বিচার প্রক্রিয়ার গতি বাড়াতে প্রধান বিচারপতির নয়া ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলল ডিভিশন বেঞ্চ

‘সুপ্রিম কোর্টে(Supreme Court) শুনানির জন্য মামলা তালিকাভুক্ত করার নতুন পদ্ধতি বিচারকদের জন্য পছন্দের নয়’। প্রধান বিচারপতি হওয়ার পর মামলা তালিকাভুক্তির নতুন পদ্ধতি চালু করেছেন ইউ ইউ ললিত(UU Lalit)। আর এই নয়া পদ্ধতির বিরুদ্ধে সরব হয়ে এমনটাই জানালেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কৌল এবং বিচারপতি অভয় ওকার বেঞ্চ। ডিভিশন বেঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, বিচারকরা মামলাগুলো পর্যবেক্ষণ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছেন না। এর জন্য শীর্ষ আদালতের নয়া ব্যবস্থাকেই দায়ী করেছেন তারা। প্রধান বিচারপতির নয়া ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চের এহেন বিদ্রোহ নিঃসন্দেহে সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে বিরল।

সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি, বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কৌল এবং বিচারপতি অভয় এস ওকা মঙ্গলবার ‘নাগেশ চৌধুরী বনাম উত্তরপ্রদেশ রাজ্য’ মামলার শুনানির পর এমন মন্তব্য করেছেন। এই মামলার শুনানি ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত মুলতবি রাখার আদেশ দেন দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি কৌলের লিখিত আদেশে বলা হয়েছে, “নতুন পদ্ধতি বর্তমান মামলার মতো শুনানির জন্য নির্ধারিত মামলা বিবেচনার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাচ্ছে না।” এর কারণ আদালতে ‘বিকেলের পর’ আসা মামলার সংখ্যা। বলার অপেক্ষা রাখে না ডিভিশন বেঞ্চের এই মন্তব্য প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিতকে রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলছে। এনভি রমন প্রধান বিচারপতি হিসেবে অবসর নেওয়ার পর তিনি দেশের ৪৯ তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন। বিচারপতি রমন অবসর নেওয়ার পরে বলেছিলেন যে আইনজীবীরা বারবার অভিযোগ করছেন নতুন পিটিশনগুলি সুপ্রিম কোর্টে শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হচ্ছে না। এবিষয়ে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন, তিনি তাঁর মেয়াদে এ বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারেননি। নতুন প্রধান বিচারপতি সম্ভবত তাঁর পূর্বসূরির ভাবনার সঙ্গে তাল মিলিয়ে, মামলা তালিকাভুক্তির নতুন প্রথা চালু করেছিলেন, তবে এটি অন্যান্য বিচাপতিদের কাছ থেকে প্রকাশ্য সমালোচনার মুখে পড়ল।

কী এই নয়া পদ্ধতি
প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিত কর্তৃক বাস্তবায়িত নতুন ব্যবস্থায়, সুপ্রিম কোর্টের ৩০ জন বিচারপতির জন্য দুটি শিফট তৈরি করা হয়েছে। এই নতুন ব্যবস্থার অধীনে, সোমবার থেকে শুক্রবার, নতুন মামলার শুনানির জন্য ১৫ টি ভিন্ন বেঞ্চে বসে প্রতিদিন ৬০ টি মামলার শুনানি করতে হবে। তিন বিচারপতির বেঞ্চের সব বিচারপতিই মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রথম শিফটে পুরনো মামলার শুনানি করবেন। সেই দিনে, বিকেলের দ্বিতীয় শিফটে, ৩০টি মামলা দুই বিচারপতির বেঞ্চে দেওয়া হয়, যা দুই ঘন্টার মধ্যে শুনানির কথা ছিল। অর্থাৎ গড়ে ৪ মিনিটে একটি মামলা নিষ্পত্তি করতে হতো। যদিও মঙ্গলবার থেকে মামলার সংখ্যা ৩০ থেকে কমিয়ে ২০ করেছেন প্রধান বিচারপতি।

Previous articleফের বাংলায় টাটার বিনিয়োগ, খড়গপুরে ‘টাটা মেটালিক্স’-এর সম্প্রসারিত ইউনিটের উদ্বোধন মুখ্যমন্ত্রীর
Next articleনিয়োগের দাবিতে বাম ছাত্র সংগঠনের পুরসভা অভিযান, ধর্মতলায় ধুন্ধুমার