একপলকেই ধূলোয় মিশল গগনচুম্বী অট্টালিকা

৯ সেকেণ্ডের কাউন্টডাউন শেষে তাসের ঘরের মত ভেঙে গেল টুইন টাওয়ার। রবিবার দুপুর ২. ৩০ টা নাগাদ ধূলোয় মিশে গেল কুতুব মিনারের থেকেও লম্বা নয়ডার বিখ্যাত সুপারটেক টুইন টাওয়ার। টুইন টাওয়ার এখন শুধুই ধ্বংসস্তূপ।জোড়া এই টাওয়ার ভাঙতে খরচ হয়েছে ২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫ কোটি টাকা দেবে নির্মাণকারী সংস্থা, বাকি ১৫ কোটি টাকা ধ্বংসাবশেষ বিক্রি করে তোলা হবে বলে জানা গিয়েছে। তিনমাস ধরে চলবে এই ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ। এর জন্য ১ হাজারেরও বেশি ট্রাক মোতায়েন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল টুইন টাওয়ার

জানেন কী কেন ভাঙা হল এই অট্টালিকা?

২০০৫ সালে নয়ডার সুপারটেক লিমিটেড এই টুইন টাওয়ার তৈরির কাজ শুরু করে। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয় এমেরাল্ড কোর্ট। নয়ডা ও গ্রেটার নয়ডার মাঝে এই টুইন টাওয়ারে ৩, ৪ ও ৫ বিএইচকে ফ্ল্যাট তৈরি করা হবে বলে জানানো হয়েছিল। এক একটি ফ্ল্যাটের দামই ১ থেকে ৩ কোটি টাকা ছিল। ২০০৫ সালে ১৪টি বিল্ডিং তৈরি করা হবে বলেছিল। প্রত্যেকটি বিল্ডিংয়ে ৯টি তল থাকত। কিন্তু ২০১২ সালে হঠাৎ সেই পরিকল্পনা বদলে ফেলা হয়। এমারেল্ড কোর্টে ১৫টি বিল্ডিং তৈরি করা হয়েছে। প্রত্যেকটি বিল্ডিংয়ে ১১টি তল ছিল। দুটি টাওয়ার ৪০ তল অবধি তৈরি করা হয়। নয়ডা কর্তৃপক্ষ নতুন পরিকল্পনাটিকে অনুমোদন দিয়েছিল।

কিন্তু, এরপরই বাড়ির ক্রেতারা এই দুই টাওয়ার তৈরির বিরোধিতা করেন। তাঁরা দাবি করেন, টাওয়ারগুলি নিয়ম ভেঙে একে অপরের গায়ে লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে। দুটি বহুতলের মধ্যে ন্যূনতম যে দূরত্ব রাখতে হয়, তা মানা হয়নি। ফ্ল্যাট মালিকদের অনুমতিও নেওয়া হয়নি টাওয়ারের উচ্চতা বাড়ানো ও অবস্থান বদল নিয়ে সম্মতিও নেওয়া হয়নি। এরপরই সিয়ান ও অ্যাপেক্স নামক এই টুইন টাওয়ারকে ভেঙে ফেলার দাবি জানানো হয়। নয়ডা কর্তৃপক্ষ বিল্ডিং ভেঙে ফেলতে রাজি না হওয়ায় প্রথমে এলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। ২০১৪ সালে হাইকোর্ট এই টাওয়ার ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে নির্মাণকারী সংস্থা সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানালেও ২০২১ সালে শীর্ষ আদালতের তরফেও এই টাওয়ারকে ভেঙে ফেলার কথা বলা হয়। সেই নির্দেশ মেনেই আজ টুইন টাওয়ার ভেঙে ফেলা হল।

Previous articleহুগলিতে গাড়ি পাইয়ে দেওয়ার প্রতারণায় যুক্ত একই পরিবারের ৩ জন!
Next articleদেনার দায়ে ‘ডুবতে’ বসেছে আদানি গোষ্ঠী