শহরে বাইক-ট্যাক্সির দৌরাত্ম্য, নতুন আইনে নিয়ন্ত্রণের ভাবনা সরকারের

হলুদ ট্যাক্সির দেখানো পথেই এবার পা বাড়াচ্ছে বাইক ট্যাক্সি (Bike Taxi)। একদিকে যেমন উঠে আসছে কারণে অকারণে যাত্রী প্রত্যাখ্যান, পাশাপাশি উঠে আসছে বাড়তি ভাড়া চাওয়ার অভিযোগও। অ্যাপে বুকিংয়ের (App Booking) সময় যে ভাড়া দেখানো হচ্ছে, যাত্রীকে গাড়িতে তোলার সময় চাওয়া হচ্ছে ৫০ টাকারও বেশি ভাড়া। না হলে বাইকের চালকরা (Biker) যেতে অস্বীকার করছেন। এছাড়া অভিযোগ, যে লোকেশনে বাইককে আসতে বলা হচ্ছে সেখানে না এসে চালকের সুবিধামতো জায়গায় আসতে হচ্ছে যাত্রীদের। তারপর যাত্রীরা সেখানে পৌঁছলেই চাওয়া হচ্ছে বেশি ভাড়া। আর তা দিতে অস্বীকার করলেই রাইড ক্যান্সেল (Caancel Ride)। এর আগে শহরের বুকে এভাবেই একছত্র রাজত্ব করেছে হলুদ ট্যাক্সি। চালকের ইচ্ছে হলে তবেই মিলত যাত্রী সুরক্ষা। মিটারে নয় ট্যাক্সি চলতো ড্রাইভারের নির্ধারিত ভাড়ায়। তবে, রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টায় তা বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে। এখন সব ট্যাক্সির গায়েই লেখা “নো রিফিউজাল’ (No Refusal)। তবে এখনও সুযোগ বুঝে কোপ মারছেন কিছু অসাধু চালক, এমনই অভিযোগ যাত্রীদের।

তবে এবার বাইক ট্যাক্সি নিয়ন্ত্রণে নতুন আইন আনতে চলেছে রাজ্য সরকার। এবার থেকে ন্যূনতম ভাড়া নির্ধারণের পাশাপাশি কিলোমিটার পিছু ভাড়ার তালিকা করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি কোনও অছিলায় যাতে চালকরা ট্রিপ ক্যান্সেল করে যাত্রীদের সমস্যার মুখে ফেলতে না পারেন সেই বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। আর এই ভাড়া ও যাত্রী সুরক্ষার একাধিক বিষয় মাথায় রেখে তৈরি হয়েছে চার সদস্যের একটি কমিটি। রাজ্য পরিবহন দফতর সূত্রে খবর, শীঘ্রই এই বাইক ট্যাক্সি নিয়ন্ত্রণে আইন আনা হবে। সে সংক্রান্ত নতুন গাইডলাইনও বের করবে পরিবহণ দপ্তর। ইতিমধ্যেই বাইক ট্যাক্সি নামানোর জন্য সার্ভিস প্রোভাইডার বা এগ্রিগেটরদের আবেদন করতে বলা হয়েছে।

বর্তমানে অ্যাপ ক্যাব চালকদের প্রায় ৪০ হাজারের বেশি বাইক চলে। একটু বেশি আয়ের আশায় বর্তমানে অনেকেই পার্ট টাইম এই কাজ করেন। ব়্যাপিডো, ওলা, উবেরের মতো সার্ভিস প্রোভাইডার সংস্থার অ্যাপ ডাউনলোড করে নিজের গাড়ির নম্বর তাতে এন্ট্রি করিয়ে দিলেই সমস্যার সমাধান। সহজেই আসতে শুরু করে বুকিং। কিন্তু এই পুরো প্রক্রিয়াটাই বেআইনি কারণ এতে সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। নেই যাত্রী সুরক্ষাও। এই ধরনের বাইকের বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের কোনও রেজিস্ট্রেশন নেই। হলুদ নম্বর প্লেটের বদলে সাদা নম্বর প্লেটেই দেদারে চলছে গাড়ি। তেমনই বহু চালক আবার বেনামে অ্যাকাউন্ট খুলে অ্যাপ-নির্ভর এই বাইক-ট্যাক্সিগুলি চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ পুলিশের।

কোভিডের (Covid 19) বাড়বাড়ন্তের পরপরই বাস ট্রেন ছেড়ে অ্যাপ ক্যাবে যাতায়াত বেড়েছে সাধারণ মানুষের। ক্যাব বা হলুদ ট্যাক্সির খরচ আকাশছোঁয়া হলেও সেই তুলনায় পকেটের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাইক ট্যাক্সিকে বেছে নেয় শহর কলকাতার মানুষ। কিন্তু দিন যত গড়িয়েছে তাদেরও আসল চেহারা সামনে এসেছে। হলুদ ট্যাক্সির মতো বাইক ট্যাক্সিরও জুলুম দেখে ভিরমি খাওয়ার জোগাড়। অ্যাপে কম ভাড়া দেখালে একদিকে যেমন নিজেদের ইচ্ছেমতো রাইড ক্যান্সেল, অন্যদিকে প্রত্যেক রাইডে প্রায় ৪০-৫০ টাকা বেশি না পেলে গাড়ি যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন বাইক চালকরা।

Previous articleCorona Update: করোনা নিয়ে বড় স্বস্তি, সংক্রমণ নামল ১৩ হাজারের নিচে
Next articleUttar Pradesh: মহিলার সঙ্গে অশালীন আচরণ , যোগী রাজ্যে গ্রেফতার বিজেপি নেতা