প্রকৃতিতে ভরপুর, সংস্কৃতিতে গানের সুর: ‘জঙ্গলমহল সুন্দরী‘ প্রকল্পের কথায় স্লোগান বাঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী

মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প ‘জঙ্গলমহল সুন্দরী’। এই জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার ২,২২৫ একর জমি নিয়েছে। বৃহস্পতিবার, পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর স্টেডিয়ামে টাটা মেটালিক্স সহ বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনে গিয়ে একথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বলেন, “এই প্রকল্পের জন্য ৭২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হচ্ছে। কয়েক লক্ষ ছেলেমেয়ে এখানে চাকরি পাবে।” ডানকুনি (Dankuni) থেকে পুরুলিয়ার (Purulia) রঘুনাথপুর পর্যন্ত এই শিল্পাঞ্চলের বিষয়ে রাজ্য সরকারের তৎপরতা এখন তুঙ্গে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন কেন্দ্রে রেলমন্ত্রী ছিলেন, তখন ডানকুনি থেকে অমৃতসর করিডর শিল্পক্ষেত্র তৈরির ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগী হয়েছিলেন। সেই বিষয়টি এদিন জঙ্গলমহলবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “এরপর ডানকুনি থেকে পানাগড়, পানাগড় থেকে বড়জোড়া, আবার বড়জোড়া থেকে একেবারে পুরুলিয়া বাঁকুড়া হয়ে রঘুনাথপুর পর্যন্ত এই শিল্পাঞ্চল বিস্তৃত হবে।”

বীরভূমের দেউচা পাঁচামি কয়লা খনি প্রকল্প ও কর্মসংস্থান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এটি ভারতের বৃহত্তম এবং পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা খনি। এখানকার প্রকল্পে এক লক্ষেরও বেশি চাকরি হবে। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প রূপায়ণের বাধা দিচ্ছে বিজেপি ও সিপিআইএম। মমতা বলেন, “বিজেপি ও সিপিএমের লোকেরা ওখানে এই প্রকল্প করা যাবে না, করা যাবে না, বলছেন কেন ? কারণ ওখানে এই প্রকল্প হলে এক লক্ষ ছেলে মেয়ের চাকরি হয়ে যাবে। তাহলে তখন সিপিএম ও বিজেপি ক্ষুদ্র পলিটিক্স করবে কীভাবে? আমি বলি – যার খেতে দেওয়ার ক্ষমতা নেই, তার পলিটিক্স করার দরকার নেই। ওখানে অনেক আদিবাসী ভাই-বোনেরা আছে। তাদের আমরা বাড়ি করে দিচ্ছি। জমির বিনিময়ে উপযুক্ত টাকা দিচ্ছি। স্পেশাল ক্যাটাগরিতে চাকরিও করে দিচ্ছি।এমনকি হাতির হানায় কারোর মৃত্যু হলে, তারও পরিবারের কাউকে ক্ষতিপূরণ ও চাকরি আমরা করে দিচ্ছি।”

পশ্চিম মেদিনীপুরের গনগনির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা মুখ্যমন্ত্রী শোনার পর এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছিলেন। ইতিমধ্যেই এখানে পর্যটকদের জন্য কটেজ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “জেলাশাসক কে বলেছি এখানে পর্যটকদের জন্য যাতে তাড়াতাড়ি কটেজগুলো পাওয়া যায় তা দেখার জন্য।”

এছাড়াও এদিন মুখ্যমন্ত্রী ফের তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত ‘দিঘা মেরিন ড্রাইভ’-এর কথা তুলে ধরেন। তিনি রাজ্যবাসীকে সমুদ্রের সৈকতের এই অপরূপ সৌন্দর্যমন্ডিত মেরিনড্রাইভ দেখতে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানান।

পশ্চিমবঙ্গের পাহাড় থেকে সমুদ্র, অরণ্য থেকে পর্যটন, শিল্প থেকে সংস্কৃতি সব বিষয়ে উন্নয়ন ও তার প্রচারের জন্য এদিন মুখ্যমন্ত্রী রীতিমত স্লোগানের বেঁধে দেন মমতা। বলেন, “প্রকৃতিতে ভরপুর, সংস্কৃতিতে গানের সুর”- এটাই বাংলার পর্যটন মানচিত্র।