Monday, November 24, 2025

Tarun Majumdar: সেলুলয়েডে রবীন্দ্রগানকে অপরিহার্য করেছিলেন তরুণ মজুমদার

Date:

Share post:

বাংলা সেলুলয়েডের সেরা গল্পকারদের অন্যতম পরিচালক তরুণ মজুমদার (Tarun Majumdar)। সাহিত্যকে অবলম্বন করে এগিয়েছে তাঁর জীবন। ৯২ বছরে তাঁর প্রয়াণ শুধু বাংলা ছবিকে নিঃস্ব করে দিল তা নয়, নতুন প্রতিভা তুলে নিয়ে আসার প্রক্রিয়াকেও ধাক্কা দিয়ে গেল । সিনেমা মানে চরিত্রের গল্প নয়, গানের কলিকেও মুখ্য চরিত্র করে তুলতে পারতেন তিনি। রবীন্দ্র সঙ্গীতকে বাংলা ছবিতে কতভাবে ব্যবহার করা যায় তারও একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেখিয়েছিলেন তিনি । সরল, সাধারণ , বাস্তব ধারার চিত্রনাট্য তৈরি করতেন তিনি। তাঁর সৃষ্টিতে বাঙালি আজও খুঁজে পায় ভীষণ চেনা পরিচিত গ্রাম বাংলা আর গ্রাম্য জীবন দর্শনকে। আর গান ছিল তাঁর সিনেমার অবিচ্ছেদ্য অংশ। যেন রবীন্দ্রসঙ্গীতকে (Rabindra sangeet)বাংলা সিনেমার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ করে তুলেছিলেন তরুণ মজুমদার (Tarun Majumdar)।

‘জুটি’ কি কেবল নায়ক-নায়িকারই হয়? জুটি হতে পারেন চিত্রপরিচালক এবং সঙ্গীত পরিচালকও। যেমন ছিলেন তরুণ মজুমদার-হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (Tarun Majumdar – Hemanta Mukherjee)। বাংলা ছবিতে গানের গুরুত্বকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে গেছিলেন তরুণ – হেমন্ত। দুজনের যুগলবন্দী ,দীর্ঘ ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে যে যৌথযাত্রা, চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তার দ্বিতীয় নজির খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তনুবাবু (এই নামেই তরুণ পরিচিত ছিলেন সিনেমাজগতে) ছবির মুড অনুযায়ী রবীন্দ্রসঙ্গীতের ব্যবহারে অসামান্য দক্ষ ছিলেন। ‘দাদার কীর্তি’, ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’, ‘আলো’, ‘চাঁদের বাড়ি’, ‘ভালোবাসার বাড়ি’ প্রভৃতি ছবিতে তিনি একের পর এক রবীন্দ্রসঙ্গীতের উপযুক্ত প্রয়োগ ঘটিয়েছিলেন। ‘পলাতক’ ছবি থেকেই তরুণ-হেমন্তর একসঙ্গে যাত্রার সূচনা। যদিও এর আগে ‘যাত্রিক’-এর ব্যানারে ‘চাওয়া পাওয়া’ ছবির পরিচালক (শচীন ও দিলীপ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে), তখন নচিকেতা ঘোষের সুরে সেরা সময়ের হেমন্ত গেয়েছিলেন, ‘যদি ভাবো, এ তো খেলা নয়…।’বাংলায় ‘বালিকা বধূ’- ছবিটি হিন্দিতেও করেন । কালজয়ী গান ‘বড়ে আচ্ছে লাগতে হ্যায়’ গেয়ে অভিষেকেই ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন অমিত কুমার। সেই ছবির সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন রাহুল দেববর্মন (R D Burman)। ছবিতে যখন হেমন্ত-কণ্ঠে শোনা যায়, ‘জীবনপুরের পথিক রে ভাই’,বা ‘দোষ দিয়ো না আমায় বন্ধু’, তখন বুঝতে পারা যায়, পরিচালকের সঙ্গে কত সুন্দর বোঝাপড়া ছিল সঙ্গীত পরিচালকের আর নির্বাচন কতখানি সার্থক ছিল। এমনকি পূজা পর্যায়ের গানকেও প্রেম পর্যায়ের গান হিসেবে ব্যবহার করেছিল এই জুটি ৷ হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের পরে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে অরুন্ধতী হোম চৌধুরী এবং শিবাজী চট্টোপাধ্যায়কে ব্যবহার করেছিলেন পরিচালক । কখনও লোক সঙ্গীতের ব্যবহার , কখনও পুরোদস্তুর আধুনিক, আবার কখনও রবীন্দ্রনাথের গান, দ্বিজেন্দ্রগীতি, এমনকি, খেউড় গানের সুর মিলিয়ে সুপারহিট হয়ে ওঠে তরুণ আর হেমন্ত। কালিদাসের সংস্কৃত স্তোত্রকে সুরেলা ভঙ্গিমায় নিয়ে আসেন ‘আলোর পিপাসা’ আবার দেহাতি সুরের ম্যাজিক ‘সংসার সীমান্তে’। ‘দাদার কীর্তি’ ছবিতে নবীন নায়ক তাপস পালের ঠোঁটে দু’টি রবীন্দ্রগান ওই ‘ছবির গান’ হয়েই দীর্ঘ দিন থেকে যায় বাঙালি-মানসে। ‘বালিকা বধূ’, ‘নিমন্ত্রণ’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘খেলার পুতুল’ – সবেতেই গানের ক্যারিশমা। এবার এক অন্যজগতে নতুন করে গানের ‘আলো’ ছড়িয়ে দিতে বিদায় নিলেন তরুণ ।



spot_img

Related articles

পিসেমশাই-বৌমা সম্পর্কে স্বামীকে মারতে সুপারি কিলার! বরাহনগর গুলিকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য

অবৈধ সম্পর্কের জেরেই বরাহনগরে গুলি চলেছিল, তদন্তে উঠে এলো এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। স্বামীকে খুন করার জন্য সুপারি কিলার...

দূষণে দমবন্ধ রাজধানীর! বিদেশ সফর নিয়ে মোদিকে কটাক্ষ তৃণমূলের

রাজধানী দিল্লিতে ভয়াবহ দূষণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখেল। সমাজমাধ্যমে তাঁর কটাক্ষ,...

৪৪ বিধানসভার ভোটার মায়ারানী? SIR স্ক্যানের পর হইচই পাণ্ডবেশ্বরে

বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার মাঝেই পাণ্ডবেশ্বরে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। এনুমারেশন ফর্মের কিউআর কোড স্ক্যান করতেই দেখা...

ত্রিপুরায় টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি-র নয়া পরিকাঠামো উদ্বোধন ও শিলান্যাস, আপ্লুত সত্যম

শিক্ষা জগতে অনন্য ছাপ রেখেছে টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি। বাংলায় তো বটেই, বাংলার বাইরেও বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে এর শাখা।...