Thursday, December 25, 2025

নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও বাণিজ্য: বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে হাসিনার ভারত সফর তাৎপর্যপূর্ণ

Date:

Share post:

শেখ হাসিনা(Sekh HAsina) সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ভারতকে(India) অনুরোধ করার কথা বলে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন বাংলাদেশের(Bangladesh) বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। আর সেই বিতর্কের মাঝেই ৫ সেপ্টেম্বর ৪ দিনের ভারত সফরে হাসিনা। জানা গিয়েছে, শেখ হাসিনার ভারত সফরের কর্মসূচি ও ব্যবস্থাপনা চূড়ান্ত করতে ইতিমধ্যেই ভারতে এসেছেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রক ও নিরাপত্তা আধিকারিকদের একটি দল। বাংলাদেশের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও বাণিজ্য এই সমস্ত বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সফর তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, “আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা আমাদের আদর্শ। তাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে যাবে এবং সত্যিকারের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক একটা দেশ হবে। শেখ হাসিনার সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি।” তাঁর এই বক্তব্যে সে দেশের রাজনৈতিক মহলে তুমুল ঝড় ওঠে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপির পক্ষ থেকে কটাক্ষ করে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকার টিকে থাকার জন্য বিদেশের দ্বারস্থ হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “যিনি যে কথা বলেছেন সেটি তার ব্যক্তিগত অভিমত হতে পারে। এটি আমাদের সরকারেরও বক্তব্য না, দলেরও বক্তব্য না। এই ধরনের বক্তব্যে লজ্জা পাবে খোদ ভারত। এই ধরনের অনুরোধ আওয়ামী লীগ করে না, করেনি। শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষ থেকেও কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।”

ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, শেখ হাসিনা ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর ভারতে থাকবেন। জয়পুর ও আজমির শরীফ যাওয়ার আগে তিনি ৫ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে পৌঁছাবেন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। ৮ সেপ্টেম্বর তিনি ঢাকায় ফিরবেন। এই সফরকালীন দুই দেশের মধ্যে আঞ্চলিক নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও যোগাযোগ সহ নানা বিষয়ে আলোচনা হবে। বিশেষ করে, শ্রীলঙ্কার কৌশলগত হাম্বানটোটা বন্দরে চিনা ‘গুপ্তচর’ জাহাজ ‘ইউয়ান ওয়াং৫’ অবস্থানের ফলে নয়াদিল্লি প্রতিবেশীদের সাথে আচরণ করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্ক হয়ে উঠেছে। ভারতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে বিবেচিত বাংলাদেশের সঙ্গে নয়াদিল্লি নিশ্চিত করতে চায় যে তারা বেজিংয়ের দিকে ঝুঁকবে না। রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুটি বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ঢাকা ও বেজিংয়ের মধ্যে সম্পর্ক আগামী মাসগুলিতে কিছুটা গতি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। হাসিনা সরকার চায় চিন মিয়ানমারকে শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে চাপ দিক।

পাশাপাশি, বাংলাদেশ যেহেতু সামরিকভাবে নিজেদের শক্তিশালী করার পরিকল্পনা করছে, ভারত সেই দেশের কাছে আরও বেশি সংখ্যক অস্ত্র ও সরঞ্জাম বিক্রি করতে চায়। সূত্র জানিয়েছে , ২০১৬ সালে বাংলাদেশ চিনের কাছ থেকে যেসব সাবমেরিন কিনেছিল সেগুলো কাজে লাগেনি। তাই তারা এখন ফ্রান্স এবং ভারতের মতো দেশ থেকে প্রতিরক্ষা সামগ্রীর জন্য আলাপ আলোচনা শুরু করতে আগ্রহী। ভারত সফরের সময়, হাসিনা ভারত-বাংলাদেশ সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ) – পণ্য ও পরিষেবার একটি বিস্তৃত বাণিজ্য চুক্তির জন্য ঊভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু করার জন্য চাপ দিতে পারেন। সূত্র জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং হাসিনা উভয়েই এই বছর সিইপিএ আলোচনা শুরু করার আনুষ্ঠানিক ইঙ্গিত দিতে পারেন। সূত্রের মতে, এই সফর সম্ভবত ২০২৩ সালে বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনার শেষ ভারত সফর।

spot_img

Related articles

বিশ্বকাপ জিতিয়েও খেলরত্নে ব্রাত্য হরমনপ্রীত-স্মৃতি, প্রশ্নের মুখে বিসিসিআইয়ের ভূমিকা

অর্জুনের মতোই খেলরত্নের (Khel Ratna Awarded ) তালিকায় নাম নেই কোনও ক্রিকেটারের। কিন্তু চলতি বছরেই ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট...

ইকো পার্ক থেকে চিড়িয়াখানা, বড়দিনে শহর জুড়ে বিনোদন পার্কে উপচে পড়া ভিড়

ক্রিসমাসের আনন্দে (Christmas Celebration) মেতে উঠেছে বাংলা। জেলা থেকে রাজ্য সর্বত্র একই ছবি। শীতকালীন উৎসবের মরশুমে কলকাতার বিনোদন...

কনিষ্ঠকন্যার পর আগুনে ঝলসে মৃত্যু বিএনপি নেতার জ্যেষ্ঠকন্যারও

দিন কয়েক আগে বাংলাদেশে (Bangladesh) উন্মত্ত জনতার রোষে আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয় বিএনপি নেতার সাত বছরের শিশুকন্যার। বুধবার...

পার্ক স্ট্রিটকে টক্কর দিঘার! বড়দিনে আলো আর লেজার শো-তে জমজমাট সৈকত শহর

বড়দিন মানেই আনন্দ। পার্ক স্ট্রিটের (Park Street) আলোকসজ্জা। পিকনিক। চিড়িয়াখানায় হুল্লোড়। তবে এবার তিলোত্তমাকে (Kolkata) রীতিমতো টক্কর দিচ্ছে...