ফের বঞ্চনা: অন্ডালকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করতে নারাজ কেন্দ্র, অর্থসাহায্য ‘না’

অন্ডালকে আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে কেন্দ্রের কাছে অর্থ সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে বাংলা বঞ্চনার নীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল। অন্ডাল বিমানবন্দরের জন্য কোনওরকম অর্থ সাহায্য দেবে না কেন্দ্র। যদিও রাজ্যের বাকি ৪ বিমানবন্দর ও কলকাতা থেকে সরাসরি লন্ডন বিমান পরিষেবা নিয়ে এদিন তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধি দলকে আশ্বস্ত করলেন অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধ্রিয়া।

মঙ্গলবার সকাল ১০ টা নাগাদ তৃণমূলের ৪ সদস্যের সংসদীয় প্রতিনিধি দল রাজ্যের দাবি দাওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধ্রিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এই দলে উপস্থিত ছিলেন, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, সাংসদ সৌগত রায় ও সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। রাজ্যের ৫ টি বিমান বন্দর চালু ও পরিকাঠামোগত উন্নতি নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন সাংসদরা। এখানে উল্লেখযোগ্য ভাবে উঠে আসে অন্ডাল বিমানবন্দরের কথা। আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর করার উদ্যোগ নিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, ওটা রাজ্য ও একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে পিপিই মডেলে চলেছে। অন্ডাল বিমানবন্দরের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও অর্থসাহায্য করবে না। অন্ডাল বিমানবন্দরের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য গত বছর ১৮ নভেম্বর ৩৭৫ কোটি টাকা চাওয়া হয় রাজ্যসরকারের তরফে। কেন্দ্রকে এই বিষয়ে চিঠি লেখেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। সে প্রসঙ্গে এদিন কেন্দ্রের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, এই বিমানবন্দরের উন্নতির জন্য কেন্দ্র কোনও অর্থ সাহায্য দেবে না কেন্দ্রীয় সরকার।

এর পাশাপাশি বাকি যে চারটি বিমান বন্দর নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে সংসদীয় প্রতিনিধি দলের কথা হয়, সেগুলি হল পুরুলিয়ার ছড়রা বিমানবন্দর, মালদা, কোচবিহার, বালুরঘাট বিমান বন্দর। এরমধ্যে ছড়রা বিমানবন্দর চালু করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর তরফে। প্রক্রিয়াগত বিষয়গুলি সম্পন্ন হলে এই বিমানবন্দর চালু হতে কোনও বাধা নেই। কোচবিহার বিমানবন্দরে আপাতত ১৯ সিটের বিমান চালানো যাবে বলে জানানো হয়েছে তবে APR 72 অর্থাৎ বড় বিমান চালানোর পরিকাঠামো এখানে এখন নেই বলে জানানো হয়েছে। এছাড়াও বলা হয়েছে, মালদা ও বালুরঘাট বিমানবন্দরের জন্য এখনও দরপত্র পাওয়া যায়নি। রাজ্যসরকার অনুমতি দিলে ছাড়পত্র দেওয়া হবে বলে জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। প্রসঙ্গত, কোচবিহার এবং মালদা বিমানবন্দর কেন্দ্রীয় সরকারের “উড়ান” প্রকল্পেরই অন্তর্ভুক্ত।

এছাড়াও আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন তৃণমূলের সাংসদীয় প্রতিনিধি দল। তা হল কলকাতা থেকে লন্ডন সরাসরি বিমান পরিষেবা। ২০১২ সাল পর্যন্ত এই পরিষেবা কলকাতা বিমান বন্দরে চালু থাকলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিনিধি দলকে আশ্বস্ত করে জানান, বিষয়টি তিনি দেখবেন। এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “বিমান পরিষেবার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার যে তৎপরতা নিয়েছে, তা আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সামনে দৃঢ় ভাবে উপস্থাপন করা গেছে। অন্ডাল বিমানবন্দরে নিয়ে ও আমাদের আরও প্ল্যান রয়েছে।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “ছড়রা বিমান বন্দর চালুর বিষয় নিয়ে প্রস্তাব পাঠাতে বলেছে কেন্দ্রীয় সরকার।”

Previous articleশৌচাগারে রাখা ভাত, তরকারি, পরিবেশন করা হচ্ছে কবাডি খেলোয়াড়দের, উত্তরপ্রদেশের এই ঘটনা ঘিরে বিতর্ক
Next articleতিন দশক পর কাশ্মীরে খুলল মাল্টিপ্লেক্স, প্রথম ছবি ‘লাল সিং চাড্ডা’