শহরের হোটেলে উঠেছিলেন ঝাড়খণ্ডের অভিযুক্ত বিধায়করা, গ্রেফতার হেমন্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা আইনজীবীও

হাওড়ার পাঁচলা থেকে টাকা উদ্ধারের (Money Rescue) ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এলো। গত শনিবার কলকাতার সদর স্ট্রিটের একটি হোটেলে এসে ওঠেন ঝাড়খন্ডের ৩ কংগ্রেস (Congress MLA) বিধায়ক। হোটেলের ১০৬ নম্বর ঘরে দুপুর ৩টে ৮ মিনিট নাগাদ ঢোকেন অভিযুক্তরা। তবে শুধু ৩ বিধায়কই নয়, তাঁদের সঙ্গে হোটেলের ঘরে ছিলেন আরও একজন। এরপর দুপুর ৩টে ১৪ মিনিটে হোটেল ছেড়ে বেরিয়ে যায় ৪ জন। হোটেলে কোনও এন্ট্রি না করেই ১০৬ নম্বর ঘরে তাঁরা পৌঁছে যায় বলে খবর। প্রশ্ন উঠছিল নগদ ৪৯ লক্ষ টাকা ঝাড়খন্ডের বিধায়কদের কাছে কীভাবে এলো? সিআইডির (CID) অনুমান, ওই চতুর্থ ব্যক্তিই পরে টাকার ব্যাগ নিয়ে হোটেলে আসে। বিধায়কদের সঙ্গী ওই চতুর্থ ব্যক্তির নাম কুমার সঞ্জয়।

এদিকে ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের (Hemant Soren) বিরুদ্ধে মামলকারীকেই কলকাতা থেকে গ্রেফতার করলো পুলিশ। হেমন্তের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা বা পিআইএল (PIL) দায়ের করেন ওই আইনজীবী। রবিবার মধ্য কলকাতার একটি শপিং মল থেকে ওই আইনজীবীকে গ্রেফতার (Arrest) করে লালবাজারের গুণ্ডাদমন শাখা ও হেয়ার স্ট্রিট থানার আধিকারিকরা। ধৃত ওই আইনজীবীর নাম রাজীব কুমার। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর থেকেও বেশ কিছু টাকা উদ্ধার হয়েছে।

এরমধ্যেই বিস্ফোরক অভিযোগ করেন, সদর স্ট্রিটের ওই হোটেলের ম্যানেজার। তিনি জানান, হোটেলে এসে শৌচাগার ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন অভিযুক্ত বিধায়করা। তবে মালিকের পরিচিত হওয়ায় তাঁরা হোটেলের রেজিস্টারে (Hotel Register) নাম লেখায় নি। সিআইডি জানিয়েছে, হোটেল থেকে বেরনোর পর কাছাকাছি একটি পানশালায় যায় ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস বিধায়করা। সেখানে তাঁরা বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান। এরপর সঞ্জয় স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে যায় লালবাজারের দিকে। কিছুক্ষণের মধ্যে একটি ব্যাগ হাতে ফিরেও আসে সে। আর এই ব্যাগ ঘিরেই তৈরি হচ্ছে রহস্য। সেই ব্যাগেই নগদ ৪৯ লক্ষ টাকা ছিল কি না তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা। তবে তদন্তকারীরা নিশ্চিত ওই টাকার হাত বদল হয়েছিল কলকাতাতেই। কুমার সঞ্জয়ই লালবাজারের কাছে গিয়ে কারও কাছ থেকে ওই টাকার ব্যাগ নিয়ে আসেন বলে ধারণা তদন্তকারীদের। ঝাড়খণ্ডের সরকার ভাঙার জন্যই টাকার লেনদেন হয় বলে অভিযোগ এক কংগ্রেস বিধায়কের।

বিধায়ক কেনাবেচা ও টাকা উদ্ধারের ঘটনায় ইতিমধ্যে ৩ বিধায়ক সহ মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। ঝাড়খন্ডের ওই কংগ্রেস বিধায়কের অভিযোগ সরকার ভাঙার জন্য চতুর্থ ওই ব্যক্তিকে ১০ কোটি টাকার টোপ দেওয়া হয়। আর তারই অগ্রিম হিসাবে কিছু টাকা দেওয়ার জন্য ঝাড়খন্ডের অভিযুক্ত ৩ কংগ্রেস বিধায়ক চতুর্থ ব্যক্তিকে কলকাতায় ডেকে আনেন। তবে পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে রাঁচির আরগোরা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার (Himant Biswa Sarma) সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল তাঁদের।

শনিবার হাওড়ার পাঁচলায় ঝাড়খণ্ডের ৩ কংগ্রেস বিধায়ক ইরফান আনসারি, রাজেশ কাছাপ ও বিক্সল কোঙ্গারিকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের কাছে মেলে নথিবিহীন প্রায় ৪৯ লক্ষ টাকা। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব।

আরও পড়ুন- পাখির চোখ ২০২৪: বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা অমিত শাহর

Previous articleপাখির চোখ ২০২৪: বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা অমিত শাহর
Next articleকমনওয়েলথ গেমসে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না ভারতের, এবার বিতর্ক টেবিল টেনিসে