। সেখানে যা হচ্ছে সেটা ভারতের সংবিধান বিরোধী। আর পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির জনভিত্তি নেই। শুভেন্দু বলছে ২০২৪ সালে সরকার ফেলে দেব। শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য গণতন্ত্র বিরোধী। বাংলা বিরোধী কথাবার্তা।”

এর আগে গতকাল, সোমবার শুভেন্দুকে গ্রেফতারের দাবিতে সল্টলেক সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরের বাইরে একটি বিশাল সভার আয়োজন করে তৃণমূল ছাত্র-যুব সংগঠন। একই ইস্যুতে কাঁথি ও হলদিয়াতেও মিছিল সমাবেশ করে তৃণমূল।


Previous articleপদ্মা সেতুর উপর দিয়ে ছুটছে কলকাতা-ঢাকা রুটের বাস পরিষেবা ‘সৌহার্দ্য’
Next articleঅগ্নিপথের ললিপপ আসলে বিরাট দুর্নীতি: আসানসোল থেকে বিজেপিকে তোপ মমতার